শনিবার, নভেম্বর ২৩, ২০২৪

কলারোয়া নিউজ

প্রধান ম্যেনু

সাতক্ষীরা, দেশ ও বিশ্বের সকল সংবাদ, সবার আগে

সর্বনাশ ডেকে আনছে শিশুদের মোবাইল আসক্তি

১০ বছরের একটি শিশু ইউটিউবে বিভিন্ন ধরনের বিজ্ঞাপন দেখে জানতে পারে রাজধানীর একটি বিপণিবিতানে নিত্যনতুন মডেলের মোবাইল ফোন কিনতে পাওয়া যায়। ওই ভিডিও দেখে গত সোমবার ট্রাংকে রাখা বাবার জমানো ৫০ হাজার টাকা নিয়ে গোপনে সে শেরপুর থেকে ঢাকায় চলে আসে।

নানাজনের কাছে জিজ্ঞেস করে করে শিশুটি শেষ পর্যন্ত পৌঁছে যায় ওই বিপণিবিতানে। সেখানকার নিরাপত্তাকর্মীরা শিশুটিকে সন্দেহজনক ঘোরাফেরা করতে দেখে পুলিশের হেফাজতে দেন। পরে ঐ শিশুর চাচাকে থানায় ডেকে শিশুটিকে তার জিম্মায় দেয় পুলিশ।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শিশুটির মোবাইল ফোন আসক্তি এমন পর্যায়ে পৌঁছে যে কিভাবে সে ঢাকায় আসবে, কিভাবে বিপণিবিতানে যাবে, কিভাবে মোবাইল ফোন কিনে আবার বাড়ি ফিরে যাবে- এসবের তোয়াক্কাই করেনি। মাত্র ১০ বছরের একটি শিশু মোবাইল ফোন আসক্তির কারণে গোপনে এভাবে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে শেরপুর থেকে ঢাকায় চলে আসা নিয়ে নতুন করে ভাবার সময় হয়েছে। মোবাইল ফোনের এই আসক্তি রোধ করা না গেলে, তা একসময় শিশুদের বড় ধরনের সর্বনাশ ডেকে আনবে।

শিশুর মোবাইল ফোন আসক্তি কতটা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে, সাম্প্রতিক এক গবেষণায় তার চিত্র ফুটে উঠেছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মাদ নাজমুল হকের তত্ত্বাবধানে ওই গবেষণা প্রতিবেদন গত বছর এপ্রিলে আন্তর্জাতিক জার্নাল এলসভিয়ারের জার্নাল অব ইফেক্টিভ ডিস-অর্ডারে প্রকাশিত হয়। ওই গবেষণায় উঠে আসে, বাংলাদেশের প্রায় ৮৬ শতাংশ প্রি-স্কুল শিশু স্মার্টফোনে আসক্ত। এর মধ্যে ২৯ শতাংশ শিশুর মারাত্মক স্মার্টফোন আসক্তি রয়েছে।

গবেষণায় আরো দেখা যায়, ৯২ শতাংশ শিশু তাদের মা-বাবার স্মার্টফোন ব্যবহার করে আর ৮ শতাংশ শিশুর ব্যবহারের জন্য পৃথক স্মার্টফোন আছে। বাংলাদেশের শিশুরা প্রতিদিন গড়ে প্রায় তিন ঘণ্টা স্মার্টফোন ব্যবহার করে, যা ইউনিসেফ কর্তৃক সুপারিশ করা সর্বোচ্চ সময়ের প্রায় তিন গুণ বেশি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শিশু গড়ে প্রতিদিন পাঁচ ঘণ্টা পর্যন্ত স্মার্টফোন ব্যবহার করে।

শিশুর স্মার্টফোন আসক্তির কারণ হিসেবে বলা হয়, ৮৫ শতাংশ মা-বাবা তাদের সন্তানদের কম সময় দেন। ৫২ শতাংশ শিশু খেলার মাঠের অভাবে এবং ৪২ শতাংশ শিশু খেলার সঙ্গীর অভাবে স্মার্টফোনে আসক্ত হচ্ছে।

৭৯ শতাংশ প্রি-স্কুল শিশু স্মার্টফোন ব্যবহার করে কার্টুন বা কল্পকাহিনি দেখতে, ৪৯ শতাংশ গেম খেলতে আর ৪৫ শতাংশ ভিডিও দেখা বা গান শোনার জন্য। মাত্র ১৪ শতাংশ শিশু পড়ালেখার জন্য ব্যবহার করে স্মার্টফোন।

৭৩ শতাংশ মা বিনা বাধায় কাজ করতে, ৭০ শতাংশ মা তাদের শিশুরা স্মার্টফোন ব্যবহার করতে পছন্দ করে বলে, ৬৭ শতাংশ মা তাদের শিশুসন্তানকে খাওয়াতে এবং ৩১ শতাংশ মা শিশুকে ঘুম পাড়াতে স্মার্টফোন ব্যবহার করেন।

