সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার রাজাপুর গ্রামের রাজাকারের সযযোগি সামছুর রহমান এখন ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা সেজে প্রভাব খাটিয়ে ছোট ভাইদের সম্পত্তি দখলের চেষ্টা, মারপিট ও মিথ্যে মামলায় হয়রানি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে ওই ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার ভাতা বন্ধ পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন ছোট ভাই রাজাপুর গ্রামের মৃত. জবেদ আলীর ছেলে শেখ সামিউল্লাহ ও শেখ আমির হামজা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে শেখ সামিউল্লাহ বলেন, আমাদের বড় ভাই সামছুর রহমান ১৯৭১ সালে শ্যামনগরের যোতিন্দ্রনগরে রাজাকারদের অন্যতম সহযোগি ছিলেন। যুদ্ধের পরে জীবন বাঁচাতে এলাকায় চলে আসে। কিন্তু গত কয়েক বছর আগে কৌশলে সে একটি সনদ ম্যানেজ করে মুক্তিযোদ্ধা সেজে বসেছেন। সে বর্তমানে ভাতাপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা। অথচ সে কখনোই মুক্তিযোদ্ধা করেনি। মুক্তিযোদ্ধাদের লাল বার্তা বা সবুজ বার্তায় তার নাম নেই। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধার ওই সনদের বুনিয়াদে সে অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে আমাদের দুই ভাইয়ের সম্পত্তি জালিয়াতির মাধ্যমে দখলের চেষ্টা করতে থাকে।
মুক্তিযোদ্ধার পরিচয় ব্যবহার করে প্রশাসনসহ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে আমাদের দুই ভাইয়ের (শেখ সামিউল্লাহ ও শেখ আমির হামজা) নামে একাধিক মিথ্যো মামলা দিয়ে হয়রানি করে যাচ্ছে।
শেখ সামিউল্লাহ আরো বলেন, এবিষয়ে চাম্পাফুল ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও এলাকাবাসী ২০১৪ সালে সমাজসেবা অফিসারের কাছে এবং ২০১৯ সালে কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে পৃথক অভিযোগ দায়ের করে। আমরাও বাধ্য হয়ে ভ‚য়া মুক্তিযোদ্ধা সামছুর রহমানের বিরুদ্ধে কালিগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করেছি। বিষয়টি জানতে পেরে সে আরো ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের খুন, জখমসহ বিভিন্নভাবে হয়রানির হুমকি দিচ্ছে। এছাড়া ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সামছুর রহমানের ভাতাসহ অন্যান্য সুবিধা বন্ধ এবং তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করি।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা সামছুর রহমান শুধু আমাদের ছোট দু’ভাইকে হয়রানি করছে না, খুলনা কৃষি কলেজে পড়াকালিন সময়ে আমার ছেলে সাইফুল ইসলামকেও কৌশলে রাষ্ট্রদ্রোহী মামলায় জড়িয়ে দেয়। তার অত্যাচারে আমরা আপন ভাইসহ এলাকার অসহায়, নিরীহ মানুষ অতিষ্ট হয়ে উঠেছি। এমনকি এলাকার অসহায় মানুষের সম্পত্তি অবৈধভাবে জবর দখলের পাশাপাশি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষকেও নির্যাতন করে দিশেহারা করে তুলেছে ওই ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযোদ্ধার নাম ভাঙ্গিয়ে সামছুর রহমান প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান হানি করে যাচ্ছে।
আমরা ভুক্তভোগী দুই ভাইসহ এলাকাবাসী ওই ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সামছুর রহমানের মুক্তিযোদ্ধা ভাতা বন্ধসহ অন্যান্য সুবিধা বন্ধ এবং তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটি সভাপতিসহ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]