ঝড়-ঝাপটা বিছুই ছিল না, তবুও হঠাৎ উপড়ে পড়লো কলারোয়ার ছলিমপুর হাজী নাসির উদ্দীন কলেজে গেটের শতবর্ষী গোড়–ই বা শাড়াগাছটি।
তবে এতে কোন হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
অনেক স্মৃতি জড়িত শতবর্ষী গাছটি গত ৫ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে এমনিতেই উপড়ে পড়ে। সেসময় লোকসমাগম ছিল না বলেই রক্ষা- এমনটি জানালেন স্থানীয় কয়েকজন।
শুধু উত্তর পাশের কলেজ গেটের সামান্য ক্ষতি হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, গাছটিকে ঘিরে গড়ে উঠেছিল গড়–ইগাছার মাঠ, হাজী নাসিরউদ্দীন কলেজ। শুধু তাই নয় পথিকের বিশ্রামের একমাত্র জায়গা হল এই শতবর্ষী গাছটি। সেই গাছ হঠাৎ উপড়ে পড়ায় অনেকেই হতভম্ব হয়ে পড়েন, কষ্টও পেয়েছেন অনেকেই।
আশির্ধো আব্দুল জব্বার মনে কষ্ট নিয়ে জানালেন, এই শাড়াগাছের বয়স একশ বছরের বেশি হবে। একসময় গ্রামে বিদ্যুৎ ছিল না। গরমে ছায়াঘেরা পরিবেশের জন্য এইশতবর্ষী গড়–ই শাড়া গাছের নিচে বসে অনেকেই নির্মল ও প্রশান্তির বাতাস খেয়েছেন। আর এই শাড়াগাছকে ঘিরেই সৃষ্টি হয়েছে ঐতিহ্যবাহী হাজী নাসির উদ্দীন কলেজ। মনে হত সমগ্র কলেজ ক্যাম্পাসটি সেই শতবর্ষী গাছের ছায়াঘেরা।
প্রবীণ এরফান খান বলেন, শতবর্ষী এই শাড়াগাছ হঠাৎ ভেঙে পড়ায় মনটা খারাপ হয়ে গেছে। যদি গত ২০মে আম্পান ঝড়ে ভেঙ্গে পড়ত হতো তবুও মনে বুঝ দেওয়া যেতো, এতটা খারাপ লাগতো না। এই গাছের নিচে আমার কেটেছে শৈশব ও কৈশর, কেটেছে যৌবন। এখন বৃদ্ধকাল পার করছি। গাছটি এভাবে উপড়ে পড়বে ভাবতে পাড়িনি। তবুও শুকরিয়া আদায় করছি কোন দুর্ঘটনা না ঘটার জন্য।
এদিকে গাছটি উপড়ে পড়ার পর সুযোগ সন্ধানী অনেকেই গাছের ডালপালা কেটে নিয়ে যাচ্ছে। সংশিষ্ট কলেজ কর্তৃপক্ষ বিষয়টি দ্রুত নজর দিবেন বলে দাবি এলাকাবাসীর।
উপজেলা বনবিভাগের কর্মকর্তা জানান, গত ৫ সেপ্টেম্বর গাছটি উপড়ে পড়েছে বলে সংবাদ পাওয়ার পর স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে নজরদারির জন্য বলা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, গাছের গোড়া থেকে মাটি সরে যাওয়া, সঠিক পরিচর্যা না থাকায় শতবর্ষের বৃক্ষগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। দেখভালের অভাবে গাছে মরক দেখা দিয়েছে। তবে উপড়ে পড়া গাছটি এখনও সৃষ্টিকর্তা ইচ্ছায় বেঁচে যেতে পারে।
ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে থাকা গাছগুলোর গোড়ায় মাটির ও পাকা করে বেধে দেওয়ার কথা জানান বনবিভাগের এই কর্মকর্তা।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]