হাসপাতালে চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে খালেদা জিয়া
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে।
মঙ্গলবার তার চিকিৎসায় নিয়োজিত মেডিকেল বোর্ড বৈঠকে বসেছে।
দলটির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে এখন। তার জন্য মেডিকেল বোর্ড বসেছে আজ। পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিপোর্টগুলো দেখার পর পরবর্তী করণীয় ঠিক হবে।
ডা. জাহিদ জানান, খালেদা জিয়ার অবস্থা স্থিতিশীল। চিকিৎসকরা তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছেন।
এর আগে সোমবার দিনগত রাতে ১টা ৩৫ মিনিটে খালেদা জিয়াকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা তাকে হাসপাতালে ভর্তি করার সিদ্ধান্ত নেন। চিকিৎসকদের সিদ্ধান্তে তাকে রাতেই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
মধ্যরাতে হাসপাতালে খালেদা জিয়া
মধ্যরাতে হাসপাতালে খালেদা হাসপাতালে পৌঁছেছেন খালেদা জিয়া।
শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে জরুরি ভিত্তিতে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
সোমবার (১২ জুন) দিনগত রাত ১টা ৪০ মিনিটে হাসপাতালে পৌঁছান খালেদা জিয়া।
এর আগে রাত সোয়া ১টার দিকে হাসপাতালের উদ্দেশ্যে গুলশানের বাসা ফিরোজা থেকে রওনা হন তিনি। এসময় বেগম জিয়ার গাড়িবহরে দলের একাধিক নেতা ও ঘনিষ্টজনদের দেখা যায়।
গত ২৭ এপ্রিল চিকিৎসকদের পরামর্শে খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
জানা গেছে, এদিন রাত পৌনে ১টার দিকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, বিএনপি নেতা আমান উল্লাহ আমান ও শামা ওবায়েদ গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের বাসভবন ফিরোজায় প্রবেশ করেন।
‘বিদেশে যাওয়া যাবে না এবং বাড়িতে বসে চিকিৎসা নিতে হবে’- এ দুই শর্তে অন্তর্বর্তীকালীন মুক্তিতে রয়েছেন খালেদা জিয়া।
২০২০ সালের ২৫ মার্চ ‘দ্য কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর’-এর ধারা-৪০১ (১)-এর ক্ষমতাবলে সরকারের নির্বাহী আদেশে প্রথমবারের মতো শর্তসাপেক্ষে ছয় মাসের অন্তর্বর্তীকালীন মুক্তি পান বিএনপি চেয়ারপারসন। ওই বছরের সেপ্টেম্বরে তার মুক্তির মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানো হয়। এরপর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দফায় দফায় বাড়ে মুক্তির মেয়াদ।
৭৭ বছর বয়সী খালেদা জিয়া গত তিন বছরের বেশি সময় ধরে গুলশানের বাসা ‘ফিরোজায়’ রয়েছেন। তিনি আর্থারাইটিস, ডায়াবেটিস, চোখের সমস্যাসহ বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছেন।
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে টানা ৮১ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর গত বছরের ১ ফেব্রুয়ারি বাসায় ফেরেন খালেদা জিয়া। এর পাঁচ মাস পর ওই বছরের ১০ জুন মধ্যরাতে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। ওই রাতেই তাকে হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) ভর্তি করা হয়।
এর আগে ২০২১ সালের এপ্রিলে সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীর করোনাভাইরাস পজিটিভ শনাক্ত হলে সে দফায় একই হাসপাতালে ৫৪ দিন চিকিৎসা নিয়েছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন। ওই বছরের ১৩ নভেম্বর আবারও এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হলে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় তার লিভার সিরোসিস ধরা পড়ে।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন বকশীবাজার আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ আদালত। রায় ঘোষণার পর খালেদাকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে অবস্থিত পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রাখা হয়।
ওই বছরের ৩০ অক্টোবর বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিলে আরও পাঁচ বছরের সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করেন হাইকোর্ট। একই বছরের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদার সাত বছরের সাজা হয়।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)