যশোরের শার্শা উপজেলার কায়বা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে ইউপি নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা দেখা দিয়েছে। নির্বাচনের ফলাফল ঘোষনার পর থেকে গেলো দু’দিন বিভিন্ন গ্রামের প্রতিপক্ষকে মারধর, লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মহড়া ইত্যাদি লেগেই আছে। এরই প্রেক্ষিতে যেকোন হিংসাত্মক অবস্থা এড়াতে ও নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা রুখতে সচেতনতামূলক মাইকিং করেছেন ওই ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন। তিনি অতিউৎসাহীদের নিবৃত ও শান্ত থাকার আহবান জানিয়েছেন।
জানা গেছে, ২৮ নভেম্বর (রবিবার) শেষ হয়েছে তৃতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। আর এই ধাপে যশোরের শার্শা উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের মধ্যে ১০টিতে ভোট গ্রহন হয়। ওইদিন রাতে ফলাফল ঘোষনা হওয়ার পর থেকেই বিজয়ী ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বর প্রার্থীদের কতিপয় সমর্থকরা প্রতিপক্ষদের বাড়িতে হামলা, বাড়িতে গিয়ে হুমকি-ধামকি, মারধোর, মহড়া দিতে দেখা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েন, গত ২৯ নভেম্বর সোমবার কায়বা ইউনিয়নের দাউদখালি গ্রামের আ.লীগ নেতা আব্দুল কাদেরকে কায়বা-ভবানীপুর সংলগ্ন কলারোয়া উপজেলার গয়ড়া বাজারে ব্যাপক মারধোর করে বিজয়ীপক্ষের কয়েকজন সমর্থক। এতে তার মাথা ফেঁটে যায়। রক্তাত্ম অবস্থায় তাকে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে ভর্তি করা হলে তার মাথায় ৬টি সেলাই দিয়েছেন চিকিৎসকরা। ওই ঘটনায় আরো এক ব্যক্তি আহত হন।
অনুরূপভাবে কায়বা ওয়ার্ডের একজন মেম্বর প্রার্থীর সমর্থকদের লাঠিসোটা নিয়ে মহড়া দিতে দেখা গেছে।
এর আগের রাতে ভবানীপুর গ্রামে কয়েকবার বিকট শব্দ শোনা যায়। ধারণা করা হয় সেগুলো বোমার বিষ্ফোরণ। এমনকি সেখান থেকে কয়েকটি বোমাও উদ্ধার করা হয় বলে স্থানীয়রা জানান।
অনুরূপভাবে কায়বা ইউনিয়নের কয়েকটি এলাকায় ভোটপরবর্তী সহিংসতার খবর পাওয়া গিয়েছে।
এমনই পরিস্থিতিতে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা এড়াতে কায়বা ইউনিয়নের নেতাকর্মীদের সচেতনতা ও সর্তকীকরণ বার্তা দিয়ে মাইকিং করেছেন নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন।
সোমবার (৩০ নভেম্বর) থেকে ওই ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডে এ সর্তক বার্তার মাইকিং করতে দেখা গেছে।
নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন জানান, ‘ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভোটগ্রহণের কয়েকদিন আগে সহিংসতা করে আমার প্রতিপক্ষ আমার অনেক নেতাকর্মীকে আহত করে হাসপাতালে পাঠিয়েছিলো। তাদের মধ্যে একজনের মৃত্যুও হয়। আমি কখনো মারামারি হানাহানি পছন্দ করি না। আমার প্রতিপক্ষ নির্বাচনের আগে থেকে আমার নেতাকর্মী ভোটারদের নানা ভাবে হয়রানি করেছে। তাতে আমি ভিতু হয়নি। আমি সবসময় জনগনের ভোটে বিশ্বাসী ছিলাম। সেই জনগণ আমাকে ভোট দিয়ে ব্যালোটের মাধ্যমে বিপুল ভোটে বিজয়ী করেছেন। আমি আমার ইউনিয়নের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞ। তাই আমি মারামারি হানাহানি করে প্রতিশোধ নিতে চাই না। দেশে আইন আছে, আদালত আছে। যে অন্যায় করবে আইন তাকে সাজা দিবে। তাই আমি আমার নেতাকর্মীদের অনুরোধ করবো তারা যেন কোন সহিংসতার পথে না যায়। তাই মাইকিং করে সকলকে নির্বাচন পরবর্তী কোনো মারামারি হানাহানিতে না যান সেজন্য সতর্ক করা হয়েছে। আমি এ ইউনিয়নের জনগণের শাসক নই, সেবক হয়ে মানুষের জন্য কাজ করতে চাই।’
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]