মণিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জের মশ্বিমনগর ইউনিয়নে পৃথক ঘটনায় দুই গৃহবধুর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
জানাগেছে- সোমবার (২৬ এপ্রিল) রাত সাড়ে আটটার দিকে স্বামী সন্তান নিয়ে বাবার বাড়ি বেড়াতে এসে লতা খাতুন (২৭) নামে এক গৃহবধূ বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন। খুলনায় উন্নত চিকিৎসার জন্য নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। এর আগে সোমবার (২৬ এপ্রিল) সকালে গ্যাস ট্যাবলেট খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন লতা। টের পেয়ে স্বজনরা তাকে যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে সন্ধ্যায় তাকে খুলনায় রেফার করেন চিকিৎসক। তবে গৃহবধূর আত্মহত্যার কোন কারণ জানা যায়নি। লতা খাতুন রাজগঞ্জের মশ্বিমনগর ইউনিয়নের শমসেরবাগ গ্রামের মৃত আব্দুল কাদের জোয়ারদারের মেয়ে। নয় বছর আগে বগুড়া জেলার শাহাজাহানপুর উপজেলার নিশ্চিন্তপুরে আল মামুন নামে এক যুবকের সাথে বিয়ে হয় তার। ১৫ দিন আগে দুই ছেলে ও স্বামীকে নিয়ে তিনি শমসেরবাগে বাবার রাড়ি বেড়াতে আসেন।
অপর দিকে- মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজগঞ্জের মশ্বিমনগর কাঁঠালতলা দাসপাড়ার শ্বশুরবাড়ি থেকে ডলি দাস (৩৫) নামের দুই সন্তানের জননীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে রাজগঞ্জ তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ। ডলি দাস ওই পাড়ার অশোক দাসের স্ত্রী। ডলির বাবার নাম পূর্ণ দাস। তিনি কেশবপুর উপজেলার মজিদপুর গ্রামের বাসিন্দা।
ডলির স্বজনদের দাবি, নির্যাতনে হত্যার পর শ্বশুরবাড়ির লোকজন ডলি দাসের লাশ ঝুলিয়ে রেখেছে। এদিকে, ক্ষিপ্ত স্বজনরা অশোক দাসের বাড়ি ভাংচুর একইসাথে তারা অশোক দাস ও তার মা কবিতা দাসকে মারপিট করেছে বলেও অভিযোগ।
মাকে নিয়ে সকালে মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছেন অশোক দাস। তাদের অবস্থা স্বাভাবিক বলে জানিয়েছেন জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত ডা. দীবাকর কুমার। নিহত ডলি দাসের মা পারুল রানী বলেন, ৬-৭ বছর আগে মেয়েকে বিয়ে দিছি। বিয়ের পর থেকে শ্বশুর সুখদেব (অশোকের বাবা) ডলিকে কুপ্রস্তাব দিতো। মেয়ে রাজি না হওয়ায় ওরে নির্যাতন করতো। আমার মেয়ের গলায় আঘাতের চিহ্ন ও একচোখের কোণে রক্ত জমে আছে। ও আত্মহত্যা করিনি। ওরা নির্যাতন করে মেরে ফেলেছে। নিহতের ভাই শ্রীবাস বলেন, সোমবার সন্ধ্যার পরে ডলি মারা গেছে। কিন্তু ওর শ্বশুরবাড়ি থেকে আমাদের জানায়নি। অন্যলোকের মাধ্যমে খবর পেয়ে মঙ্গলবার ভোরে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। পরে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে অশোকরা লোকজন নিয়ে আমাদের মারপিট করে।
মশ্বিমনগর ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হোসেন বলেন, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য হওয়ায় সোমবার সন্ধ্যায় শাড়ি জড়িয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে ডলি দাস। খবর পেয়ে মেয়ে পক্ষের লোকজন এসে অশোকদের বাড়ি ভাঙচুর করে দুইজনকে মেরে হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
রাজগঞ্জ তদন্তকেন্দ্রের এসআই লিটন মিয়া বলেন, ধারণা করা হচ্ছে স্বামীর সাথে মনোমালিন্য হওয়ায় আত্মহত্যা করছেন লতা। কিন্তু স্বজনরা কোনকিছু স্বীকার করছেন না।
রাজগঞ্জ তদন্তকেন্দ্রের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর শাহজাহান আহমেদ বলেন, স্বজনরা বলছেন লতার মাথায় সমস্যা ছিল। এই কারণে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। কোন অভিযোগ না থাকায় স্বজনদের অনুরোধে মরদেহ দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আর ডলি দাসের গলায় আঘাতের চিহ্ন আছে। মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়ার জন্য লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]