এবছর দেশে সারের ভর্তুকিতে ব্যয় হচ্ছে ৩০ হাজার কোটি টাকা এবং ইতোমধ্যে প্রায় ২৭ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি প্রদান করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক।
মঙ্গলবার সকালে সচিবালয়ে সার বিষয়ক জাতীয় সমন্বয় ও পরামর্শক কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে কৃষিমন্ত্রী এসব তথ্য জানান।
এসময় শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি বেগম মতিয়া চৌধুরী, সংসদ সদস্য জোয়াহেরুল ইসলাম, কৃষিসচিব মো: সায়েদুল ইসলাম, শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বলাইকৃষ্ণ হাজরা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, কোভিড পরিস্থিতির প্রভাবে বিশ্বব্যাপী সারের মূল্য অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাবে সারের সরবরাহ বিঘ্নিত হচ্ছে। সব মিলিয়ে সারের ভর্তুকিতে এ বছর ব্যয় হচ্ছে ৩০ হাজার কোটি টাকা, যা গতবছরের তুলনায় চার গুণ বেশি। বিগত ২০২০-২১ অর্থবছরে ভর্তুকিতে লেগেছিল ৭ হাজার ৭১৭ কোটি টাকা।
মন্ত্রী বলেন, বর্তমান সময়ে খাদ্য নিরাপত্তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। করোনা ও যুদ্ধের কারণে দ্রব্যমূল্যের দাম অনেক বেড়েছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) বলেছে, বিশ্বব্যাপী খাদ্যের দাম মার্চ মাসে রেকর্ড সর্বোচ্চ পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। সারাবিশ্বে খাদ্য সংকটের আশঙ্কা আরো বেড়েছে। কানাডার মতো উন্নত দেশ যারা খাদ্য রপ্তানি করে সেখানে মানুষ লাইন ধরে রুটির প্যাকেট কিনছে। একজনকে ২ প্যাকেটের বেশি রুটি ও ৫ লিটারের বেশি ভোজ্যতেল দিচ্ছে না। পরিবারের সবাই ছেলে-মেয়ে নিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে রুটি-তেল কিনছে। এ অবস্থায়, দেশে কৃষির উৎপাদন ও ফলন অব্যাহত রাখতে হবে। কোনোক্রমেই খাদ্যের জন্য বিদেশের ওপর নির্ভরশীল হওয়া যাবে না। খাদ্য নিরাপত্তা যাতে বিঘ্নিত না হয়, সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।
কৃষিমন্ত্রী আরো বলেন, বছরে সাড়ে ৩০ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দেয়া সারাবিশ্বে বিরল ঘটনা। পৃথিবীর কোনো দেশে এতো ভর্তুকি দেয়ার উদাহরণ নেই। ভর্তুকি কমাতে বিশ্বব্যাংকসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার চাপও রয়েছে। কিন্তু কৃষকদরদি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষকের স্বার্থে ও খাদ্য উৎপাদন অব্যাহত রাখতে আন্তর্জাতিক সংস্থার আপত্তি উপেক্ষা করে ভর্তুকি দিয়ে যাচ্ছেন। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে সারের দাম তিনগুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেলেও বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকার কৃষক পর্যায়ে সারের মূল্য বৃদ্ধি করেনি। অব্যাহতভাবে ভর্তুকি দিয়ে সুলভমূল্যে সার সরবরাহের মাধ্যমে কৃষি উৎপাদনের ধারা বজায় রেখেছে। বর্তমানে সারের মজুদ ও চাহিদা তুলে ধরে মন্ত্রী জানান, চাহিদার বিপরীতে বর্তমানে দেশে সব ধরনের সারের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। সারের কোনো সংকট নেই।
এর আগে সভায় ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য মোট রাসায়নিক সারের চাহিদা নির্ধারণ করা হয় প্রায় ৬৭ লাখ টন। এর মধ্যে ইউরিয়া ২৬ লাখ টন, টিএসপি ৭ লাখ টন, ডিএপি ১৫ লাখ টন, এমওপি সাড়ে ৭ লাখ টন, জিপসাম সাড়ে ৫ লাখ টন, জিংক সালফেট ১ লাখ ৪১ হাজার টন এবং বাকিগুলো জিপসাম, বোরন প্রভৃতি।
তথ্যবিবরণী-পিআইডি
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]