ঘটনাটি যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার। সেখানে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারির এক সন্ধ্যায় বাড়িতে বসে মদ্যপান করেছিলেন প্রেমিক জর্জ টরেস জুনিয়র ও প্রেমিকা সারাহ বুন। তখনই দু’জনে মিলে লুকোচুরি খেলার সিদ্ধান্ত নেন। সারাহ ‘চোর’ সাজার পর জর্জ গিয়ে লুকিয়ে পড়েন একটি বড় স্যুটকেসের ভিতরে। সারা বুঝতে পারেন জর্জ কোথায় লুকিয়েছেন। কিন্তু তিনি তাকে ‘ধাপ্পা’ না দিয়ে বাইরে থেকে স্যুটকেসের চেন আটকে দেন। এতে দমবন্ধ হয়ে নির্মম মৃত্যু হয় জর্জের। খবর ডেইলি মেইলের।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই ঘটনার একটি ভিডিও সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে। ভিডিওটি সারাহ নিজেই করেছিলেন। ভিডিওতে শোনা গিয়েছে স্যুটকেসের ভিতর থেকে জর্জ চিৎকার করছেন, ‘আমি নিশ্বাস নিতে পারছি না।’ একই ভিডিওতে সারাহকে বলতে শোনা যায়, ‘তুমি আমার সঙ্গে যা কিছু করেছ তার জন্য এটাই তোমার প্রাপ্য। তুমি নির্বোধ।’ এরপর ফের জর্জের গলা শুনতে পাওয়া যায়। তিনি বলেন, ‘আমি সত্যিই নিঃশ্বাস নিতে পারছি না। আমার দমবন্ধ হয়ে আসছে।’ উত্তরে সারাহকে বলতে শোনা যায়, ‘তুমি নিশ্বাস নিতে না পারলে আমার কিছু করার নেই। তুমি যখন আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছিলে, তখন আমার এ রকমই মনে হয়েছিল। তখন তোমার এটা ভাবা উচিত ছিল।’
সারা মজা করলেও সেই মজা অচিরেই কান্নায় পরিণত হয়েছিল। মত্ত অবস্থায় প্রেমিককে স্যুটকেসবন্দি করেই ঘুমিয়ে পড়েছিলেন তিনি। পরের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে স্যুটকেসের চেন খুলে জর্জের দেহ উদ্ধার করেন সারাহ। সারা পুলিশকে জানিয়েছিল যে, লুকোচুরি খেলতে গিয়ে দুর্ঘটনাবশত মৃত্যু হয়েছে প্রেমিক জর্জের। কিন্তু সম্প্রতি সেই ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই সারাহর বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করেছে জর্জের পরিবার। সারাহ দাবি করেছিলেন, তিনি বুঝতে পারেননি যে জর্জ সকাল পর্যন্ত স্যুটকেস থেকে বেরোতে পারবে না। সকালে স্যুটকেসের ভিতরে জর্জের ফোন বাজার আওয়াজ পেয়ে তিনি পুরো বিষয়টি বুঝতে পারেন বলে দাবি করেন।
সারার দাবি ছিল, তিনি যখন স্যুটকেসটি খোলেন, তখন দেখেন যে জর্জ সংজ্ঞাহীন অবস্থায় কুঁকড়ে শুয়ে রয়েছেন। কয়েক মুহূর্ত পরে তিনি আবিষ্কার করেন যে, জর্জ আর বেঁচে নেই। এরপরই নাকি তিনি পুলিশকে ফোন করে পুরো বিষয়টি জানান। ভয় পেয়ে কিছু সত্য তিনি লুকিয়ে গিয়েছিলেন বলেও দাবি সারাহর। সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, পুলিশ কর্মকর্তারা সারাহর বাড়িতে গিয়ে নীল স্যুটকেসের মধ্যে থেকে জর্জের দেহ উদ্ধার করেন। ময়নাতদন্তে ধস্তাধস্তির চিহ্ন না খুঁজে পাওয়ায় ঘটনাটি সাময়িক ভাবে চাপা পড়ে যায়। সেই মামলাতেই সারাহকে ঘটনার প্রায় তিন বছর পর আদালতে ডাকা হয়েছে। আগামী ৩০ জানুয়ারি সেই মামলার শুনানি রয়েছে।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]