নিজস্ব প্রতিনিধি : সাতক্ষীরা পৌরসভায় ডেঙ্গু প্রতিরোধ অভিযান শুরু করা হয়েছে। ৭ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টায় সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে সাতক্ষীরা পৌরসভা ও জেলা প্রশাসনের যৌথ আয়োজনে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।
সাতক্ষীরা পৌরসভার (ভারপ্রাপ্ত) মেয়র কাজী ফিরোজ হাসান'র সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন এবং ফগার মেশিন দিয়ে ডেঙ্গু প্রতিরোধ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির। এসময় তিনি তার বক্তব্য বলেন, সাতক্ষীরা পৌরসভা কে একটি নান্দনিক পৌরসভা হিসেবে দেখতে চাই। পৌরসভার নাগরিক সেবা নিশ্চিতকরণের পাশাপাশি সাতক্ষীরা পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডে ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। এবং ডেঙ্গু প্রতিরোধে সকলকে সচেতন হতে হবে। এসময় মেয়র ও কাউন্সিলর বৃন্দ মানুষের মাঝে ডেঙ্গু প্রতিরোধে জনসচেতনামূলক লিফলেট বিতরণ করেন। লিফলেট সম্বলিত বিষয় সমূহ ছিল, ডেঙ্গু কীটপতঙ্গ বাহিত একটি সংক্রামক রোগ। আমাদের দেশে বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষিপ্তভাবে এ রোগের প্রভাব দেখা যায়। যে কোন বয়সের মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। এডিস জাতীয় মশার কামড়েই ডেঙ্গু জ্বর হয়। প্রাথমিকভাবে শনাক্ত হলে এ রোগ সহজেই নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং চিকিৎসায় সেরে যায়। কিন্তু মারাত্মক হেমোরেজিক হলে এবং যথাযথ চিকিৎসা না হলে রোগীর মৃত্যু হতে পারে। এডিস মশা চেনার উপায় এডিস মশা দেখতে অনেকটা কিউলেক্স মশার মত তবে গায়ে ডোরা কাটা দাগ আছে। এ মশা স্বচ্ছ পানিতে থাকতে ভালোবাসে। ফুলের টব, ভাঙ্গা হাঁড়ি-পাতিল, কলস, গাড়ীর পরিত্যাক্ত টায়ার, কৌটা, নারিকেল বা ডাবের খোসা ইত্যাদি যেখানে স্বচ্ছ পানি থাকে সেখানে এডিস মশা বংশ বৃদ্ধি করে। এডিস মশা আলো-আধারিতে (সকাল-সন্ধ্যা) কামড়ায়। ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ শরীরে তাপমাত্রা হঠাৎ করে ১০৪ থেকে ১০৫ ডিগ্রী বৃদ্ধি পায়। মাথা ব্যথা, মাংসপেশী, চোখের পেছনে, পেটে ব্যথা এবং হাড়ে বিশেষ করে মেরুদন্ডে ব্যথা। অরুচি, বমি বমি ভাব ও বমি করা। চামড়ার নিচে রক্তক্ষরণ, চোখে রক্ত জমাট বাধা। লালচে কালো রঙের পায়খানা, দাঁতের মাড়ি, নাক, মুখ ও পায়খানার রাস্তা দিয়ে রক্তপাত। রক্তচাপ হ্রাস, নাড়ীর গতি দ্রুত হওয়া, ছটফট করা, শরীর ঠান্ডা হয়ে যাওয়া, শ্বাসকষ্ট বা অজ্ঞান হয়ে পড়া। শরীরে হামের মত দানা দেখা দিতে পারে। মারাত্মক (হেমোরেজিক) ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে শরীরের অন্তঃস্থিত বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ হতে রক্তক্ষরণ এবং পেটে ও ফুসফুসে পানি জমতে পারে। ডেঙ্গু জ্বর হলে কি করবেন : ডেঙ্গু জ্বর হলে দেরি না করে নিকটস্থ স্বাস্থ্যকর্মীকে খবর দিবেন বা ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ। জ্বর যাতে না বাড়ে সেজন্য প্যারাসিটামল জাতীয় ঔষধ ডাক্তারের পরামর্শক্রমে খেতে পারেন।
রোগীর মাধায় পানি দিন বা ভিজা কাপড় দিয়ে তা মুছে দিন। রোগীকে প্রচুর পরিমাণে তরল ও স্বাভাবিক খাবার খেতে দিন। রোগ বৃদ্ধি পেলে রোগীকে নিকটস্থ হাসপাতালে নিন। ডেঙ্গু প্রতিরোধের উপায় ফুলের টব, প্লাস্টিকের পাত্র, ভাঙ্গা হাঁড়ি-পাতিল, টিনের কৌটা, গাড়ীর পরিত্যাক্ত টায়ার, ভাঙ্গা কলস, ড্রাম, নারিকেল ও ডালে খোসা, ফাস্টফুডের কন্টেইনার, এয়ারকন্ডিশনার ও রেফ্রিজারেটরের তলায় পানি জমতে দেবেন না। যে সব স্থানে মশা জন্মায় সেইসব স্থানে পানি জমতে দিবেন না, বাড়ীর ভেতর, আশ-পাশ ও আঙ্গিনা পরিষ্কার রাখুন। দিনে অথবা রাতে ঘুমানোর সময় মশারী ব্যবহার করুন। ডেঙ্গু প্রতিরোধযোগ্য।
পরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও জেলা জর্জ কোর্ট চত্বরে সাতক্ষীরা পৌরসভা পরিচ্ছন্ন কর্মীরা ফগার মেশিন দিয়ে স্প্রে করে মশা নিধন করে। এসময় উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা পৌরসভার পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নাজিম উদ্দিন, প্যানেল মেয়র শেখ আনোয়ার হোসেন মিলন, প্যানেল মেয়র রাবেয়া পারভীন, সংরক্ষিত মহিলা ১,২ ও ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুরজাহান বেগম, পৌরসভার ৪,৫ও ৬ নং ওয়ার্ডের মহিলা কাউন্সিলর অনিমা রানী মন্ডল, পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. কায়ছারুজ্জামান হিমেল, পৌরসভার ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সৈয়দ মাহমুদ পাপা, পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. আইনুল ইসলাম নান্টা, পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শেখ মারুফ আহম্মেদ, পৌরসভার ৭নং কাউন্সিলর শেখ জাহাঙ্গীর হোসেন কালু, পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. শফিকুল আলম বাবু, পৌরসভার ৯নং কাউন্সিলর শেখ শফিক উদ-দৌলা-সাগর, সাতক্ষীরা পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল করিম, পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা মো. লিয়াকত আলী, সহকারি প্রকৌশলী কামরুল আখতার তপু, এসও সাগর দেবনাথ, কামরুজ্জামান শিমুল, মো. মোহাব্বাত হোসাইনসহ কাউন্সিলর, সাংবাদিক ও পৌরসভার সম্মানিত নাগরিকবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]