সোহেল পারভেজ, কেশবপুর প্রতিনিধি: যশোরের কেশবপুরে শহীদ ফ্লাইট লেঃ মাসুদ মেমোরিয়াল ডিগ্রী কলেজ এর অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) সাজ্জাত হোসেনকে পূণবহাল করা হয়েছে। গত শনিবার (২নবেম্বর) প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকবৃন্দ ও এলাকাবাসী অধ্যক্ষ জি এম সাজ্জাদ হোসেনকে মহামান্য আদালতের নির্দেশে বাড়ি থেকে ডেকে এনে স্বপদে পুনঃ বহাল করা হয়।
অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে, গত ইং-২৯/০৮/২৪ খ্রিঃ স্মারক নং-০৭ (১৫৩৭)/জাতীঃবি/কঃপঃ/২৬৪৬ মূলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভূক্ত বেসরকারি কলেজ/শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের বিদ্যমান গভর্নিং বডি/এডহক কমিটি বাতিলকরণ এবং এডহক কমিটি গঠনের প্রস্তাব প্রেরণ প্রসঙ্গে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রজ্ঞাপন জারি পূর্বক অত্র প্রতিষ্ঠানে একটি চিঠি প্রেরণ করেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিদের্শক্রমে প্রতিষ্ঠানে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালনকালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুসারে অনলাইনের মাধ্যমে সঠিক কমিটি সাবমিট করেন। কিন্তু মোঃ শরিফুল ইসলাম জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপরোক্ত বার্তা পাইয়া অধ্যক্ষের অবগত না করে তাহার ব্যক্তি স্বার্থে সিনিয়র প্রভাষক পদ গোপন করে অধ্যক্ষের ভূয়া সীল ও সহি/স্বাক্ষর জাল করে। অবৈধ ভাবে নিজে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পরিচয় দিয়ে একান্ত ও মনোনীত কতিপয় কিছু ব্যক্তিদের নামের তালিকা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে সাবমিট করে। যাহা সম্পূর্ণরূপে বে-আইনি ও অবৈধ।
গত ১ অক্টোবর ২০২৪ তারিখ অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করে প্রতিষ্ঠানের তালা ভেঙ্গে বিভিন্ন ধরনের মূল্যবান জিনিসপত্র ও আলমারী ভাঙচুর করে।
উপস্থিত এলাকাবাসী জানান,
শহীদ ফ্লাইট লেঃ মাসুদ মেমোরিয়াল ডিগ্রী কলেজ এর অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) পদে জি এম সাজ্জাত হোসেন গত ১২ আগস্ট ২০২৪ তারিখ যোগদান করেন। কিন্তু একটি মহল পেষী শক্তি ও রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে গত ১৮ আগস্ট ২০২৪ তারিখ জি এম সাজ্জাত হোসেন অধ্যক্ষ কে জোরপূর্বক বের করে দিয়ে প্রতিষ্ঠানের তালা ভেঙ্গে অবৈধভাবে ভিতরে প্রবেশ করে। প্রতিষ্ঠানের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক ৯ নং মোঃ শরিফুল ইসলামকে ওই পদে বসান। প্রতিষ্ঠানের ষড়যন্ত্রকারী প্রভাষক ২৮ নং রামমোহন রায় ও প্রভাষক ৩০ নং এম হাফিজুর রহমান। সেই থেকে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক বৃন্দ ও এলাকার জনগণ মেনে নিতে পারেননি প্রভাষক শরিফুল ইসলামকে। কলেজের শিক্ষক বিন্দু উপস্থিত থাকলেও শিক্ষার্থীদের উপস্থিত ছিল না বললেই চলে। শিক্ষার্থীদের দাবি অধ্যক্ষ জি এম সাজ্জাদ স্যারকে সপদের ফিরিয়ে দিতে হবে। শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী এবং অভিভাবকদের দাবীর প্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক মন্ডলী ও এলাকাবাসী সাবেক অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) জি এম সাজ্জাত হোসেন কে বাড়ি থেকে ডেকে এনে ওই চেয়ারে বসিয়েছেন।
