রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা। স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় রোববার (১১ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ শুরু করেন তারা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল ১০টার পর থেকে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে জড়ো হতে থাকেন। সাড়ে ১০টায় তারা তালা ঝুলিয়ে দেন। বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। বেলা পৌনে ১১টার পর শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন।
বিক্ষোভে অংশ নেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্স ও হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী আমানুল্লাহ খান জানান, স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নীরব ছিল। এ কারণে স্থানীয়রা এভাবে হামলা করেছে।
এ সময় বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা; দাবিগুলো হলো- শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারী স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ সদস্যদের বিচার, বিশ্ববিদ্যালয়ে বহিরাগতদের প্রবেশ বন্ধ ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত, ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন নীতি নির্ধারণে শিক্ষার্থী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা, বিশ্ববিদ্যালয়কে শতভাগ আবাসিক করা, আহত শিক্ষার্থীদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা।
এর আগে শনিবার সন্ধ্যায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনোদপুরে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় রাত ১১টার দিকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া ধূমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রা স্থগিত করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। পরে রাত ২টার দিকে ফের ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
উল্লেখ্য, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আলামিন আকাশ বগুড়া থেকে বাসে করে রাজশাহী আসছিলেন। এ সময় বাসে বসাকে কেন্দ্র করে চালকের সহকারীদের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়। পরে বাসটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনোদপুর ফটকে পৌঁছালে আবার বাগ্বিতণ্ডা হয়। এ সময় স্থানীয় এক দোকানদার এসে ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে তর্কে জড়ান। একপর্যায়ে উভয়ের মধ্যে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। এ সময় সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থলে জড়ো হয়ে ওই দোকানদারের ওপর চড়াও হন। পরে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা এক জোট হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালান। তখন শিক্ষার্থীরাও তাদের পাল্টা ধাওয়া করেন। এ ঘটনায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। ঘটনার পর বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার শনিবার (১১ মার্চ) রাতে সাংবাদিকদের বলেন, উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে রোববার (১২ মার্চ) ও সোমবারের (১৩ মার্চ) সব ধরনের পরীক্ষা ও ক্লাস স্থগিত করা হয়েছে।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]