স্থল নিম্নচাপটি ইতোমধ্যে ভারতীয় ভূখণ্ডে সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। এর প্রভাবে ঝোড়ো হওয়া বয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় সমুদ্রবন্দরগুলোতে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত বহাল রেখেছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। একইসঙ্গে উপকূলীয় ১৫ জেলায় স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ২ থেকে ৪ ফুটের বেশি জলোচ্ছ্বাস হতে পারে বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি।
বুধবার (১০ আগস্ট) সকালে সর্বশেষ আবহাওয়া পরিস্থিতিতে এ তথ্য জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।
দেশের দক্ষিণাঞ্চলে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে বলেও জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।
আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক জানান, উড়িষ্যা উপকূল ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত স্থল নিম্নচাপটি পশ্চিম দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপ আকারে বর্তমানে ভারতের ছত্তিশগড় ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আরও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় বায়ুচাপের পার্থক্যের আধিক্য বিরাজ করছে। সমুদ্রবন্দরগুলো, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
সর্বশেষ আবহাওয়া পরিস্থিতিতে বলা হয়, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরসমূহকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
সুস্পষ্ট লঘুচাপ ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ২ থেকে ৪ ফুটের বেশি উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।
একইসঙ্গে উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
স্থল নিম্নচাপের প্রভাবে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে কিছুটা বৃষ্টি রয়েছে। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে দমকা বাতাস। তবে বৃষ্টির প্রবণতা উত্তরাঞ্চলে কম।
মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি ৫৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে কক্সবাজারের টেকনাফে। রংপুর, রাজশাহী ও সিলেট বিভাগ ছিলো প্রায় বৃষ্টিহীন।
মঙ্গলবারের মতো বুধবারও ঢাকায় দমকা বাতাস বইছে। সঙ্গে আকাশে রয়েছে মেঘের আনাগোনা।
দক্ষিণাঞ্চলে বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে
বুধবার সকাল ৯টা থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে তুলে ধরে আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বলেন, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে।
এ সময়ে তাপমাত্রা সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা কমতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, আগামী তিনদিন দেশের দক্ষিণাঞ্চলে বৃষ্টির প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে।
মঙ্গলবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল সৈয়দপুরে। বুধবার সকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিলো সীতাকুণ্ড ও হাতিয়ায়, এ দুটি স্থানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়।
৮ অঞ্চলের নদীবন্দরে ২ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত
বুধবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ফরিদপুর, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার অঞ্চলের ওপর দিয়ে দক্ষিণ বা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ অস্থায়ীভাবে বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নৌবন্দরগেুলোকে ২ নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
এছাড়া দেশের অন্যান্য অঞ্চলের ওপর দিয়ে দক্ষিণ বা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ অস্থায়ীভাবে বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নৌবন্দরগুলোকে এক নম্বর সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে পূর্বাভাসে।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]