রাজধানীর দনিয়া থেকে শনির আখড়া হাটে গরু কিনতে এসেছেন হানিফ মিয়া। বাজারে এসে দেখেন গরুর সংকট। হাটে যে কটি গরু আছে, তার দামও চড়া। হানিফ মিয়ার মতো আরও অনেকেই শনির আখড়া গরুর হাটে এসেছেন। হানিফ মিয়া বলেন, ‘আমরা কল্পনাও করিনি গরুর এমন সংকট হবে। গরুর সংকট থাকায় যে কটি গরু বাজারে আছে, তার দাম অনেক বেশি।’
৩১জুলাই শুক্রবার সরেজমিনে শনির আখড়া গরুর হাটে দেখা গেল গরুর সংকটের এ চিত্র। গরুর হাটের সামনের চায়ের দোকানদার মনসুর মিয়া বলেন, ‘গরুর কাস্টমারের সংখ্যা ছিল অনেক বেশি। রাতেই অধিকাংশ গরু বিক্রি হয়ে যায়। আমরাও ভাবিনি এমনটি হবে।’
শনির আখড়ার গরুর হাটের ইজারাদারদের একজন জাফর হোসেন বলেন, ‘গত কয়েক বছরের মধ্যে এমন গরুর সংকট কখনোই দেখা যায়নি। গতকাল রাত ১০টার পর থেকে হাটে ক্রেতার সংখ্যা অনেক বেড়ে যায়। রাত তিনটা নাগাদ হাটের অধিকাংশ গরু বিক্রি হয়ে যায়। গরুর সংকট থাকায় দাম কিছুটা বেড়ে গেছে। সকাল থেকেই হাটে গরু না থাকায় আমরা আশপাশের যাঁরা গরুর ব্যাপারী আছেন, তাঁদের এই বিষয় জানাই। এরপর থেকেই কিছু কিছু গরু আবার হাটে আসা শুরু হয়েছে। যে পরিমাণ ক্রেতা হাটে আছে, সেই তুলনায় গরুর সংখ্যা একেবারেই কম।’
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শনির আখড়া গরুর হাট থেকে একটি মাঝারি সাইজের গরু কিনে বাড়ি ফিরছিলেন হাফিজ উদ্দিন। তিনি বলেন, এই ছোট সাইজের গরুটির দাম নিয়েছে ৮০ হাজার টাকা। অথচ এই গরুর সর্বোচ্চ দাম হবে ৫০ হাজার টাকা। বাজারে গরু না থাকায় গরুর দাম অনেক চড়া। বেশি দাম দিয়ে গরু কিনতে হচ্ছে।
ফরিদপুর থেকে ২০টি গরু নিয়ে শনির আখড়া হাটে এসেছিলেন তাবারক হোসেন। ১৬টি গরু বিক্রি হয়ে গেছে। তবারক হোসেন বলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম করোনার কারণে এবার হয়তো গরু ক্রেতার সংখ্যা কম হবে। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। গতকাল রাতেই শনির আখড়ার গরুর হাটের অধিকাংশ গরু বিক্রি হয়ে গেছে। এ কারণে এখন হাটে গরুর সংখ্যা একেবারেই কম। আমরাও বুঝতে পারেনি এমনটি হবে। যদি বুঝতে পারতাম এমন গরুর সংকট হবে, তাহলে আরও বেশি গরু শনির আখড়ার হাটে তুলতাম। চাহিদা বেশি থাকায় গরুর দাম ভালো পাওয়া যাচ্ছে।’
শনির আখড়ার দনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সামনে দেখা গেল, গুটিকয়েক গরু সেখানে বাঁধা আছে। অথচ ক্রেতার সংখ্যা অনেক বেশি। দনিয়া এলাকার জাফর হোসেন বলেন, যে পরিমাণ ক্রেতা বাজারে আছে, সেই তুলনায় গরু বাজারে নেই। হয়তো অনেকেই এবার কোরবানি দিতে পারবেন না।
শনির আখড়া গরুর হাটের মতো পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ধূপখোলা গরুর হাটেও গরু নেই। ধূপখোলা গরুর হাটের ইজারাদারের একজন মো. ফারুক হোসেন বলেন, গতকাল রাত ১০টার পরে প্রচুর ক্রেতা হাটে আসেন। রাত তিনটার মধ্যেই সব গরু বিক্রি হয়ে যায়। টাঙ্গাইলের গরুর ব্যাপারী মিনহাজ বলেন, ‘আমরা ভাবিনি ঈদের আগের দিন সব গরুর হাট থেকে বিক্রি হয়ে যাবে। কিন্তু এবার সেটি হয়েছে। মাঠে একটি গরুও নেই।’
সুত্র প্রথম আলো
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]