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ও বাংলাদেশ ইসিডি নেটওয়ার্কের চেয়ারপারসন ড. মনজুর আহমদ বলেন, শিশুদের মোবাইল ফোন আসক্তি বেড়েছে, এটা সত্য। বিশেষ করে মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত পরিবারে এই আসক্তি বেশি বেড়েছে। কারণ তাদের কাছে স্মার্টফোন সহজলভ্য। এসব পরিবারে দেখা যায়, মা-বাবা দুজনই চাকরি করেন। ফলে দুজনই ব্যস্ত। ক্ষতিটা অনুধাবন না করেই তারা শিশুদের হাতে মোবাইল ফোন ছেড়ে দিচ্ছেন। কিন্তু সমস্যাটা অনেক বড়। মোবাইল ফোন আসক্তি নিয়ন্ত্রণে মা-বাবাকেই প্রধান ভূমিকা পালন করতে হবে। শিশুদের মোবাইল ফোন ছাড়া অন্য খেলার ব্যবস্থা রাখতে হবে। তাদের সময় দিতে হবে। এছাড়া শিশুরা যাতে ইন্টারনেটের সব জায়গায় বিচরণ করতে না পারে সে ব্যাপারে ফোন কম্পানি, মোবাইল নেটওয়ার্ক কম্পানি এবং সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো উদ্যোগ নিতে পারে।

শেরপুরের ওই শিশুকে বিপণিবিতান থেকে নেয়া হয়েছিল রাজধানীর তেজগাঁও থানায়। ওসি মোহাম্মদ মহসীন জানান, শিশুটি ইউটিউবে দেখে, রাজধানীর ওই বিপণিবিতানে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নিত্যনতুন মোবাইল সেট পাওয়া যায়। তখন সে ওই বিপণিবিতান থেকে মোবাইল ফোন কেনার পরিকল্পনা করে। কাউকে না জানিয়ে সে তার বাসা থেকে বাবার জমানো ৫০ হাজার টাকা নিয়ে নেয়। পরে সে মানুষজনকে জিজ্ঞেস করে শেরপুর থেকে ঢাকার মহাখালী আসে। সেখান থেকে আবার মানুষজনকে জিজ্ঞেস করে করে ওই বিপণিবিতানে পৌঁছে যায়। সেখানে মোবাইল ফোনের দোকানের সামনে ঘোরাঘুরি করতে দেখে নিরাপত্তাকর্মীরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এ সময় শিশুটির কাছে অনেক টাকা দেখে নিরাপত্তাকর্মীরা হতবাক হয়ে পুলিশকে জানালে পুলিশ শিশুটিকে হেফাজতে নেয়।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) শিশু নিউরোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. গোপেন কুমার কুণ্ডু বলেন, যেকোনো ডিভাইস বড়দের ক্ষেত্রে যতটা না ক্ষতি করছে, শিশুদের তার চেয়ে বেশি করছে। একটা শিশুর প্রথম তিন বছরে খুবই র‌্যাপিড বিকাশ হয়। এই বিকাশটা নির্ভর করে নিউরনের বৃদ্ধির ওপর। কারণ প্রথম তিন বছরে শিশুর ৫০ শতাংশ এবং পাঁচ বছরে ৯৫ শতাংশ বিকাশ হয়। কিন্তু এ সময়ে যদি শিশুরা মোবাইল ফোন ধরে তাহলে তার যে বিকাশ হওয়ার কথা তা হয় না। তার আচরণেও সমস্যা তৈরি হয়। চোখের সমস্যা, মাথা ব্যথা, ঘাড়ের সমস্যা হয়। পড়ালেখায়ও মন বসে না।

অভিভাবকদের পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ৪৫ মিনিটের বেশি কেউ মোবাইল ফোন দেখলে আমরা বলি, লেজি আই বা ড্রাই আই রোগ হতে পারে। এজন্য মোবাইল ফোন দেখতে দিয়ে শিশুদের খাওয়ানো যাবে না। কান্না করলেই মোবাইল ফোন দেওয়া যাবে না। খেলনা দিতে হবে। শিশুসন্তানকে মা-বাবা উভয়ের সময় দিতে হবে। সুযোগ থাকলে বিকেলে খেলার জন্য মাঠে নিয়ে যেতে হবে। ইনডোর গেমসে বাচ্চাকে সময় দিতে হবে অভিভাবকদের।

একই রকম সংবাদ সমূহ

ভারতে বসে নানা সমস্যার সৃষ্টি করছেন শেখ হাসিনা

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, শেখ হাসিনা শুধু ভারতেবিস্তারিত পড়ুন

সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য যা করা দরকার করবো: সিইসি

নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন বলেছেন, অবাধ,বিস্তারিত পড়ুন

সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়া, ড. ইউনূস বললেন ‘আমরা আনন্দিত ও গর্বিত’

সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া যোগদানের সুযোগ পাওয়ায় আনন্দবিস্তারিত পড়ুন

  • খালেদা জিয়াকে ১২ বছর সেনাবাহিনী থেকে দূরে রাখা হয়েছে : মির্জা ফখরুল
  • সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়ার সঙ্গে আলাপচারিতায় ড. ইউনূস
  • সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়া, আসিফ মাহমুদের ফেসবুক পোস্ট
  • সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়া
  • নতুন সিইসি, কে এই নাসির উদ্দীন?
  • চাইলেই যাওয়া যাবে না সেন্টমার্টিন, লাগবে ট্রাভেল পাস
  • নতুন সিইসি নাসির উদ্দীন, ৪ কমিশনার নিয়োগ
  • আইজিপি হিসেবে দায়িত্ব নিলেন বাহারুল আলম
  • বিএনপি নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে ভুটানের রাষ্ট্রদূত
  • অভ্যুত্থানে আহত-শহীদদের তালিকা প্রকাশ ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে : সারজিস আলম
  • সাবেক এমপি শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
  • আগামী নির্বাচনের সময় জানালেন উপদেষ্টা সাখাওয়াত