
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার একান্ত বৈঠক হয়েছে। শুক্রবার (২১ নভেম্বর) ঢাকা সেনা নিবাসে সেনাকুঞ্জে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের কর্মকর্তা শায়রুল কবির খান জানান, খালেদা জিয়া সেনাকুঞ্জে পৌঁছার পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে একান্তে কয়েক মিনিট কথা বলেন।
এক বছর পর সেনাকুঞ্জের অনুষ্ঠানে এলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এসময় প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের পাশের আসনে বসে তিনি উপভোগ করেছেন সশস্ত্র বাহিনী দিবসের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান।
শুক্রবার বিকেল ৪টায় গুলশানের বাসা থেকে তিনি সেনাকুঞ্জে পৌঁছালে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ নাজমুল হাসান এবং বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানান।
গাড়ি থেকে নেমে হুইল চেয়ারে বসে অনুষ্ঠানস্থলে যান খালেদা জিয়া। এ সময় তার পরনে ছিল ল্যাভেন্ডার রঙের শিফন শাড়ি। হাত তুলে তাকে অভিভাদনের জবাব দিতে দেখা যায়।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস পৌঁছালে বিকাল ৪টার পর জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শুরু হয়। তারপর প্রধান উপদেষ্টা বক্তব্য দেন।
বক্তব্যের শুরুতে তিনি সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের অভিনন্দন জানান এবং মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।
এর কিছুক্ষণ পর সেনাকুঞ্জে পৌঁছান খালেদা জিয়া। শুরুতে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে একান্তে কয়েক মিনিট কথা বলেন। পরে তারা যান মূল অনুষ্ঠানস্থলে।
সেখানে পাশাপাশি আসনে বসে সরকারপ্রধান এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে হাসিমুখে কথা বলতে দেখা যায়। অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
এদিকে, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়, সেনানিবাসে সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানের সাইডলাইনে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া পারষ্পরিক সৌজন্য বিনিময় করেন।
প্রধান উপদেষ্টা এসময় সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বর্তমান শারীরিক অবস্থার বিষয়ে খোঁজ নেন এবং তার সুস্থতা কামনা করেন।
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানান। তিনি প্রধান উপদেষ্টার সহধর্মিণী আফরোজী ইউনূসের শারীরিক অবস্থার খোঁজ নেন এবং শুভকামনা জানান।
খালেদা জিয়া বিকাল ৪টায় গুলশানের বাসা ফিরোজা থেকে সেনানিবাসের উদ্দেশ্যে রওনা হন। তার সঙ্গে একই গাড়িতে ছিলেন তার ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শামিলা রহমান সিঁথি, খালেদা জিয়ার প্রয়াত ভাই সাঈদ ইসকান্দারের স্ত্রী নাসরিন ইসকান্দার।
বিএনপি চেয়ারপারসনের গাড়িবহরের সঙ্গে ছিলেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ডের প্রধান অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদার, এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়াও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহ উদ্দিন আহমদ, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ সেনাকুঞ্চের এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
এছাড়া জামায়াতে ইসলামীর আমীর শফিকুর রহমান, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বিজেপির চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দও সেনাকুঞ্চের অনুষ্ঠানে এসেছিলেন।
ছয় বছর পর গতবছর এই সেনাকুঞ্জের অনুষ্ঠানেই প্রকাশ্যে দেখা দিয়েছিলেন খালেদা জিয়া।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]