সাবেক ছাত্রনেতা ফরিদউজ্জামান খানের টাইম লাইন থেকে প্রাপ্ত
২০০৪ সাল তখন আমি মাধ্যমিকের ছাত্র সেদিন ছিল ২১শে আগষ্ট আনুমানিক বিকেল সাড়ে পাঁচ টার দিকে আমরা কয়েক জন বন্ধু মিলে বাজারে যাচ্ছিলাম পাশের চায়ের দোকান থেকে কে জানি বলে উঠলো শেখ হাসিনাকে গ্রেনেড মেরে উড়িয়ে দিয়েছে।
তখন আমি নীরব হয়ে গেলাম কাঁদিতে যেয়ে কাঁদিতে পারলাম না বন্ধুদেরকে কিছু না বলে ছুটে চলে গেলাম পল্লি ফোনের দোকানে, তখন আমার সেলফোন ছিলোনা। আমার এলাকার এক বড়ো ভাই ঢাকায় সে সমাবেশে গিয়েছিল আমি ফোন দিয় তাঁকে কিনতু সে রিসিভ করেনি অনেক বার ফোন দেওয়ার পরেও ফোন ধরেনি পরে মনের কষ্টে বাড়ি ফিরি কিন্তু মনকে সান্তনা দিতে পারছিলামনা।
শেখ হাসিনাকে ওরা মেরে ফেললো আমার মা আমাকে বললো কি হইছে তোর একা একা কার সাথে কথা বলিস মায়ের কথা শুনে আমি আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলাম না,বললাম মা ওরা শেখ হাসিনাকে মেরে ফেলেছে!
মা শুনে গম্ভীর হয়ে গেলো আমাকে সান্তনা দেওয়ার চেষ্টা করলো তখন আমি ছটফট করছিলাম। তখন আনুমানিক সাড়ে ছয়টা বাজে সে সময়ে আমার বাইক ছিলোনা। বাই সাইকেল নিয়ে বাহির হলাম মা বলে এখন তুই কোথায় যাবি আমি বললাম জানিনা মা।
তাই বলে বাড়ি থেকে বাহির হলাম, আমার গ্রাম শাকদাহ থেকে উপজেলা কলারোয়া ৮ কিলোমিটার দূরে। আমি কলারোয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হলাম।
তত্কালীন কলারোয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের অভিভাবক মোসলেম উদ্দিন কমান্ডার, প্রায় ২০ মিনিট পর আমি তার বাসভবনে পৌছালাম সেখানে গিয়ে দেখি অনেক মানুষ, আমি বাহিরের জানালার কাছে দাড়ালাম দেখি সবার চোখে জল।
কমান্ডার কাকু বলছেন তোরা কাঁদিসনা "খুকী বেঁচে আছে" তখন আমি কেঁদে উঠে বললাম আমার নেত্রী কেমন আছে তখন কমান্ডার আমাকে ডেকে জড়িয়ে ধরে বললো বাবা কাঁদিস না শেখ হাসিনার কিছু হইনি কিন্তু তাকে যারা বাঁচিয়েছে তারা বাজবে কিনা জানিনা।
কথা শুনে মনকে কিছুটা শান্তনা দিলাম সে দিন আই ভি রহমান, মেয়র হানিফ সহ অনেকেই জীবন বাজি রেখে নেত্রীকে বাঁচিয়ে ছিলেন।
২০০৪ সালের ২১শে আগস্ট সময় বিকাল পাঁচটা ২২ মিনিট জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু বক্তৃতা শেষ করে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা তার হাতে একটি কাগজ নিয়ে এগোতে থাকলেন ট্রাকের সিঁড়ির দিকে মুহূর্তের মধ্যে শুরু হলো নারকীয় গ্রেনেড হামলা আর জীবন্ত বঙ্গবন্ধু এভিনিউ মুহূর্তেই পরিণত হলো মৃত্যু পুরীতে। শেখ হাসিনাকে টার্গেট করে পটকা ফোটানোর মতোই একের পর এক গ্রেনেড বিস্ফোরণ ঘটায় ঘাতকরা।
কিছু বুজে উঠার আগেই মুহূর্তের মধ্যে রক্ত মাংসে পরিণত হয় সমাবেশ স্থল রক্ত গঙ্গা বয়ে যায় এলাকা জুড়ে নিস্তব্দ হয়ে যায় সমগ্র বাংলাদেশ!!
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]