গ্রীষ্মের প্রচন্ড দাবদাহ উপেক্ষা করে কড়া রোদে ভূমিদস্যূদের হাত থেকে রেহাই পেতে উন্মুক্ত সংবাদ সম্মেলন করেছেন খাদিজা খাতুন নামের এক নারী। তিনি কালিগঞ্জ উপজেলার কুশলিয়া ইউনিয়নের বাজারগ্রাম এলাকার তৌহিদ আহমেদ বুলবুলের স্ত্রী।
রোববার(১৬ এপ্রিল) বেলা ১১টায় সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে সাড়ে চারমাস বয়সী শিশুকন্যা লাবিবা ও ১২ বছর বয়সী ছেলে রাজীবকে নিয়ে তিনি এই সংবাদ সম্মেলন করেন।
এর আগে গত ১২ এপ্রিল বুধবার বিকাল ৩টায় জেলা জজ কোর্টের সামনে সাতক্ষীরা-কালিগঞ্জ মহাসড়কে দুই শিশু সন্তান নিয়ে ১৫ মিনিট যাবত অবরোধ করেন তিনি। পরে জেলা প্রশাসকের আশ্বাসে তিনি সেখান থেকে চলে যান।
অভিযোগ করে খাদিজা খাতুন বলেন, তার স্বামীর একটি ইলেক্ট্রনিক্সের দোকান আছে। এছাড়া একইসাথে তিনি খাদ্যবান্ধব প্রকল্পের ডিলার। স্থানীয় ইটভাটার মালিক মতিয়ার রহমান নামের এক ব্যক্তি তার দোকানের সামনে কয়েক হাজার ইট ফেলে তাদেরকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। এজন্য তারা বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন না। এছাড়া দোকানটিও খোলা যাচ্ছে না।
খাদিজা খাতুন বলেন, প্রথমে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোঃ হুমায়ুন কবির কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রহিমা সুলতানা বুশরাকে দায়িত্ব দেন। এরপর ইউএনও কুশলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কাশেম মোঃ আব্দুল্লাহ্র কাছে দায়িত্ব দেন। পরে উপজেলা চেয়ারম্যান আবার তাকে ইউএনওর কাছে ফেরত পাঠান। এরপর ইউএনও বলেন, মেসেজ দেওয়া হয়েছে। খুব দ্রুত সমস্যা সমাধান হবে। এরপর ৫ দিন অতিবাহিত হলেও ওই ইট কেউ সরায়নি।
এদিকে ভাটামালিক মতিয়ার নিজের পক্ষে শতাধিক দরিদ্র সাধারণ মানুষদের নিয়ে দুপুরে ঘন্টাব্যাপী খাদিজা বুলবুল ও তাদের সন্তানদের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেন। তিনি খাদিজার অভিযোগের ব্যাপারে মতি ব্রিকসের মালিক মতিয়ার রহমান ইট জমিয়ে রাখার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ওই জায়গাটি খাদিজা বা তার স্বামী বুলবুল কারোরই নয়। জায়গাটি তার নিজের। এজন্য তিনি সেখানে ইট ফেলেছেন। তিনি বলেন, তার জামাই পুলিশ কর্মকর্তা। তারপাশে প্রশাসনের লোকজন, এলাকার গন্যমান্য সবাই আছে। তিনি যেভাবেই হোক খাদিজাদের উচ্ছেদ করবেন।
এদিকে খাদিজা খাতুনের বাড়ির সামনের সিসিটিভি ফুটেজ চেক করে দেখা গেছে, সেখানে ট্রলিতে করে হাজার হাজার ইট ফেলে জায়গাটি আবদ্ধ করে রাখা হচ্ছে।
এদিকে খাদিজা খাতুনের এই অসহায় অবস্থা ও বাড়ির সামনে ইটের স্তুপ করে রেখে অচলায়তন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ইট সরাতে খাদিজারাই বাঁধা দিয়েছে। তবে এ কথা খাদিজা ও মতি দুজনই অস্বীকার করেছেন।
পাঁচদিন ব্যাপী এ অচলায়তনের জন্য সাতক্ষীরার মানবাধিকার সংগঠক মাধব দত্ত বলেন, প্রশাসনের এ ভূমিকা খুবই বেদনাদায়ক। উপজেলা প্রশাসনের গাফিলতিতে এই অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোঃ হুমায়ুন কবির জানান, আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি। দলিলে জায়গাটি যার নামে রয়েছে তিনিই সঠিক সমাধান পাবেন।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]