ইউনিয়ন পরিষদ থেকে শুরু করে জাতীয় সংসদে প্রতিনিধি নির্বাচনের জন্য একবারে ভোটগ্রহণের প্রস্তাব দিয়েছেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুর রউফ।
তিনি বলেছেন, বারবার ভোটগ্রহণ করে এত কাগজ নষ্ট, এত অর্থ ব্যয়ের দরকার নেই। আমি ছয়টা (সংসদ ও স্থানীয় সরকার) নির্বাচন করি। সংসদ নির্বাচনে যে সবচেয়ে বেশি ভোট পাবে, তার প্রতিনিধি ইউপিতে হবে। কাজেই এক নির্বাচনেই সব শেষ করা যায়। এতে কাগজ নষ্ট, ব্যয় কমে আসবে। সংসদে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব চালুর প্রস্তাব দেন তিনি।
বুধবার নির্বাচন ভবনে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এসব প্রস্তাব দেন। বৈঠকের পর তা সাংবাদিকদের জানান।
সাবেক এই সিইসি বলেন, সংসদীয় পদ্ধতি থাকবে। আমেরিকান দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সিস্টেম আনার দরকার নেই। নির্বাচনকে সরলীকরণ করতে হবে। মনোনয়ন বাণিজ্য যদি বন্ধ করা না যায় তাহলে সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব হবে না। কেননা, মনোনয়নপত্র বাণিজ্যটাই নির্বাচনটাকে ট্রেডিংয়ে এনেছে। ২০ কোটি টাকা দিয়ে কিনব, ১০ কোটি টাকা ছড়াব। পাঁচ বছর থাকলে দুইশ, আড়াইশ কোটি টাকা লাভ করব, সোজা হিসাব। এমপি চরিত্র নষ্ট হচ্ছে এইজন্য। কাজেই আনুপাতিক হারে নির্বাচন করেন।
তিনি বলেন, মানুষ ভোট দেবে দলকে। যখন দলকে দেবে, তখন পয়সা খরচের বিষয় থাকবে না। মনে করি ১২ কোটি ভোটার, নয় কোটি লোক ভোট দিল। ১৫টা দল আছে। ভোট যদি নয় কোটি হয়ে থাকে, ৩০০ আসন থাকলে ৩ লাখ ভোট হলে হয়। কাজেই কোনো দল তিন লাখ পেলে সংসদে একজন, ছয় লাখ হলে দুজন এভাবে আসন পাবে।
প্রার্থী বাছাই পদ্ধতি সম্পর্কে তিনি বলেন, ভোটের আগে তৃণমূলে নির্বাচনের মাধ্যমে প্রার্থী নির্বাচন করে দলগুলো ইসিকে তালিকা দেবে। ইসি লোকটা ভালো কি মন্দ সে বিষয়ে পাবলিক মতামত নেবে। অবজেকশন এলে তাকে বাদ দেওয়া হবে। ফুটবলের প্লেয়ার বদলের যেমন সুযোগ থাকে, তেমন করে বছরে পাঁচজন বদলের সুযোগ থাকবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরাও বলেন, সব দল চায় না? কটা দল আছে যে আইন অনুসরণ করে দল হয়েছে। যেই দেশের দলের মধ্যে গণতন্ত্র নেই, তারা কী করে গণতন্ত্র কায়েম করতে পারে।
পরে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, তার (আবদুর রউফ) অনেক অভিজ্ঞতা, অনেক প্রজ্ঞা। তিনি অনেক এক্সপেরিমেন্ট করেছেন। তিনি আমাদের উৎসাহিত করেছেন। আমরা সবার মতামত নিচ্ছি। আমরা আরেকজন সিইসির মতামত নিয়েছি। তিনি আবার বলেছেন আনুপাতিক নির্বাচনের দরকার নেই।
সরকারের কাছে সুপারিশ কী হবে-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা এখনো বলতে পারছি না। এখনো আমরা শুনছি। অনেক রকম গুরুত্বপূর্ণ, অভিনব, সৃজনশীল প্রস্তাব রয়েছে। সব পর্যালোচনা করে আমরা সুপারিশ করব। আমরা আমাদের সুপারিশ দেব। কিছু সুপারিশ নতুন কমিশন বাস্তবায়ন করবে। আর কিছু সুপারিশ রাজনৈতিক দলগুলো বাস্তবায়ন করবে।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]