সিজারের পর গজ রেখেই পেট সেলাই, ৫ মাস পর সেই প্রসূতির মৃত্যু


কুমিল্লায় সিজারিয়ান অপারেশনের সময় পেটে গজ রেখে দেয়ার ৫ মাস পর ফের অপারেশন করে গজ বের করা শারমিন আক্তার (২৫) নামের সেই প্রসূতি মারা গেছেন।
মঙ্গলবার দিবাগত রাত দেড়টায় ঢাকার ধানমন্ডির বাংলাদেশ মেডিক্যাল হাসপাতালে লাইফসাপোর্টে থাকা অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শারমিনের স্বামী রাসেল মিয়া।
বুধবার ভোরে শারমিনের মরদেহ ঢাকা থেকে তার বাবার বাড়ি জেলার দেবিদ্বারের হোসেনপুর গ্রামে আনা হয়।
সেখানে সকাল ১০টায় প্রথম জানাজা শেষে নেয়া হয় স্বামীর বাড়ি মুরাদনগর উপজেলার মোগসাইর গ্রামে। সেখানে বাদ জোহর দ্বিতীয় জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
এদিকে, এ ভুল চিকিৎসার বিষয়ে জেলা প্রশাসন ও জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে এখনও কাজ শুরু করেনি জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তদন্ত কমিটি।
শারমিনের বড় ভাই রুহুল আমিন জানান, গত ৫ নভেম্বর দেবিদ্বারের আল ইসলাম ডায়াগনস্টিক সেন্টার অ্যান্ড হসপিটালে তার বোনের অস্ত্রোপচার করেন চিকিৎসক রোজিনা ও তার সহযোগী শারমিন আক্তার লিন্টা। অস্ত্রোপচারের পর ব্যথার কথা জানালে রোজিনা জানান, সিজার হলে ব্যথা হয়। ব্যথা কমানোর জন্য তিনি এক মাসের ওষুধ দেন। কিন্তু সেই ওষুধে কোনো কাজ হয় না। ঢাকাতেও বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা করান। কিন্তু অবস্থার ক্রমাগত অবনতি হতে থাকে।
এভাবে প্রায় চার মাস পার হওয়ার পর শারমিনকে কুমিল্লা ময়নামতি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে কিছু পরীক্ষা দিলে সেগুলো কুমিল্লা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে করানো হয়।
পরীক্ষা করে চিকিৎসক কর্নেল শরিফুল ইসলাম নিশ্চিত হন, শারমিনের পেটে গজ রয়েছে। ৫ এপ্রিল অস্ত্রোপচার করে তিনি গজ বের করে আনেন। কিন্তু পেটে ইনফেকশন হওয়ায় রোগীকে পাঁচ দিনের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় ঢাকায় নেয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসক শরিফুল।
শারমিনের স্বামী রাসেল জানান, তার স্ত্রীকে রাজধানীর ধানমন্ডিতে বাংলাদেশ মেডিক্যাল হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এই দম্পতির সাড়ে তিন বছর বয়সী আরেকটি মেয়ে আছে। দুই সন্তান নিয়ে তিনি অসহায় অবস্থায় পড়েছেন। বিচার দাবি করেছেন চিকিৎসকদের।
এ ব্যাপারে আল ইসলাম হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়াজ মোহাম্মদ হোসেন (এনাম) বলেন, ঘটনাটি যেভাবেই কিংবা যার ভুলেই হোক এমন অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুতে আমরা অনুতপ্ত এবং ওই পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। এ বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটি বিষয়টি তদন্ত করছে।
মুঠোফোনে কুমিল্লার সিভিল সার্জন ডা. মীর মোবারক হোসাইন বলেন, ওই প্রসূতির মৃত্যুর খবর আমরা জানতে পেরেছি। এ ঘটনায় ইতোমধ্যে পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি আগেই গঠন করা হয়েছে। তদন্তের প্রতিবেদন পাওয়া গেলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সৌজন্যে: আওয়ার নিউজ বিডি

কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
