সাতক্ষীরায় প্রভাবশালী কর্তৃক একটি সংখ্যালঘু স¤প্রদায়ের পৈত্রিক সম্পত্তি জবর দখল করে বিতাড়িত করার চেষ্টাসহ মারপিট, খুন জখম ও জীবননাশের হুমকির অভিযোগ উঠেছে।
রবিবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন সদর উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের মৃত লক্ষ্মীকান্ত সরকারের ছেলে প্রসেনজিৎ সরকার।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, সদর উপজেলার গোবিন্দপুর মৌজায় সাবেক ১০২ ও এসএ ৭০ খতিয়ানে ২৩২ দাগে ৩.৮৪ একর জমি পৈত্রিক সূত্রে মালিক আমাদের পূর্বাধিকারী ভুবন সরকার সহ তিনভাই। ওয়ারেশ সূত্রে ওই সম্পত্তির আট আনা অংশ ১.৯৩ একর জমি প্রাপ্ত হয়ে আমরা ভোগ দখলে আছি। অমি শিশু থাকা অবস্থায় আমার বাবা’র অকাল মৃত্যু হয়। এসময় আমার ছোট কাকা নাবালক এবং অন্য দুই কাকা অন্যত্রে কাজ করতে থাকা অবস্থায় সেটেলমেন্ট জরিপ শুরু হয়। ওই সময় কিছু কুচক্রি মহল আমাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে বলেছিল জমি তোমাদের নামে রেকড হয়ে গেছে। কিন্তু সেটেলমেন্ট জরিপ শেষ হওয়ার পর জানতে পারলাম যে জমি আমাদের নামে রেকর্ড হয়নি। যা সিএস ও এসএ রেকর্ডের অপর আট আনা অংশের মালিক মথুর সরদারের ওয়ারেশদের নামে জরিপ রেকর্ড হয়েছে এবং মথুর সরদারের ওয়ারেশরা যাদের কাছে বিক্রি করেছে পরে তাদের নামে রেকর্ড হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, বিষয়টি জানার পর আমার সাতক্ষীরা সদর সহকারি জজ আদালতে দেং-৪৯/২০১৮ নং মামলা দায়ের করি যা বিচারধীন আছে। প্রসেনজিৎ সরকার আরো বলেন, সম্প্রতি ৭০ নং খতিয়ানের ২৩২ দাগে ০.৩০ একর জমি শরীকের আপোষমতে আমরা ভোগদখল করে আসছিলাম। উক্ত জমির ০.০৮ একর পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক অধিগ্রহণের পর বাকী ০.২২ একর জমিতে বর্তমানে আমরা ভোগদখলে আছি। দেওয়ানী মামলা দায়েরের পর গোবিন্দপুর গ্রামের হামিদ সরদারের ছেলে মোনায়েম সরদার জোরপূর্বক ঘর বাধতে গেলে বাধা প্রদান করায় আব্দুল হামিদ সরদার স্থানীয় ইউপি অফিসে অভিযোগ দেন। চেয়ারম্যানের মধ্যস্থতায় এক শালিশী বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় যে, দেওয়ানী মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কেউ ওই জমিতে কোন প্রকার ঘরবাড়ি তৈরী করতে পারবে না। তিনি অভিযোগ করে বলেন, আব্দুল হামিদ সরদার ও তার ছেলে মোনায়েম গত ২৯ নভেম্বর রবিবার সকাল ৯টার দিকে ওই জমিতে ঘর বাঁধতে আসলে বাধা দেয়ায় আমাকে বেদম মারপিট করে। এসময় আমাকে উদ্ধার করতে আমার বৃদ্ধ কাকা নিরাপদ সরকার এগিয়ে আসলে তাকে দড়ি দিয়ে বেধে রেখে তার ছেলে ইন্দ্রজিৎকে মারধর করে। এসময় তারা আমার কাকিমা ও বৃদ্ধা ঠাকুর মাকে মারপিট করে। তারা আমার ভ্রাতুষপুত্র মাতৃহীন আড়াই বছরের শিশু রূপমকে ধরে পাশের গর্তে ছুড়ে ফেলে দেয়। এঘটনায় আমরা সদর থানায় একটি অভিযোগ দাখিল করি। এঘটনার পর তারা আমাদেরকে হুমকি ধামকি অব্যহত রেখেছে।
তিনি বলেন, এরপরও আব্দুল হামিদ ও মোনায়েমরা সন্ত্রাসী কায়দার দলবদ্ধ হয়ে আমার বাড়ি সংলগ্ন ওই জমিতে একখানা ঘর বেঁধেছে। বিধায় সাতক্ষীরা অতিঃজেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি পিটি-৯৬৩/২০ নং মামলা দায়ের করি। মামলাটিতে আদালত সদর থানাকে আইন শৃঙ্খলা বিষয়ে এবং সহকারি কমিশনার (ভূমি) সাতক্ষীরা সদরকে তদন্ত প্রতিবেদনের ভার প্রদান করেছেন। এঘটনার পর সন্ত্রসাী মোনায়েম বাহিনী ও তার পিতা আব্দুল হামিদ সদার মামলা তুলে নেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করার পাশাপাশি আমাদেরকে নানা প্রকার ভয়ভীতি ও হুমকি ধামকি দিচ্ছে। মামলা তুলে না নিলে জীবনে মেরে ফেলবে। তারা আমার ও পরিবারের সদস্যদের মেরে ভারতে পাঠাবে বলে হুমকি দিচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা কেটে খওয়া দিনমজুর মানুষ। ওই টুকু জমিই আমাদের সম্বল। ওই জমি টুকু কেড়ে নিলে আমাদের আত্মহত্যা করা ছাড়া আর কোন পথ থাকবে না।
তিনি পৈত্রিক সম্পত্তি রক্ষা ও মোনায়েম বাহিনীর হাত থেকে নি®কৃতি পেতে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]