সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড শাখা-২ কর্তৃক নৌখালী নদীর উপর পানি নিষ্কাশনের নামে অপ্রয়োজনীয় স্লুইস গেট পুনঃনির্মাণ প্রকল্পের অনিয়ম দুর্নীতি তদন্তের জন্য জনস্বার্থে খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের হস্তক্ষেপ কামনা করে বুধবার (০৪ ডিসেম্বর) বিভিন্ন ডকুমেন্টসহ লিখিত আবেদন করেছেন আগরদাঁড়ী ইউনিয়নের বাঁশঘাটা গ্রামের অবসর প্রাপ্ত উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা কাজী এনামুল হক।
সম্প্রতি পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান বলেছেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্বাবধানে সারা দেশে যে সকল উন্নয়ন প্রকল্প চলমান রয়েছে, সেখানে কোন অনিয়ম, দুর্নীতি ও প্রকল্প বাস্তবায়নে কোন গাফিলতি এবং অপ্রয়োজনে অর্থ ব্যয় করলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন। ঠিক সেই মুহুর্তে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার অন্তর্গত ১০নং আগরদাঁড়ী ইউনিয়নে পানি নিষ্কাশনের নামে অপ্রয়োজনীয় রামনগর স্লুইস পুনঃনির্মাণ কাজে চলছে সরকারি অর্থ হরিলুট। যা এলাকার জনগণের কোন কাজে আসবেনা বরং অপ্রয়োজনীয় স্লুইচ পুনঃনির্মাণ হলে তা হবে জনগণের গলার কাটা।
আবেদনকারী ঐ দরখাস্তে আরো উল্লেখ করেছেন যে, সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড শাখা-২ কর্তৃক নৌখালী নদীর উপর পানি নিষ্কাশনের নামে অপ্রয়োজনীয় স্লুইচ পুনঃনির্মাণ প্রকল্প বন্ধ করা এবং প্রকল্পের অনিয়ম দুর্নীতি তদন্তের জন্য জনস্বার্থে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ করেছিলেন, কিন্তু তাতেও কোন কাজ হয়নি। ফলে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন শাখা-২, এবং কাজটিতে নিয়োজিত ঠিকাদার ও ঠিকাদারের লোকজন দিয়ে এলাকার অসহায় গরীব লোকদের সাথে ধোকাবাজী করে, ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক তাদের বাড়ীঘর ভাংচুর করে ভূক্তভোগি গরীব মানুষদের উপর তান্ডব চালিয়েছে। সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন শাখা-২ যে নির্যাতন করেছে তা কোন ভাবেই আইনানুগ নয় এবং এটা তাদের এখতিয়ার বহিরভূত কাজ।
জনস্বার্থে অবিলম্বে ঘটনাস্থল পরিদর্শণের জন্য বিভাগীয় কমিশনারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে এবং অবিলম্বে উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের ব্যবস্থা করার আহবান জানানো হয়েছে। তদন্ত কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে এবং জনস্বার্থে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত চলমান রামনগর স্লুইস পুনঃনির্মাণ কাজটি বন্ধ রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা এবং স্বচ্ছ তদন্তের স্বার্থে চলমান রামনগর স্লুইস কাজটি বন্ধ রাখা অপরিহার্য বলে আবেদনে উল্লেখ করেছেন। নৌখালী নদীর উপর পানি নিষ্কাশনের নামে যে স্লুইস গেট নির্মিত হয়েছিল বাস্তবে তা এখন জলাবদ্ধতার একমাত্র কারণ হয়ে দেখা দিয়েছে। রামনগর স্লুইস গেট নির্মিত হওয়ার ফলে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ স্লুইস গেটে বাধাগ্রস্থ হয়ে জলাবদ্ধতার কারন সৃষ্টি করছে। এটা অপসারন করে নিলেই এবং নদীটি পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনলেই নদীটিতে আগের মতো জোয়ার ভাটা বইবে আর কোন জলাবদ্ধতা এলাকাতে তৈরি হবে না। এই স্লুইস গেটটির ফলে প্রতিবছর বিস্তৃর্ন এলাকার জমির ফসল নষ্ট হচ্ছে- ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এলাকার কৃষকরাই। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখ্য রামেরডাঙ্গা, দীগিরগঙ্গা, রেউই, কাঁমারবায়শা, হন্নে গলচাতর, বোয়লে, লাঙ্গলঝরাসহ ও আরো অনেক অঞ্চল।
এ বিষয়ে জনস্বার্থে অভিযোগকারী কাজী এনামুল হক জানান, গণ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তারা সাধারণ মানুষের সাথে মিথ্যাচার, ধোকাবাজী করবেন, ভয়ভীতি দেখাবেন, বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দিয়ে হয়রানী ও ক্ষতিগ্রস্থ করবেন এটা কোন আইনে নেই। এটা দন্ডনীয় অপরাধ। আমি জনস্বার্থে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক মহোদয়কে বিষয়টি অবহিত করেছি। সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমি মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]