দীর্ঘদিন পর শনিবার (২ নভেম্বর) ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকবৃন্দ ও এলাকাবাসী সাবেক অধ্যক্ষ জিএম সাজ্জাদ হোসেনকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন এবং ফুলে ফুলে শিক্ত করলেন। ওই চেয়ারে বসানোর পর অধ্যক্ষ সাজ্জাদ হোসেন বুকফাটা কান্না জড়িত কন্ঠে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও অভিভাবক দের জড়িয়ে ধরেন।
শহীদ ফ্লাইট লেঃ মাসুদ মেমোরিয়াল ডিগ্রী কলেজ এর অধ্যক্ষের যোগদান অনুষ্ঠানে নবগঠিত এ্যডহক কমিটির সভাপতি ৯০ যশোর-৬ কেশবপুর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মাওলানা সাখাওয়াত হোসেনের পুত্র ইঞ্জিনিয়ার সৈয়দ জাহিদ হোসেন এর আগমন উপলক্ষে এলাকাবাসী ও শিক্ষকমন্ডলী, অভিভাবক বৃন্দ যশোর বিমানবন্দর থেকে ফুলের শুভেচ্ছা জানিয়ে কলেজের উদ্দেশ্যে শত শত মোটরসাইকেল বহর নিয়ে কলেজে আসেন। কলেজের সামনে পৌঁছালে কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) জি এম সাজ্জাদ হোসেন সভাপতি কে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। তার পর সভাপতি তিনি তার পিতা মরহুম মাওলানা সাখাওয়াত হোসেনের কলেজ ক্যাম্পাস কবর জিয়ারত করেন।
অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) জি এম সাজ্জাত হোসেন বলেন, আমি সর্বপ্রথম মহান রাব্বুল আলামিনের উপর শুকরিয়া আদায় করছি। যিনি সঠিক বিচারের মাধ্যমে শিক্ষক মন্ডলী ও এলাকাবাসী এবং অভিভাবকদের সহযোগিতার মাধ্যমে আমাকে এই চেয়ারে বসালেন। আমি সকলের প্রতি ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমি গত ৩ অক্টোবর ২০২৪ আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে হাইকোর্টে রিট করি। আমার পক্ষে গত ২২অক্টোবর ২০২৪ এস্ট্রে অর্ডার হয়েছে। মহামান্য আদালত আমাকে কলেজে স্বপদে যোগদান করতে বলেন। তিনি আরও বলেন, প্রতিষ্ঠানে এমপিও ভূক্ত ৪১ জন এবং নন এমপিও ৪০ জন শিক্ষক ও কর্মচারী আছেন। বর্তমান কলেজটির মাঠ ও একাংশের ক্লাস রুম সম্প্রতি বন্যার পানিতে হাটুসমান বা তার বেশি তলিয়ে গেছে। ক্লাস করতে বিঘ্নিত হচ্ছে।
অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) জি এম সাজ্জাত হোসেন এর বক্তব্য সবকিছু ঠিক থাকলেও প্রতিষ্ঠানে এমপিও ভূক্ত ৪১ জন এবং নন এমপিও ৪০ জন শিক্ষক ও কর্মচারী আছেন কথাটি শুধুমাত্র কাগজে কলমে সীমাবদ্ধ। বাস্তবে কোন মিল নেই।
এ্যডহক কমিটির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার সৈয়দ জাহিদ হোসেন বলেন, এই কলেজের প্রতিষ্ঠাতা আমার বাবা হলেও কলেজটি তো এলাকাবাসী আপনাদের। তিনি পৃথিবীতে নাই বলেকি তার লালিত স্বপ্ন এই কলেজটি ধ্বংস হয়ে যাবে। আপনাদের প্রতিষ্ঠান আপনাদেরকেই রক্ষা করতে হবে। শত্রুরা যতই শক্তিশালী হোক না কেন এলাকাবাসী একতাবদ্ধ থাকলে রুখে দেওয়া সম্ভব। আর আমি তো আপনাদের সঙ্গে রয়েছি। আমাকে এই প্রতিষ্ঠানের সভাপতি করায় সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ ও এলাকাবাসীকে আমার পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাই।
ছবি- ইমেইলে
সোহেল পারভেজ জোয়াদ্দার
কেশবপুর প্রতিনিধি।
মোবাইল - ০১৭৫৭-৪৯৬৭৭৫
তারিখ-০৩/১১/২০২৪
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]