যবিপ্রবি প্রতিনিধি: "কোনও মাত্রাই নিরাপদ নয়, সিসা দূষণ বন্ধে কাজ করার এখনই সময়” এই প্রতিপাদ্যে আন্তর্জাতিক সিসা দূষণ প্রতিরোধ সপ্তাহ-২০২৫ উপলক্ষে যশোরে র্যালি, মানববন্ধন ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
শনিবার (২৬ অক্টোবর) ইয়ুথনেট গ্লোবাল ও পিওর আর্থ বাংলাদেশ যৌথভাবে এ কর্মসূচির আয়োজন করে, যার সহযোগিতায় ছিল ইউনিসেফ।
দুপুরে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) সামনে থেকে র্যালিটি শুরু হয়ে যবিপ্রবি স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে মানববন্ধনের মধ্য দিয়ে শেষ হয়। প্রধান অতিথি ছিলেন যবিপ্রবি স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক মো. আবুল কামাল। র্যালিতে অংশ নেন ৭০ থেকে ৮০ জন অংশগ্রহণকারী, যাদের মধ্যে ছিলেন ইয়ুথনেট গ্লোবালের স্বেচ্ছাসেবী, পিওর আর্থ বাংলাদেশ ও ইউনিসেফের প্রতিনিধি, স্থানীয় এনজিও, পরিবেশ অধিদপ্তর, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, সাংবাদিক, পরিবেশ অধিকারকর্মী, সমাজকর্মী ও শিক্ষার্থীরা।
এসময় অংশগ্রহণকারীদের হাতে ছিল সিসা দূষণ প্রতিরোধে সচেতনতামূলক ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড। পুরো র্যালি মুখরিত ছিল “সিসা দূষণ বন্ধ হলে, বাড়বে শিশু বুদ্ধি-বলে” সহ নানা স্লোগানে। পরে উপস্থিতদের মাঝে সিসা দূষণবিষয়ক লিফলেট ও স্টিকার বিতরণ করা হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) উদ্যোগে প্রতিবছর অক্টোবর মাসে “আন্তর্জাতিক সিসা দূষণ প্রতিরোধ সপ্তাহ” পালন করা হয়। এবারের প্রতিপাদ্য— “No Safe Level: Act Now to End Lead Exposure”। গবেষণায় দেখা গেছে, বিশ্বের সর্বাধিক সিসা দূষিত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে। দেশে প্রায় ৩ কোটি ৬০ লাখ শিশু— অর্থাৎ প্রায় ৬০ শতাংশ শিশুর রক্তে উচ্চমাত্রায় সিসা পাওয়া গেছে। এতে শিশুদের বুদ্ধি কমে যাওয়া, মনোযোগের ঘাটতি, আচরণগত সমস্যা, এমনকি অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধির আশঙ্কা দেখা দেয়। প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে সিসা দূষণের কারণে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে এবং প্রতি বছর প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার মানুষ এ কারণে মারা যান।
পিওর আর্থ বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর মিতালী দাশ বলেন, আমাদের পরিবেশের প্রতিটি উপাদান মাটি, পানি, বায়ু সিসা দ্বারা দূষিত হচ্ছে। সিসাযুক্ত পণ্য ও খাদ্যচক্রের মাধ্যমে সিসা মানবদেহে প্রবেশ করছে। এই দূষণ বন্ধে গণসচেতনতা বৃদ্ধি, ভোক্তাপণ্যে সিসার মান নির্ধারণ, অবৈধ ব্যাটারি রিসাইক্লিং বন্ধ ও কঠোর আইন প্রয়োগের বিকল্প নেই।
যশোর জেলার ইয়ুথনেট সমন্বয়ক শেখ নাজমুস সাকিব সিয়াম বলেন, সিসা দূষণ রোধে সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত কার্যকর উদ্যোগ প্রয়োজন।
কর্মসূচির শেষে আয়োজকরা সরকার, নীতিনির্ধারক ও সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের প্রতি দশ দফা দাবি উপস্থাপন করেন।
এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, সিসাকে “বিষাক্ত রাসায়নিক দ্রব্য” হিসেবে ঘোষণা, জাতীয় পর্যায়ে রক্তে সিসার মাত্রা যাচাইয়ের জরিপ পরিচালনা, শিশু ও গর্ভবতী নারীদের অগ্রাধিকার দেওয়া এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে সিসার মান নিয়ন্ত্রণ ও মানদণ্ড নির্ধারণ।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]