“সঠিক খাদ্যাভ্যাসে সুস্থ থাকুন” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সাতক্ষীরায় স্বাস্থ্য সুরক্ষায় খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন ও পুষ্টি সচেতনতা বিষয়ক প্রেস কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার দুপুর সাড়ে ১২ টায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে উক্ত প্রেস কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়।
প্রেস কনফারেন্সে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, ঢাকা ডায়েট কাউন্সিলিং সেন্টারের প্রধান পুষ্টিবিদ সৈয়দা শারমিন আক্তার।
প্রেস কনফারেন্সে এ সময় সাতক্ষীরায় কর্মরত বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রেস কনফারেন্সে লিখিত বক্তব্যে পুষ্টিবিদ সৈয়দা শারমিন আক্তার বলেন, দুটি পদ্ধতিতে চিকিৎসা হয়ে থাকে। একটি প্রতিরোধমূলক, আরেকটি প্রতিষেধকমূলক। আমরা জানি প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ উত্তম। প্রত্যেক অঞ্চলের খাদ্যাভ্যাস এক স্থান থেকে অন্য স্থানে আলাদা হয়ে থাকে। প্রতিটি অঞ্চলের খাদ্য প্রাপ্তি ও উৎপাদনের উপর সে অঞ্চলে খাদ্যাভ্যাস নির্ভরশীল। যদি খাদ্য উৎপাদন ও প্রাপ্তি মেনে খাদ্যাভ্যাস হয়, তাহলে সে অঞ্চলের মানুষ সবচেয়ে বেশি সুস্থ থাকে। আজকাল মানুষের পশ্চিমা খাদ্যাভ্যাস অনেকাংশে অসুস্থ করে দিচ্ছে। শুধু তাই নয়, বয়স, কাজের ধরন বুঝেও ক্যালরি গ্রহণ করা উচিত। এখনো অনেক মানুষই মনে করে দামী খাবারে বেশি পুষ্টি। এ বিষয়গুলো সবার জানতে হবে, জানাতে হবে। সুষম খাদ্যাভ্যাস মানুষকে সুস্থ রাখে।
তিনি বলেন, সাতক্ষীরা অঞ্চলে অন্যান্য অনেক অঞ্চলের চেয়ে ভালো এবং তাজা খাদ্য দ্রব্য পাওয়া যায়। উৎপাদনও ভালো হয়। তা সত্তেও এখানকার মানুষজনের মধ্যে ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, ওজন বেড়ে যাওয়া, হার্টের সমস্যা রয়েছে। এছাড়াও এখানকার মানুষদের মধ্যে কোমরের হাড়ের সমস্যা রয়েছে। কুজো হয়ে যাওয়া, বিভিন্ন ধরনের আথ্রাইটিসের প্রকোপ বিদ্যমান। বেশিদিন বেঁচে থাকলেও বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা নিয়ে বেঁচে আছেন। মানুষ সচেতন হলে এর পরিত্রান সম্ভব। অনেকের বয়স অনুযায়ী ওজন ও উচ্চতা কম বেশি দেখা যাচ্ছে। বর্তমানে প্রসবের জন্য বেশির ভাগ সিজারিয়ান পদ্ধতি প্রাধান্য দিতে হচ্ছে। যা কয়েক বছর আগেও অনেক কম ছিলো। অনেক অল্প বয়সেও দেখা যাচ্ছে বয়স বৃদ্ধির আগমনী বার্তা। এ সমস্যাগুলো থেকে পরিত্রানের জন্য প্রয়োজন সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং দেহের ধরন বুঝে প্রয়োজনীয় ব্যায়াম।
তিনি আরো বলেন, আমরা খাদ্য ও পুষ্টি নিয়ে কাজ করতে গিয়ে দেখেছি শুধুমাত্র খাদ্যাভ্যাস পাল্টিয়ে অনেকাংশে নিরোগ ও সুস্থ রাখা সম্ভব। এ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে ডায়েট কাউন্সেলিং সেন্টারের সহযোগিতায় বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এ সেবা পৌছে দিয়ে চায়। সৈয়দা শারমিন আক্তার বলেন, মাসে অন্তত দুইবার তিনি সাতক্ষীরাতে রোগী দেখবেন মাসের দ্বিতীয় শুক্রবার ও চতুর্থ শুক্রবার। এখান থেকে যে কেউ পুষ্টিগত বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যার সমাধান পাবেন । এখানে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক খাবার ও জীবন যাত্রার উপর ভিত্তি করে ব্যবস্থাপত্র দেয়া হবে। স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও পুষ্টি স্বাস্থ্য বিষয়ক বিভিন্ন দরকারি বইও এখানে পাওয়া যাবে।
তিনি আশাবাদী গবেষণালব্ধ এই পদ্ধতি সাতক্ষীরা এলাকার মানুষের খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আর সেজন্য এ ধরনের উদ্যোগকে আরো তরান্বিত করার লক্ষ্যে তিনি এ সময় সাতক্ষীরায় কর্মরত সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
প্রেস কনফারেন্সে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন ডা. মো. হুসাইন শাফায়েত।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন ডায়েট কাউন্সিলিং সেন্টার সাতক্ষীরার পরিচালক আবিদ এ আজাদ।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]