মাদ্রাসা ছাত্রদের বলাৎকারের (ধর্ষণ) অভিযোগ উঠেছে ক্যাশিয়ারের বিরুদ্ধে। কোমলমতি ছাত্রদের নির্যাতনের মাধ্যমে বাধ্য করেন তার ইচ্ছা পূরণ করতে। ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর নিজেকে বাঁচাতে মাদ্রাসার মোহতামিমের যোগসাজসে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষকদের একের পর এক চাকরিচ্যুত করছেন প্রভাবশালী ওই ক্যাশিয়ার।
অভিযুক্ত আবুল এফতেখার সাতক্ষীরা শহরের ঐতিহ্যবাহী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের প্রতিষ্ঠান মাদরাসাতুস্ সুফ্ফাহ এর ক্যাশিয়ার। তিনি শহরের ঈমান গ্লাস স্টোরের স্বত্বাধিকারী ও সরকারি কলেজ মোড় এলাকার বাসিন্দা।
এদিকে, এসব ঘটনা যা জানি হলে বর্তমানে মাদ্রাসার এলাকা জুড়ে শুরু হয়েছে হৈ চৈ। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবি করেছেন ভুক্তভোগী ও চাকরিচ্যুত শিক্ষকরা।
মাদ্রাসা সূত্রে জানা যায়, সাতক্ষীরা শহরের ঐতিহ্যবাহী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ (পুরাতন মার্কাস) এর মাদরাসাতুস্ সুফ্ফাহ মাদ্রাসা। সাতক্ষীরা টিএনটি অফিস এলাকার মাদ্রাসাটিতে প্রায় ১শ’ শিক্ষার্থী আবাসিক ছাত্রাবাসে থেকে পড়ালেখা করতো, মাদ্রাসার ক্যাশিয়ার আবুল এফতেখার একাধিকবার জোরপূর্বক বলাৎকারের কারণে আতঙ্ক নিয়ে ছাত্ররা মাদ্রাসা ছাড়তে শুরু করেছে, বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থী নেমে এসেছে প্রায় ৬০ জনে।
মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুর রউফ (কাল্পনিক নাম) জানান, ঈদুল আযহার আগের মাসিক ছুটিতে আমরা দুইজন মাদ্রাসা পাহাড়ার দায়িত্বে ছিলাম, একদিন হটাৎ ফজরের নামাজের পরে বাহির থেকে নক করা হয়, আমরা সেলিম হুজুর ভেবে দরজা খুলে দিয়ে দেখি আবুল দাদু, আমরা রীতিমত আমরা আমাদের জায়গায় গিয়ে শুয়ে পড়ি, কিছুক্ষণ পরে দাদু আমাদের মাথার কাছে গিয়ে বসেন এবং আমাদের চুম্বন করার চেষ্টা করেন। আমরা সরে যাওয়ার চেষ্টা করলেও উনি জোর করে আমাদের সাথে খারাপ কাজ করতে থাকেন।
অন্য আরেক শিক্ষার্থী জানান, রমজান মাসের ফজরের নামাজের সময় সবার যখন ঝিমঝিম ভাব, তখন নামাজের রুকুতে গিয়ে আমার লজ্জা স্থানসহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে একাধিকবার হাত দিতে থাকেন। আমরা এতদিন ভয়ে কাওকে কিছু বলতে পারেনি।
তিনি আরও জানান, আমাদের এই বিষয়গুলো হুজুরদের মধ্যে জানাজানি হলে আবুল দাদু আর বড় হুজুর থেকে আমাদের অনেক হুজুরকে বের করে দিয়েছে, আমরা সবাই এখন ভীষণ ভয়ের মধ্যে আছি।
এছাড়াও মাদ্রাসার ভুক্তভুগি একাধিক শিক্ষার্থীদের এমন অভিযোগ রয়েছে অহরহ।
নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক মাদ্রাসা থেকে চাকরিচ্যুত এক শিক্ষক জানান, ক্যাশিয়ার আবুল ভাইয়ের এসব অপকর্ম আমি আমি যে নেতার প্রতিবাদ করলে হঠাৎ করেই আমাকে চাকরিচ্যুত করা হয়। ছাত্ররা ভয়ে এসব কথা বলতে পারে না। তবে অনেক ছাত্র সহ্য করতে না পেরে আমাকে বলেছিল। আমি প্রতিবাদ করাই আমারে পরিণতি হয়েছে।
অভিযুক্ত ক্যাশিয়ার আবুল এফতেখারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাচ্চারা অভিযোগ করতেই পারেন, তবে ঘটনা সত্য না, আমি সেখানে যাতায়ত করি।
মাদরাসাতুস্ সুফ্ফাহ এর মোহতামিম হাফেজ মাওলানা জহিরুল ইসলাম বলেন, আমি দুএকদিন আগে এবিষয়ে শুনে কমিটিকে জানিয়েছি, সভাপতি সাহেব আসলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
সাতক্ষীরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মহিদুল ইসলাম বলেন, মাদ্রাসা ছাত্রদের বলাৎকারের বিষয়ে এখনো কেউ কোন অভিযোগ করেননি, অভিযোগ পেলে আইন অনুযায়ী ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]