ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে বঙ্গোপসাগর ও সুন্দরবনের নদ-নদী ও খালের পানি বাড়তে শুরু করেছে। বৃহস্পতিবার রাত থেকেই সুন্দরবনের নদী-খালে জোয়ারের পানি ছিল স্বাভাবিকের তুলনায় দেড় থেকে দুই ফুট বেশি উঁচু। আর বঙ্গোপসাগরের দুবলা চরে পানি বেড়েছে তিন ফুটের বেশি।
এদিকে, ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে মোংলা কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোন। আজ শুক্রবার সকাল থেকে উপকূলের ১৪ স্টেশন থেকে সতর্কীকরণ মাইকিং করা হচ্ছে।
বন বিভাগের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অমাবস্যার গোনের (কৃষ্ণপক্ষ বা মরা গোন) সময় জোয়ারের পানির উচ্চতা কম হয়ে থাকে। আর পূর্ণিমার গোনে (শুক্লপক্ষ) পানি বেশি হয়ে থাকে। কিন্তু চলতি মরা গোনে (অমাবস্যায়) স্বাভাবিকের তুলনায় জোয়ারের পানি বেড়েছে মূলত মোখার প্রভাবে।
এ ছাড়া বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সুন্দরবন উপকূলে বাতাসও ছিল বেশি। এতে নদীতে ঢেউ বেড়েছে। অন্যদিকে মোখার ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে বন বিভাগের সব রেঞ্জ, স্টেশন ও টহল ফাঁড়িতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্রসহ অন্যান্য মূল্যবান মালামাল সাবধানে রাখার পাশাপাশি বন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরাপদে অবস্থানের নিদের্শনা দেয়া হয়েছে।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় (বাগেরহাট) বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় মোখার জন্য বন বিভাগের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি বাতিল করে তাদের নিজ নিজ কর্মস্থলে থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া পর্যাপ্ত পরিমাণে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাবারসহ শুকনো খাবারও মজুতের জন্য প্রত্যেক অফিসকে বলা হয়েছে।’
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের করমজল পর্যটন, বন্যপ্রাণী প্রজনন ও তথ্যকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আজাদ কবির বলেন, ‘সাধারণত মরা গোনে জোয়ারে পানির উচ্চতা কম হলেও মোখার প্রভাবে বুধবার রাত থেকে সুন্দরবনের নদী-খালে পানি বেড়েছে। মোখা যত কাছে এগিয়ে আসতে থাকবে, পানি ততই বাড়বে।’
ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে বঙ্গোপসাগর, সুন্দরবনের নদ-নদী ও মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেলে চলাচলরত দেশি-বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজের নাবিক, জেলে-মাঝিমাল্লাদের নিরাপদে সরে যেতে বলা হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোস্টগার্ডের এ প্রচারণা চলবে।
কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের (মোংলা) অপারেশনাল অফিসার লে. কমান্ডার তারেক আহমেদ জানান, সুন্দরবন উপকূলে সতর্কীকরণ ও সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী উদ্ধার তৎপরতার জন্য কোস্টগার্ডের হাই স্পিডবোট ও জাহাজ প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, পর্যাপ্ত খাদ্য সামগ্রী ও চিকিৎসার জন্য মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]