চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনের অংশ হিসেবে আজ বুধবার ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা। কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, আদালত ও রাজপথে বিক্ষোভ করছেন তারা।
‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি পালনের লক্ষ্যে হাইকোর্টের মাজার গেটের সামনের রাস্তায় বিক্ষোভ করছেন অংশগ্রহণকারীরা। এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দোয়েল চত্বরে অবস্থান নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, দোয়েল চত্বর ও মাজার গেটের সামনে কয়েকশ বিক্ষোভকারী জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করছেন। বিপরতীতে হাইকোর্টের মাজার গেট এলাকায় বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্যের উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে।
আজ বুধবার বেলা ১২টা থেকে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা হাইকোর্টের মাজার গেট এলাকায় জড়ো হওয়ার চেষ্টা করেন। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে সেখান থেকে কয়েক জনকে আটক করতে দেখা যায়।
হাইকোর্টের ভেতরে আইনজীবীদের একটি দলও মিছিল করেছেন। দোয়েল চত্বর এলাকায় অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিতে দেখা যায় অংশগ্রহণকারীদের।
কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একটি অংশ সাদা দলের আহ্বায়ক লুৎফর রহমানসহ কয়েক জন শিক্ষক।
হাইকোর্টের মাজার গেটের সামনের রাস্তায় বিক্ষোভ করছিলেন শিক্ষার্থী ও অন্যান্যরা।
হত্যা, গণগ্রেফতার, হামলা, মামলা ও গুমের প্রতিবাদে আজ সারা দেশে ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
হাইকোর্টে যেতে পুলিশি বাধা, দোয়েল চত্বরে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অবস্থান
ছাত্র-জনতার ওপর গণহত্যা, গণগ্রেফতার, হামলা, মামলা, গুম ও খুনের প্রতিবাদে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি চলছে সারা দেশে। বুধবার দুপুর সোয়া ১টার দিকে ঢাবিসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে হাইকোর্টের দিকে মিছিল নিয়ে যাত্রা শুরু করেন।
শিশু একাডেমির সামনে গেলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন বিক্ষোভকারীরা। পুলিশের বাধার পর মিছিল নিয়ে দোয়েল চত্বরে অবস্থান নিয়েছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ (ঢাবি) বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পরে তাদের সঙ্গে এসে যোগ দেন ঢাবির সাদা দলের শিক্ষকরা।
দুপুর আড়াইটায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তারা সেখানে দোয়েল চত্বরে অবস্থান করছেন।
প্রসঙ্গত আজকের কর্মসূচির বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ গতকাল রাতে জানান, বুধবার দুপুর ১২টায় দেশের সব আদালত চত্বর, ক্যাম্পাসে ও রাজপথে এ পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করা হবে।
‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচিতে বুয়েট শিক্ষার্থীরা
সারাদেশে ছাত্র-জনতার ওপর গণহত্যা, গণগ্রেফতার, হামলা, মামলা, গুম ও খুনের প্রতিবাদে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
বুধবার দুপুর ১টার দিকে বুয়েট শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের প্রধান ফটক থেকে মিছিল নিয়ে বের হন।
বুয়েট শিক্ষার্থীদের মিছিলটি কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার, দোয়েল চত্বর হয়ে হাইকোর্ট এলাকায় অবস্থানরত অন্যান্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে জড়ো হন। এ মিছিলে বুয়েটের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছেন।
এদিকে ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচিতে যোগ দেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সাধারণ শিক্ষকরা। বুধবার দুপুর ১২টায় বুয়েটের ক্যাফেটেরিয়া থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে জাতীয় শহিদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় শিক্ষকদের মাথায় লাল কাপড় বাঁধা ছিল।
উল্লেখ, সারাদেশে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও হত্যার প্রতিবাদে ৯ দফা দাবি আদায়ে আন্দোলনকারীদের পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসাবে ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়।
কর্মসূচির ঘোষণায় বলা হয়েছে, সারা দেশে ছাত্র-জনতার ওপর গণহত্যা, গণগ্রেফতার, হামলা, মামলা, গুম-খুনের প্রতিবাদে এবং জাতিসংঘ কর্তৃক তদন্তপূর্বক বিচারের দাবিতে, ছাত্রসমাজের ৯ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে দেশের সব আদালত, ক্যাম্পাস ও রাজপথে বুধবার ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি পালন করা হবে।
এর আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন মঙ্গলবার মুখে ও চোখে লাল কাপড় বেঁধে ছবি তুলে তা অনলাইনে প্রচারের কর্মসূচি পালন করে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মাহিন সরকার এই কর্মসূচির ডাক দিয়েছিলেন।
বরিশালে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ, সাংবাদিকসহ আহত ১৫
বরিশালে কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ ও ধাওয়া পালটা ধাওয়ায় ঘটনা ঘটেছে। এতে সংবাদকর্মীসহ আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন।
