ফারুক রহমান, সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কুশখালী ইউনিয়নে ভবানীপুর ইউনাইটেড মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি কর্তৃক প্রধান শিক্ষকের অফিস কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
গত মঙ্গলবার (৫ মার্চ) বিদ্যালয়টির সভাপতি মোশাররফ হোসেন বহিরাগত লোকজন নিয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন।
ঘটনার পর থেকে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক-কমচারীসহ এলাকাজুড়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে। প্রধান শিক্ষকের কক্ষে এভাবে তালা দেওয়া যায় কিনা তা নিয়েও চলছে আলোচনা সমালোচনা।
এই ঘটনায ভুক্তভোগী প্রধান শিক্ষক বি এস এম আবজারুল হক, জেলা প্রশাসক, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার, জেলা শিক্ষা অফিসার, সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ৪ জানুয়ারি সন্ধ্যায় কতিপয় দূর্বৃত্তের দ্বারা ভুক্তভোগী শিক্ষক আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে ডান পা ভেঙে যায়। এসময় মাথায় কয়েকটি জখম নিয়ে মূমুর্ষ অবস্থায় আবজারুল হক সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে আটদিন চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেখান থেকে গত ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পায়ে ব্যন্ডেজ ও প্লাস্টার নিয়ে বাড়িতে চিকিৎসা গ্রহণ করেন এবং ৮ ফেব্রুয়ারি বিদ্যালয়ে যোগদান করে ১১ ফেব্রুয়ারি তিনি সভাপতির কাছে চিকিৎসার জন্য ছুটির আবেদন করেন ।
এদিকে, সভাপতি মোশাররফ হোসেন আবেদন গ্রহণ না করে তাকে পরে জানানো হবে বলে বিদায় করে দেন। এরপর থেকে প্রধান শিক্ষক যথানিয়মে বিদ্যালয়ের নিয়মিত দায়িত্ব পালন করছেন। গত মঙ্গলবার (৫ মার্চ) থেকে বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) পর্যন্ত সর্দি জ্বরের কারনে বিদ্যালয়ে যেতে পারেননি। গত রবিবার (১০ মার্চ) প্রধান বিদ্যালয়ে যেয়ে দেখেন তার অফিস কক্ষে নতুন তালা ঝুলছে ।
এ বিষয়ে তিনি অন্যান্য শিক্ষকদের নিকট জানতে পারেন বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিতার রুমে তালা দিয়েছেন এবং মৌখিক ভাবে হুমকি দিয়ে গেছেন প্রধান শিক্ষক স্কুলে আসলে তাকে লাঞ্কছিত রা হবে। যার একটি ভিডিও ফুটেজ সাংবাদিকদের হাতে এসেছে।
ভুক্তভোগী শিক্ষক, তার পরিবার, বিদ্যালয়ে কর্মরত অন্যান্য শিক্ষক-কর্মচারী, শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসী এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বলেন, বিদ্যালয়ে কোনো সমস্যা হলে সভাপতি কমিটির সকল সদস্যদের সাথে বসে সভায় আলোচনা করতে পারেন। কিন্তু তিনি নিজে প্রধান শিক্ষকের রুমে তালা মারতে পারেন না। উদ্ধতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জেলা শিক্ষা অফিসার সাহজাহান কবির এই বিষয়ে বলেন, তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটিকে সাত কর্ম দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পরে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীম ভূঁইয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এই ঘটনায় অভিযোগ পেয়েছি । অভিযুক্ত বিদ্যালয়ের সভাপতিকে বৃহস্পতিবার শুনানির জন্য আসতে বলা হয়েছে। তার বক্তব্য শুনে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]