বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত নাথালি চুয়ার্ড বলেছেন, সুইস ব্যাংকের কাছে অর্থ জমা নিয়ে সুইজারল্যান্ড সরকারের কাছে বাংলাদেশ সরকার কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য চায়নি। সুইজারল্যান্ড কালো টাকা রাখার স্বর্গরাজ্য নয়। এ বিষয়ে অনেক ভুল ধারণা রয়েছে।
বুধবার (১০ আগস্ট) বেলা ১১টায় রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ডিপ্লোমেটিক করেসপনডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ডিক্যাব) আয়োজিত ‘ডিকাব টক’ এ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
নাথালি চুয়ার্ড বলেন, সুইজারল্যান্ড সরকার সুইস ব্যাংকের ত্রুটি সংশোধন করতে অব্যাহতভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সুইস ব্যাংক আন্তর্জাতিক সব প্রক্রিয়া মেনেই কাজ করে। সেখানে কালোটাকা বা দুর্নীতির অর্থ রাখার কোনো নিয়ম নেই।
তিনি বলেন, আমরা অবৈধ অর্থকে উৎসাহিত করি না। সুইস ব্যাংক বিশ্বের একটি অন্যতম ব্যাংকিং ব্যবস্থা। আমাদের জিডিপির অন্যতম একটি অংশ। অর্থাৎ আমাদের জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সুইস ব্যাংক প্রতি বছর বাংলাদেশি টাকার তালিকা প্রকাশ করে। এই তালিকায় ব্যক্তিগত টাকা সংরক্ষণ হার বাড়ছে না, বরং কমছে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, সুইজারল্যান্ড এবং বাংলাদেশের মধ্যে সহযোগিতার বিষয়ে আমি বলতে চাচ্ছি যে, সুইজারল্যান্ড আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আন্তর্জাতিক মান অনুসারে আমরা এই ধরনের তথ্য আদান-প্রদানের জন্য কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম ও চুক্তিও করতে পারি। ইতোমধ্যে আমরা সরকারকে এ বিষয়ে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর বিষয়ে সমস্ত তথ্য সরবরাহ করেছি।
রোহিঙ্গা বিষয়ে তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা তাদের নিজেদের জন্যই নয়, বাংলাদেশের জন্য একটি সমস্যা। আমরা যতটুকু সম্ভব সহযোগিতা করছি। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আমরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব। আমরা এখানকার পরিস্থিতি সব দেখেছি।
জাতিসংঘে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে সুইচ সরকারের ভূমিকা কেমন হবে এমন প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেন, আমরা জাতিসংঘের স্থায়ী সদস্য নয়। নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হিসেবে এখন রয়েছি। আমরা বিষয়গুলো তুলে ধরবো।
বাংলাদেশের সঙ্গে সুইজারল্যান্ডের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে উল্লেখ করে নাথালি চুয়ার্ড বলেন, গত বছর দুই দেশের বাণিজ্য এক বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে। সুইস সরকার ৫০ বছর ধরে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করছে। আগামী দিনগুলোতেও এ সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।
গ্রিন জ্বালানি ও প্রযুক্তির প্রসারে সুইজ সরকার অব্যাহতভাবে কাজ করে যাচ্ছে বলেও জানান রাষ্ট্রদূত।
নাথালি চুয়ার্ড বলেন, সুইস সরকারের সহায়তায় বাংলাদেশে অনেক প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। এ দেশে স্থানীয় সরকারের কার্যক্রম সুইস সরকারের সহায়তায় হচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা ও উপজেলা পরিষদের মতো স্থানীয় সরকারব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে পারলে এ দেশের জনগণ আরও বেশি উপকৃত হবে।
ডিকাবের সাধারণ সম্পাদক এ কে এম মঈনুদ্দীনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির সভাপতি রেজাউল করিম লোটাস, সাবেক সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ সংগঠনটির সদস্যরা।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]