সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার ৯নং আনুলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলমগীর আলম লিটন এর বিরুদ্ধে দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলার অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন মির্জাপুর গ্রামের মৃত সামছুর রহমান সানার ছেলে ওই ইউপি’র ৪নং ওয়ার্ডের সদস্য মোঃ সাহাবুদ্দিন সানা।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আশাশুনি উপজেলার বিছট গ্রামের রশিদুল আলমের ছেলে আলমগীর আলম লিটন ২০১১ ও ২০১৬ সালে ৯নং আনুলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন। অবৈধভাবে উপার্জিত টাকা দিয়ে সাতক্ষীরা শহরের সুলতানপুরে গড়ে তুলেছেন আলিশান চারতলা বাড়ি। পাশেই কিনেছেন আরো একটি প¬ট। অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ খরচ করে এলাকায় গড়ে তুলেছেন এক সন্ত্রাসী বাহিনী। ফলে তার এই দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। কেউ কিছু বললে তাকে মারপিট করার পাশাপাশি থানা পুলিশকে ম্যানেজ করে মিথ্যে মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়। সেকারনে তার ভয়ে এলাকার মানুষ সব সময় ভীতসন্ত্রস্ত থাকে।
শাহাবুদ্দীন সানা বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের অধীনে কর্মসৃজন কর্মসূচি প্রকল্প, কাবিটা, কাবিখা, এলজি,এসপি, এডিপিসহ বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে গ্রামীণ জনগোষ্টির আত্মসামাজিক উন্নয়নের লক্ষে বর্তমান সরকার কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ দিচ্ছেন। কিন্তু চেয়ারম্যান লিটন দায়িত্বপ্রাপ্ত অসাধু সরকারি কর্মচারীদের যোগসাজসে উল্লেখিত প্রকল্পের টাকা কোন কোন ক্ষেত্রে নামমাত্র আবার কখনো কাজ না করে সমুদয় অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। চেয়ারম্যানের এই অবৈধ কাজে সহযোগিতা করেছেন বিছট গ্রামের ইউপি সদস্য মোঃ জিয়ারুল ইসলাম, একই গ্রামের ভূয়া ইউপি সদস্য আলম হোসেন, সফিকুল ইসলাম মুকুল ও তার স্ত্রী ভূয়া ইউপি সদস্য নার্গিস সুলতানা এবং মধ্যম একসরা গ্রামের ইউপি সদস্য শওকত হোসেন। তার এই সহযোগিদের ব্যবহার করে তিনি সরকারি বরাদ্দের টাকা আত্মসাৎ করেছেন। আবার একই স্থানে ভিন্ন নামে একাধিকবার প্রকল্প দেখিয়ে, কখনো ভাল জায়গায় প্রকল্প দেখিয়ে বরাদ্দ নিয়ে সব টাকা তুলে নিয়েছেন। কর্মসৃজনের শ্রমিক দিয়ে মাটির কাজ করে একই স্থানে এলজিএসপির প্রকল্প দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এভাবে সরকারি বরাদ্দের টাকা আনুলিয়া ইউনয়নের গ্রামীণ জনগোষ্টির আত্মসামাজিক উন্নয়নে ব্যয় না করে নিজে আত্মসাৎ করে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন চেয়ারম্যান লিটন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমার ওয়ার্ডে আমার নামে প্রকল্প দেখিয়ে কাজ না করে টাকা তুলে নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন লিটন। এভাবে দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে আনুলিয়া ইউনিয়ন থেকে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার বিষয়টি জানার পর আমি নিজে বাদী হয়ে চেয়ারম্যান আলমগীর আলম লিটন ও তার উল্লেখিত সহযোগিদের নামে দুর্নীতি দমন আইনে সাতক্ষীরা সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে একটি মামলা দায়ের করি। বিচারক আমার নালিশী বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য চেয়ারম্যান দুর্নীতি দমন কমিশন ঢাকায় প্রেরণ করেছেন।
তিনি বলেন, দুর্নীতিবাজ আনুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর আলম লিটন ও তার সহযোগিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে দুর্নীতি দমন কমিশন, সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]