শারীরিকি বিভিন্ন জটিল রোগের মধ্যে হার্ট অ্যাটাক, ক্যানসার কিংবা ডিমনেশিয়া অন্যতম। যদিও ভুল জীবনধারার কারণে এসব রোগের ঝুঁকি অনেকটাই বেড়ে যায়।
তবে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া, নিয়মিত ব্যায়াম করা, ধূমপান এড়ানো, মানসম্পন্ন ঘুমের অভ্যাস জটিল রোগের ঝুঁকি কমাতে পারে।
বর্তমানে কমবেশি সবাই ব্যস্ত সময় পার করেন। এ কারণে শরীরচর্চার অভাব বেশিরভাগের মধ্যেই আছে, যা বিভিন্ন কঠিন রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, শুধু হেঁটেই শরীরের একাধিক রোগের ঝুঁকি কমানো কিংবা প্রতিরোধ করা যায়। তার মধ্যে হার্ট অ্যাটাক, ক্যানসার ও ডিমনেশিয়া অন্যতম।
নিয়মিত হাঁটলে কী হয়?
নিয়মিত হাঁটার অনেক উপকারিতা আছে। হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, বিষণ্নতা ও স্থূলতার ঝুঁকি কমানোর মতো অসংখ্য স্বাস্থ্য সুবিধা মেলে।
জামা ইন্টারনাল মেডিসিন ও জামা নিউরোলজি জার্নালে প্রকাশিত একটি নতুন গবেষণা অনুসারে, প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজার কদম হাঁটা ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি ৫০ শতাংশ কমাতে পারে।
নতুন গবেষণাটি প্রায় ৮০ হাজার ব্যক্তির ফিটনেস ট্র্যাকিং ডেটা পর্যবেক্ষণ করে। তারা দেখেছেন, যারা প্রতি মিনিটে পদক্ষেপের গতি বাড়িয়েছে তারা দৈনিক হাঁটার কারণে অনেক স্বাস্থ্য সুবিধা পেয়েছেন। তাই নিয়মিত হাঁটার পাশাপাশি গতি বাড়ানোর দিকেও নজর রাখতে হবে।
সমীক্ষা অনুসারে, যারা প্রতিদিন ৩০ মিনিটের জন্য দ্রুত গতিতে (প্রতি মিনিট ৮০-১০০ পা) হাঁটেন, তাদের হৃদরোগ বা ক্যানসারের ঝুঁকি ২৫ শতাংশ কম ছিল। একইভাবে তাদের মধ্যে ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি ৩০ শতাংশ কম ও সর্বজনীন মৃত্যুর ঝুঁকি ৩৫ শতাংশ কম ছিল।
সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন গবেষণা ফেলো ও গবেষণার লেখক ম্যাথিউ আহমেদি পরামর্শ দেন, একটানা ৩০ মিনিট উচ্চ গতিতে হাঁটা যাদের পক্ষে কষ্টকর, তারা অল্প ব্যবধানে দ্রুত হাঁটার মাধ্যমে একই সুবিধা পেতে পারেন।
আবার একটানা ৩০ মিনিট না হেঁটে দিনের বিভিন্ন সময় ৫-১০ মিনিট করে উচ্চ গতিতে হাঁটলেও একই স্বাস্থ্য সুবিধা পাবেন।
এছাড়া গবেষকরা আরও দেখেছেন, যে অংশগ্রহণকারীরা প্রতিদিন গড়ে ৯ হাজার ৮০০ কদম হেঁটেছেন তারাও সবটুকু স্বাস্থ্য সুবিধা পেয়েছেন।
এমনকি যারা দৈনিক ২ হাজার পা হেঁটেছেন তাদের মধ্যেও অকাল মৃত্যু, হৃদরোগের পাশাপাশি ক্যানসারের ঝুঁকি প্রায় ১০ শতাংশ কম ছিল।
এর অর্থ হলো যতো বেশি হাঁটবেন, ততই সুফল পাবেন। যারা প্রতিদিন ১০ হাজার পা হাঁটবেন তাদের মধ্যে কঠিন রোগের ঝুঁকিও কমবে অনেক।
কীভাবে হাঁটবেন?
সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি), ইউএস এর পরামর্শ অনুযায়ী, ধীরে ধীরে হাঁটা শুরু করুন ও সপ্তাহে ১৫০ মিনিট শারীরিকভাবে সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করুন।
হাঁটতে একঘেয়েমি লাগলে আপনার কুকুরকে সঙ্গে নিয়ে হাঁটুন। এতে আপনি না চাইলে হাঁটতে হবে কুকুরকে ধরে রাখার জন্য।
বন্ধুবান্ধব বা প্রতিবেশীদের সঙ্গে আড্ডা দিন হাঁটতে হাঁটতে, এছাড়া ফোনে কথা বলার সময়ও পায়চারি করুন।
আবার গন্তব্যস্থলে হেঁটে যাওয়া, লিফটের বদলে সিঁড়ি ব্যবহার করা ইত্যাদির মাধ্যমে আপনি সহজেই শারীরিকভাবে সত্রিয় থাকতে পারবেন।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]