গাজী হাবিব, সাতক্ষীরা: পূর্ব শত্রুতা জের ধরে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার শিয়ালডাঙ্গা গ্রামের একটি বসতবাড়িতে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
ঘটনাটি শনিবার (১০ মে) রাত তিনটার দিকে সদরের শিবপুর ইউনিয়নের শিয়ালডাঙ্গা গ্রামের (দক্ষিণপাড়া) আব্দুর সবুরের (৪২) বসত বাড়িতে ঘটে।
সরেজমিনে শনিবার (১০ মে) ভুক্তভোগীর সাথে কথা হলে তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমাদের গ্রামের আব্দুস সবুরের ছেলে শিমুল ও মোকসেদ আলীর ছেলে লাল্টু পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আমার বসতঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়। গতরাতে ওদের সাথে ঝগড়া হলে আমরা কেউ ওই বাড়িতে ছিলাম না। এই সুযোগে ওরা এসে আগুন দিয়েছে। আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায় ঘরে থাকা ২ টি খাট, শাড়ি কাপড়, শোকেজ, আলমারি আলনা, টিভি, গ্যাসের চুলা, প্রায় ২ হাজার গোবর নুড়ি যা ঘরের পাশেই ছিল। আগুনের লেলিহান শিখায় ঘরের চালে লাগানো টিনও পুড়ে যায়। ঘরের পাশে থাকা ফলজ বৃক্ষও পুড়ে যেতে দেখা গেছে।
বসত ঘরে আগুন দেওয়ার কারন হিসেবে তিনি বলেন, আমার ছেলে আরাফাত হোসেন (২১) এর সাথে তুচ্ছ ঝগড়ার জের ধরে গতকাল রাত এগারোটার দিকে শিমুল ও লাল্টু আমাকে বাড়ি থেকে টেনে হিঁচড়ে তুলে নিয়ে যায়। পথিমধ্যে স্থানীয় মহিলারা ও মেম্বার শফিকুল ইসলাম আমাকে ওদের হাত থেকে ছাড়িয়ে নেয়। কিন্তু রাত গভীর হলে ওরা আমার ওই বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়। মেম্বার শফিকুল ইসলাম না থাকলে হয়তো ওরা আমাকে মেরেই ফেলতো।
স্থানীয় গ্রামবাসী সাথে কথা বলে জানা যায়, শিমুল ও লাল্টুদের ভাগ্নির সাথে আরাফাতের প্রেমের সম্পর্ককে পুঁজি করে গত দুই মাস আগে আরাফাতকে ওরা বেদম মারপিট করে। এরই জের ধরে শুক্রবার বিকালে আরাফাত ওদের পিতাকে একা পেয়ে চড় থাপ্পড় মারে। এতে রাত এগারোটার দিকে শিমুল ও লাল্টু দলবদ্ধ এসে আরাফাতের পিতা আব্দুর সবুরকে ধরে মারপিট করতে করতে নিয়ে যেতে থাকে। একপর্যায়ে শফিকুল মেম্বার সে সময় মীমাংসা করে দেয়। কিন্তু রাত তিনটার দিকে কে বা কারা আব্দুর সবুরের বাড়িতে আগুন লাগিয়েছে। তবে ওই বাড়িতে কেউ না থাকার সুবাদে ঘরে থাকা আসবাবপত্র শাড়ি কাপড় সহ ঘর গৃহস্থালির অন্যান্য জিনিসপত্র পুড়ে গিয়ে ২ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়।
এ বিষয়ে শিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার শফিকুল ইসলাম বলেন, রাত এগারোটার দিকে সবুরের সাথে শিমুল ও লাল্টুর একটা ঝামেলা হয়েছিল। কিন্তু রাত সাড়ে তিনটার দিকে মোবাইলে জানতে পারি আব্দুর সবুরের বসতঘরে আগুন লেগেছে। স্থানীয়দের সহযোগিতায় সে আগুন নিভানো সম্ভব হলেও অনেক ক্ষতি হয়েছে। আমি ঘটনাস্থলে সকালে গিয়েছিলাম।
শিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বলেন, বসত ঘরে আগুন লাগার খবর শুনে আমি সকালে গিয়েছিলাম। ঘরে থাকা সবকিছু পুড়ে গেছে। তারা থানায় যেতে চেয়েছিল।
তবে এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিমুল ও লালটুর সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাদের মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। ভুক্তভোগী আব্দুস সবুর থানায় এখনো মামলা করা হয়নি জানিয়ে বলেন, এ বিষয়ে থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। আমি আমি সুষ্ঠু ও ন্যায় বিচার কামনা করছি।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]