রাজধানীর শাহজাহানপুরে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু ও কলেজছাত্রী সামিয়া আফরান প্রীতি হত্যায় নেতৃত্ব দেয়া অন্যতম মাস্টারমাইন্ড সুমন শিকদার মুসার ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
শুক্রবার (১০ জুন) তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে ১৫ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করে মামলার তদন্ত সংস্থা ডিবি পুলিশ। অন্যদিকে আসামিপক্ষ রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করে। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিট ম্যাজিস্ট্রেট ফারাহ দিবা ছন্দার আদালত তার ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৯ জুন) বিকেল ৪টায় মুসাকে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে নেয়া হয় বলে জানান ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের যুগ্ম পুলিশ কমিশনার মো. মাহবুব আলম। তিনি বলেন, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে মুসাকে বিকেল ৪টায় ডিবি কার্যালয়ে আনা হয়। তাকে টিপু হত্যার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
পুলিশ সদর দফতরের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরোর (এনসিবি) সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) মহিউল ইসলাম বলেন, ‘ওমান পুলিশ ও আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলকে বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ থেকে মুসা সম্পর্কে তথ্য দেয়া ছিল। প্রথমে ইন্টারপোল মুসাকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে।
পরে ওমান পুলিশের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ হয়। তাকে ফেরত আনতে আমরা সব প্রক্রিয়াও শেষ করি।’
মহিউল ইসলাম বলেন, গত রোববার বাংলাদেশ পুলিশের একটি দল তাকে ফিরিয়ে আনতে ওমানে গিয়েছিল। তারা মুসাকে নিয়ে সকাল ১০টা ৫০ মিনিটের দিকে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়।
মুসাকে আনতে ওমানে যান ডিবির মতিঝিল বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার শাহিদুর রহমান, অতিরিক্ত উপকমিশনার রফিকুল ইসলাম ও পুলিশ সদর দফতরের সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফয়েজ উদ্দীন।
গত ২৪ মার্চ রাত ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু মাইক্রোবাসে করে শাহজাহানপুর আমতলা হয়ে বাসায় ফিরছিলেন। শাহজাহানপুর ইসলামী ব্যাংকের সামনে পৌঁছলে হেলমেট পরা দুর্বৃত্তরা তাকে লক্ষ্য করে গুলি করে। এতে জাহিদুল ও তার গাড়িচালক মুন্না গুলিবিদ্ধ হন।
এ সময় জাহিদুলের গাড়ির পাশে রিকশায় থাকা বদরুন্নেসা কলেজের ছাত্রী প্রীতিও গুলিবিদ্ধ হন। তাদের রক্তাক্ত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে দায়িত্বরত চিকিৎসক জাহিদুল ও প্রীতিকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনার পরদিন ২৫ মার্চ দুপুরে নিহত জাহিদুল ইসলাম টিপুর স্ত্রী ফারজানা ইসলাম ডলি বাদী হয়ে শাহজাহানপুর থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন।
পরে ২৬ মার্চ রাতে বগুড়া থেকে মাসুম মোহাম্মদ ওরফে আকাশ নামে একজনকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, এই ব্যক্তিই টিপুকে গুলি করেছিলেন। পরে আরফান উল্লাহ দামাল নামে আরও একজনকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করা হয় কমলাপুর থেকে।
এরপর ২ এপ্রিল মুসার ভাই সালেহ শিকদার ওরফে শুটার সালেহ, মতিঝিল থানার ১০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুকসহ চারজনকে গ্রেফতার করার কথা জানায় র্যাব।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]