সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় অনুষ্ঠান শ্রীশ্রী জগন্নাথদেবের রথযাত্রা উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সনাতনী রীতি অনুযায়ী, প্রতি বছর চন্দ্র আষাঢ়ের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে শুরু হয় জগন্নাথদেবের রথযাত্রা। আট দিনের এই আনন্দ আয়োজন নানা অনুষ্ঠিকতার মধ্য দিয়ে শেষ হবে উল্টোরথের মধ্য দিয়ে।
কথিত আছে, এই তিথিতে জগন্নাথ ভাই বলরাম ও বোন সুভদ্রার সঙ্গে মাসির বাড়ি যান। সেখান থেকে আবার সাতদিন পর মন্দিরে ফিরে আসেন। এটাকেই জগন্নাথ দেবের মাসির বাড়ি যাওয়া বলে। এই যাওয়াকে সোজা রথ, আর ফিরে আসাকে উল্টো রথ বলে।
এদিকে সারাদেশে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রাসহ নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আনন্দমুখর পরিবেশে রথযাত্রার আয়োজন করা হয়েছে।
এই রথযাত্রা ভারতের ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড, পশ্চিমবঙ্গ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়াসসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আন্দোৎসবের মধ্যে দিয়ে উযাপিত হবে। ভারতের সর্বাধিক প্রসিদ্ধ রথযাত্রা ওড়িশার পুরী শহরের জগন্নাথ মন্দিরের রথযাত্রা। আর বাংলাদেশের ধামরাইয়ের রথযাত্রা বিশ্বের দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ।
সনাতন ধর্মের মানুষদের বিশ্বাস, জগন্নাথদেব হলেন জগতের নাথ বা অধীশ্বর। জগৎ হচ্ছে বিশ্ব আর নাথ হচ্ছেন ঈশ্বর। তাই জগন্নাথ হচ্ছেন জগতের ঈশ্বর। তার অনুগ্রহ পেলে মানুষের মুক্তিলাভ হয়। জীবরূপে তাকে আর জন্ম নিতে হয় না। এ বিশ্বাস থেকেই রথের ওপর জগন্নাথদেবের প্রতিমূর্তি রেখে রথ নিয়ে যাত্রা করেন তারা।
ঢাকায় আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) আশ্রমে বিশ্বশান্তি ও মঙ্গল কামনায় অগ্নিহোত্র যজ্ঞের মধ্য দিয়ে রথযাত্রা উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। দুপুরে অনুষ্ঠিত হবে আলোচনা সভা। সভায় প্রধান অতিথি থাকবেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মা রথযাত্রার উদ্বোধন করবেন।
পরে সেখান থেকে বর্ণাঢ্য সাজে তিনটি বিশাল রথে জগন্নাথদেব, শুভদ্রা ও বলরামের প্রতিকৃতিসহ শোভাযাত্রা বের হবে। শোভাযাত্রা জয়কালি মন্দির, মতিঝিল শাপলা চত্বর, দৈনিক বাংলার মোড়, বায়তুল মুকাররম, পুরান পল্টন মোড়, জাতীয় প্রেসক্লাব, হাইকোর্ট মোড়, দোয়েল চত্বর, রমনা কালিমন্দির, টিএসসি, জগন্নাথ হল ও পলাশী হয়ে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে গিয়ে শেষ হবে।
আর ধামরাইয়ে বিকেল চারটায় রথযাত্রার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে কার্যক্রম শুরু হবে।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা বেনজীর আহমদ এমপি ও বাংলাদেশে ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মাসহ অন্য আমন্ত্রিত অতিথিরা।
২৭ জুন উল্টো রথযাত্রার মধ্য দিয়ে এই উৎসবে সমাপ্তি ঘটবে।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]