বুধবার বেলা ১১টা থেকে নগরীর বেশ কয়েকটি পয়েন্টে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশ বেপরোয়া লাঠিচার্জ করে আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা ১১টার দিকে শিক্ষার্থীরা নগরীর সদর রোডে মিছিল বের করার চেষ্টা করলে বাধা দেয় পুলিশ। এ সময় কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে লাঠিচার্জ করে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করেন তারা। পালটা হিসেবে শিক্ষার্থীরা ইটপাটকেল ছুড়লে শুরু হয় সংঘর্ষ। ২৫-৩০ মিনিট ধরে দুপক্ষের মধ্যে ধাওয়া পালটা ধাওয়া চলে।
এ সময় কর্তব্যরত সাংবাদিক শামিম আহম্মেদ এবং তুহিনকে বেধড়ক পেটায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা। এক পর্যায়ে সংঘর্ষ সদর রোড ফকির বাড়ি রোডসহ পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশি ধাওয়া এবং বেপরোয়া লাঠিচার্জের মুখে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন অলিগলিতে আশ্রয় নিলে পরিস্থিতি খানিকটা শান্ত হয়।
এদিকে, শিক্ষার্থীদের আরেকটি অংশ পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী ফজলুল হক এভিনিউতে থাকা বরিশালের আদালত চত্বরের দিকে অগ্রসর হওয়ার সময় বাধা দেয় পুলিশ। ছাত্র-ছাত্রীরা এসময় ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ স্লোগান দেন।
আন্দোলনকারীরা আদালত চত্বরে ঢুকতে গেলে বাধা দেয় পুলিশ। এখানেও পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বেশ কয়েক দফা ধাওয়া পালটা ধাওয়া সংঘর্ষ হয়। এছাড়া নগরের কাকলীর মোড়, বটতলা এবং পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এলাকাতেও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
বরিশালের পুলিশ কমিশনার জেহাদুল ইসলাম বলেন, আমরা ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করছি। পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে এবং নগরীর শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার চেষ্টা করছি।
পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে চট্টগ্রাম আদালত চত্বরে বিক্ষোভকারীরা
সারাদেশে ছাত্র-জনতার ওপর গণহত্যা, গণগ্রেফতার, হামলা, মামলা, গুম ও খুনের প্রতিবাদে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি ঘিরে চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে বিপুল পরিমাণ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
তবে পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে আদালত চত্বরে অবস্থান নিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় অন্তত ২০০ বিক্ষোভকারী সেখানে অবস্থান নেন।
জানা গেছে, আদালত প্রাঙ্গণে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। সকাল থেকেই এই এলাকা দিয়ে যারাই যাচ্ছেন, তাদের তল্লাশি করা হচ্ছে। অনেকের মোবাইল ফোনও চেক করেছে পুলিশ।
বেলা ১১টা থেকেই বিক্ষোভকারীরা সেখানে জড়ো হতে শুরু করেন। তারা যাতে আদালত চত্বরে যেতে না পারেন, সেজন্য পুলিশ সেখানে ব্যারিকেড দিয়ে রাখে। এরপর তারা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে আদালত চত্বরে গিয়ে অবস্থান নেন। বর্তমানে অন্তত ২০০ জন সেখানে অবস্থান করছেন।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল ওয়ারীশ গণমাধ্যমকে বলেন, কারফিউ শিথিল হলেও সভা-সমাবেশ না করাসহ সাধারণ যে বিধি-নিষেধ, সেগুলো তো কার্যকর। তাই যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
আজকের কর্মসূচির বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ গতকাল রাতে জানান, বুধবার দুপুর ১২টায় দেশের সব আদালত চত্বর, ক্যাম্পাসে ও রাজপথে এ পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করা হবে।
সিলেটে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ, টিয়ারশেল-সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ
সারা দেশে ছাত্র-জনতার ওপর গণহত্যা, গণগ্রেফতার, হামলা, মামলা, গুম ও খুনের প্রতিবাদে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি চলছে। বুধবার দুপুর এ কর্মসূচি পালনের সময় সিলেটে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বিক্ষোভকারীরা পদযাত্রা নিয়ে নগরের সুবিদ বাজারের দিকে গেলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। বিক্ষোভকারীরা ব্যারিকেড ভেঙে সামনে এগোলে পুলিশ তাদের লক্ষ্য করে টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ শুরু করে।
পুলিশ টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে। এখন নগরের বিভিন্ন অলিগলিতে গিয়ে তারা জড়ো হওয়া বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিচ্ছেন।
এর আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী সকাল ১১টা থেকে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) প্রধান ফটকে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভকারী শুরু করেন।
পরে সেখানে আগে থেকেই অবস্থান নেওয়া পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এরপর আরও শিক্ষার্থী যোগ দিয়ে স্লোগান দিতে শুরু করেন। তখন পুলিশ ক্যাম্পাসের ভেতরে চলে যায়। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কয়েকশ শিক্ষার্থী পদযাত্রা নিয়ে সেখান থেকে শহরের কোর্ট পয়েন্টের দিকে যায়। সেখান থেকে পদযাত্রা নিয়ে তারা সুবিদ বাজারে গেলে এ সংঘর্ষ বাধে।
প্রসঙ্গত আজকের কর্মসূচির বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ গতকাল রাতে জানান, বুধবার দুপুর ১২টায় দেশের সব আদালত চত্বর, ক্যাম্পাসে ও রাজপথে এ পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করা হবে।
