শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছে জাপানের সংগঠন নিহন হিদাঙ্কিও। হিবাকুশা নামে পরিচিত এই সংগঠনটি হিরোশিমা এবং নাগাসাকির পারমাণবিক বোমা হামলায় বেঁচে যাওয়াদের প্রতিনিধিত্বকারী একটি জাপানি সংস্থা।
শুক্রবার (১১ অক্টোবর) বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টায় শান্তিতে নোবেল বিজয়ী হিসেবে তার নাম ঘোষণা করে নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি। পরমাণবিক অস্ত্রবিরোধী বিশ্ব গড়ার প্রচেষ্টার স্বীকৃতি হিসেবে জাপানের সংগঠনটিকে এই পুরস্কার দেওয়া হলো।
নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটির প্রধান জর্জেন ওয়াটনে ফ্রাইডনেস বলেছেন, হিবাকুশা নামেও পরিচিত এই সংগঠনটি “পারমাণবিক অস্ত্র মুক্ত বিশ্ব অর্জনের প্রচেষ্টা এবং এই বিপর্যয়কে নিজের চোখে দেখে আসা প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান সবার সামনে তুলে ধরে পারমাণবিক অস্ত্র আর কখনও ব্যবহার করা উচিত নয়” এমন প্রচরণার জন্য এই পুরস্কার পেয়েছে।
মূলত নিহন হিদাঙ্কিও একটি পরমাণু অস্ত্র-বিরোধী সংগঠন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হিরোশিমা ও নাগাসাকির পারমাণবিক বোমা হামলায় যারা বেঁচে গিয়েছিলেন, তাদেরকে নিয়ে তৃণমূল পর্যায়ে পরমাণু-অস্ত্র বিরোধী প্রচারণা শুরু করে ১৯৫৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এই সংগঠনটি।
জর্জেন ওয়াটনে ফ্রাইডনেস বলছেন, “১৯৪৫ সালের আগস্টের পারমাণবিক বোমা হামলার প্রতিক্রিয়া হিসাবে বিশ্বব্যাপী একটি আন্দোলনের উদ্ভব হয়েছিল যার সদস্যরা পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের বিপর্যয়কর মানবিক পরিণতি সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন।”
এর আগে ২০২৩ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন ইরানের কারাবন্দি মানবাধিকারকর্মী নার্গিস মোহাম্মদী। অবশ্য এ বছর পুরস্কারটির জন্য আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে), জাতিসংঘের ত্রাণ কার্যক্রম সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) ও জাতিসংঘের প্রধান অ্যান্তোনিও গুতেরেসকে এগিয়ে রাখা হয়েছিল।
নরওয়েজিয়ান নোবেল ইনস্টিটিউট এই বছরের শান্তি পুরস্কারের জন্য মোট ২৮৬ জন প্রার্থীর নাম নিবন্ধন করেছিল, যার মধ্যে ১৯৭ জন ব্যক্তি ও সংস্থা ছিল ৮৯টি।
১৯০১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত মোট ১১৪ বার নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। ১১১ ব্যক্তি ও ৩০ সংস্থা মিলে পুরস্কার বিজয়ীর সংখ্যা ১৪১। ১৯১৭, ১৯৪৪ ১৯৬৩ সালে রেড ক্রসের আন্তর্জাতিক কমিটি তিনবার নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছে। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার দপ্তর ১৯৫৪ ও ১৯৮১ সালে দুইবার নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছে। এছাড়া নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হয়েছে ২৭ স্বতন্ত্র সংস্থা।
নোবেল পুরস্কারের জন্য প্রতি বছর ৩০০ জনের একটি তালিকা তৈরি করা হয়। এরপর যাচাই-বাছাই শেষে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে এক বা একাধিক ব্যক্তিকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়।
১৯০১ সাল থেকে প্রতি বছর এই পুরস্কার দিয়ে আসছে রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস। সুইডিশ বিজ্ঞানী ও ডায়নামাইট উদ্ভাবক আলফ্রেড নোবেলের মৃত্যুর ৫ বছর পর থেকে তার নামে ও রেখে যাওয়া অর্থে এই পুরস্কার দেওয়া হয়। পরে ১৯৬৯ সালে এতে অর্থনীতি যুক্ত হয়।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]