সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কতিপয় ডাক্তার করোনা আক্রান্ত রোগির চিকিৎসা নিয়ে রিতিমতো বানিজ্য শুরু করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। করোনা আক্রান্ত রোগি পেলেই কতিপয় অসাধু ওই চিকিৎসক Advixa-40 নামের ইনজেকশন দেয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন, যার প্রতিটার মূল্য প্রায় ১৫ হাজার টাকা। ভুক্তভোগীরাই এসব অভিযোগ তুলেছেন।
এটি শুধু সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নয়, খোঁজনিয়ে জানাগেছে সাতক্ষীরার অন্যান্য সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের পতিপয় অসাধু চিকিৎসক প্রয়োজন ছাড়াই উচ্চমূল্যের এসব ওষুধ করোনা রোগির জন্য পরামর্শ দিচ্ছেন। আর রোগি ও তার স্বজনেরা উচ্চমূল্যের এসব ওষুধ কিনতে বাধ্য হচ্ছেন।
মেডিসিন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, Advixa-40 নামের ইনজেকশন জটিল বাতের রোগিদেরকে সাধারনত দেয়া হয়ে থাকে। এটি করোনা রোগির জন্য কার্যকর কোন ওষুধ নয়। কিছু কিছু ওষুধ কোম্পানি সুযোগবুঝে কতিপয় ডাক্তারকে নানা সুযোগ-সুবিধা, প্রোলোভন দেখিয়ে তাদের মাধ্যমে উচ্চমূল্যের এধরনের ওষুধ করোনা রোগির শরীরে পুশ করছে। যা ওই রোগির জন্য আদৌ প্রয়োজন নয়।
সাতক্ষীরার একাধিক ডাক্তারের ( মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ) সাথে কথা বলে জানা গেছে, করোনা প্রতিষেধক কোন ওষুধ এখনো আবিস্কার হয়নি। সাধারণত করোনা বা করোনা উপসর্গ জ্বর, সর্দি, কাশি দেখা দিলে নাপা, প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে। সাথে কিছু এন্টিবায়োটিক । এতেই ৯০ ভাগ করোনা রোগি সুস্থ্য হয়ে যাচ্ছেন। বাকী ১০ ভাগ করোনা আক্রান্ত রোগি জটিলআকার ধারন করলেও মৃত্যুর হার ১ থেকে ২ ভাগের বেশি নয়। তারা আরও বলেন, জটিল করোনা রোগির ক্ষেত্রে Advixa-40 ইনজেকশন বা এ জাতীয় অন্য কোন কোম্পানির দামি ওষুধ দেয়ার পরামর্শ দেয়া যেতে পারে। তবে করোনা পজেটিভ রোগি হলেই তাকে নামি-দামি ওষুধ দেয়ার পরামর্শ দেয়া বাণিজ্য ছাড়া আর কিছুই নয়। তবে সবাই নয়, সাতক্ষীরার কতিপয় চিকিৎসক এ ধরনের পরামর্শ দিচ্ছেন বলে আমরাও শুনেছি। বিনিময়ে তারা ওষুধ কোম্পানির কাছ থেকে সুবিধা নিচ্ছেন। এটি খুবই অমানবিক।
এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা: কুদরত-ই-খোদার সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি মোবাইল রিসিভ করেননি।
সাতক্ষীরা জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে জেলায় এ পর্যন্ত ২ হাজার ৩৭৬ জন করোনা পজেটিভ রোগি সনাক্ত হয়েছে। এই মুহুর্তে করোনা পজেটিভ রোগি রয়েছে ৬৯৬ জন। এদেরমধ্যে হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৬১ জন। বাকীরা বাড়িতেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। পরিসংখ্যান বলছে ইতোমধ্যে ১ হাজার ৬৮০ জন রোগি সুস্থ্য হয়েছেন। এদের অধিকাংশই ঘরোয়া চিকিৎসা বা টোটকা চিকিৎসায় সেরে উঠেছেন। সঙ্গত কারনেই প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে কেনো প্রয়োজন ছাড়াই ১৫ হাজার টাকা মূল্যের ইনজেকশন পুশ করতে হবে? সৌজন্যে : ভয়েস অব সাতক্ষীরা।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]