৯ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে এ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে দেশের সব আদালত, ক্যাম্পাস এবং রাজপথে।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ঘোষিত ৯ দফা হলো:
১। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ছাত্র-নাগরিক হত্যার দায় নিয়ে জাতির কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।
২। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও দলীয় ক্যাডার এবং সন্ত্রাসী কর্তৃক ছাত্র-নাগরিক হত্যার দায় নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে মন্ত্রিপরিষদ থেকে পদত্যাগ করতে হবে। ইন্টারনেট শাটডাউন করে দেশে ডিজিটাল ক্র্যাকডাউন করায় তথ্য প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলককে পদত্যাগ করতে হবে। আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় শহিদ শিক্ষার্থী এবং আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদেরকে ড্রাগ অ্যাডিক্ট বলে কুরুচিপূর্ণ ও মিথ্যা বক্তব্য দিয়ে এবং আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করায় তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাতকে পদত্যাগ করতে হবে।
৩। ঢাকাসহ যত জায়গায় ছাত্র-নাগরিক শহিদ হয়েছে সেখানকার ডিআইজি, পুলিশ কমিশনার ও পুলিশ সুপারদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করতে হবে।
৪। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশের প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে যেখানে ক্যাম্পাসে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হামলা হয়েছে, প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও প্রক্টরদের পদত্যাগ করতে হবে।
৫। যে পুলিশ-বিজিবি-র্যাব ও সেনা সদস্যরা শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি করেছে, ছাত্রলীগ-যুবলীগসহ যেসব সন্ত্রাসীরা শিক্ষার্থীদের ওপর নৃশংস হামলা চালিয়েছে এবং যেসব নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পুলিশ ও সেনা কর্মকর্তাদের নিরস্ত্র ছাত্র-নাগরিকদের ওপর গুলি করার নির্দেশ দিয়েছে তাদের আটক করে হত্যা মামলা দায়ের করতে হবে ও দ্রুততম সময়ের মধ্যে গ্রেফতার করতে হবে।
৬। দেশব্যাপী যেসব ছাত্র-নাগরিক শহিদ এবং আহত হয়েছে তাদের পরিবারকে অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
৭। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশের প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয় এবং সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগসহ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত দলীয় লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র সংগঠনের রাজনীতি নিষিদ্ধ করে দ্রুততম সময়ে নিয়মতান্ত্রিকভাবে ছাত্র সংসদ কার্যকর করতে হবে।
৮। অবিলম্বে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও হল খুলে দিতে হবে। কারফিউ তুলে নিয়ে সারাদেশের সমস্ত ক্যাম্পাসে মোতায়েন করা পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, সোয়াট এবং আর্মি তুলে নিতে হবে।
৯। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত শিক্ষার্থীদের অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক কোনো ধরনের হয়রানি করা হবে না এই মর্মে অঙ্গীকার করতে হবে। ইতোমধ্যে গণগ্রেফতার ও পুলিশি হয়রানির শিকার সমন্বয়ক ও ছাত্র-নাগরিকদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে ও সব মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।
খুলনায় শিক্ষার্থী-পুলিশ সংঘর্ষ
৯ দফা দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি অনুযায়ী খুলনা মহানগরীর বিভিন্ন সড়ক অবরোধে গেলে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় সেখান থেকে পুলিশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করে বলে জানা যায়।
বুধবার (৩১ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে শিক্ষার্থীরা এ আন্দোলন শুরু করেন। তারা নগরীর শিববাড়ি, রয়্যাল মোড়, সাতরাস্তা মোড়, ময়লাপোতা মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেন।
অবরোধের শুরুতে নগরীর ময়লাপোতা মোহন এলাকায় পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়। এ সময় পুলিশ সেখান থেকে কয়েকজনকে গ্রেফতার করে বলে জানা যায়। পরে শিক্ষার্থীরা রয়্যাল মোড় এলাকায় এলে পুলিশ তাদের চারদিক থেকে ঘিরে রাখে।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে সাতরাস্তার মোড়ে থাকা পুলিশের দুটি গাড়ি পিছু হটলেও দুপুর সোয়া ২টার দিকে পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষ শুরুর পর পুলিশ কাঁদানেগ্যাস নিক্ষেপ করে ছাত্রদের ছাত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় পুলিশ নগরীর শান্তিধাম মোড়, রয়্যাল মোড়, সাতরাস্তা মোড়, ফুল মার্কেট এলাকা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয়।
খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন বলেন, গতকালই আমাদের ঘোষণা দেওয়া ছিল আর কোনো ছাত্রকে আন্দোলন করতে দেওয়া হবে না। তারা আইন নিজেদের হাতে নিয়েছে। আমাদের ওপর হামলা করেছে। পুলিশ বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে।
তথ্যসূত্র: যুগান্তর
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]