যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি) দিবস ২০২১ সোমবার। দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বৃহত্তর যশোর জেলার প্রথম ও একমাত্র পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়টি আজ এর ১৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করতে যাচ্ছে। এবছর করোনা মহামারীর কারনে স্বল্প পরিসরে উদযাপিত হবে দিবসটি। ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পালনের জন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আর এদিকে নানা দাবি দাওয়া নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস ২০২১ বর্জন করেছে যবিপ্রবি শিক্ষক সমিতি।
উপাচার্য বরাবর প্রেরিত শিক্ষক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ড. এস. এম. নুর আলম ও সাধারণ সম্পাদক মো. আমজাদ হোসেন, ড. ইঞ্জি স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস ২০২১ বর্জনের সিদ্ধান্ত জানানো হয়। চিঠিতে জানানো হয়, গত ২৯ জুলাই ২০১৭ সাল থেকে প্রভাষক হতে সহকারী অধ্যাপক পদে সকল শিক্ষকদের পদোন্নতি প্রাপ্যতার তারিখ (ডিউ ডেট) হতে আর্থিক সুবিধা থেকে বঞ্চিতকরণ, কর্মরত শিক্ষকদের শ্রান্তি বিনোদন ছুটি ও ভাতা প্রদানে অনিয়মতান্ত্রিকতা।
এছাড়াও শিক্ষকদের নিয়োগ/পদোন্নতির নিয়োগপত্রে চাকুরি নিশ্চিতকরনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা বর্হিভুত গবেষণা প্রকাশের শর্ত প্রদান, ইঞ্জিনিয়ারিং স্নাতকোত্তর (সান্ধ্যকালীন নয়) ডিগ্রী অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো ক্ষেত্রে বিবেচনা করা হবে না শর্ত প্রদান করা, সকল শিক্ষকদের ধারাবাহিকভাবে/ অধারাবাহিকভাবে শিক্ষাছুটি প্রদানে অনিয়মতান্ত্রিকতা, শিক্ষকদের অন্যান্য পাবলিক/ সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যায় সময়োপযোগী শিক্ষা উপকরন- ল্যাপটপ/ ডেক্সটপ, ডিজিটাল ডিভাইসসহ প্রয়োজনীয় দ্রব্যদির ব্যবস্থা না করা ও গত গত ২৪ নভেম্বর অনুষ্টিত “শেখ রাসেল জিমনেসিয়াম” উদ্বোধন অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রীর উপস্থিতিতে উপাচার্য কর্তৃক যবিপ্রবি উচ্চমানের গবেষকদের সংখ্যা নিয়ে ব্যিভান্তিকর তথ্য প্রদান করায় যবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির দ্বিতীয় সভায় এ সিদ্ধান্ত দেয় শিক্ষক সমিতি।
উচ্চ শিক্ষার মাধ্যমে আধুনিক জ্ঞান চর্চা ও গবেষণার সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে ২০০৭ সালের ২৫ জানুয়ারি যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের সাজিয়ালী মৌজায় ৩৫ একর জায়গা জুড়ে বিশ্ববিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। তবে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয় ২০০৮-০৯ শিক্ষাবর্ষে। যশোর শহরের ধর্মতলাস্থ ‘বৃষ্টি মহল’ নামের একটি ভাড়া বাড়িতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল প্রশাসনিক কার্যক্রম শুরু হয়। এ ভাড়া বাড়িতেই ২০০৯ সালে ২০০৮-০৯ শিক্ষাবর্ষে ‘কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল’, ‘পরিবেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি’, ‘অণুজীববিজ্ঞান’ এবং ‘ফিশারীজ অ্যান্ড মেরিন বায়োসায়েন্স’ বিভাগে ২০০ জন শিক্ষার্থীর ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়। ওই বছরের ১০ জুন ভর্তিকৃত ২০০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে মূল ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। পরবর্তীতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১০ সালের ২৭ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ক্যাম্পাসের শুভ উদ্বোধন করেন।
বর্তমানে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে সাতটি অনুষদের অধীনে ২৬টি বিভাগ রয়েছে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে স্নাতক, স্নাতকোত্তর, এমফিল ও পিএইচডি পর্যায়ে ৪ হাজার ১৭৫ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত আছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক ও প্রভাষকসহ মোট ২৭২ জন শিক্ষক, বিভিন্ন গ্রেডের ১১৪ জন কর্মকর্তা এবং ৩১৭ জন কর্মচারী কর্মরত আছেন যারা নিজেদের মেধা ও শ্রমের মাধ্যমে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি গবেষণা নির্ভর বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় গড়তে রাতদিন নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে সকাল ৯.৩০ ঘটিকায় জাতীয় পতাকা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলন করা হবে। ৯.৩৫ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্মদিন উপলক্ষে কেক কাটা ও তারপর বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করা হবে। বেলা ১২ ঘটিকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর সম্মেলন কক্ষে 'Research Contribution of JUST in the development of Bangladesh' শীর্ষক অনলাইন সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে।
বিগত বছরগুলোতে বেশ জাঁকজমক ও আনাড়ম্বরের সাথে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসটি উদযাপিত হতো। এ বছর করোনা মহামারীর কারনে সকল কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছে। বিগত বছরগুলোতে আনন্দ র্যালি, জন্মদিনের কেক কাটা, আলপনা উৎসব, আলোচনা সভা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তাবৃন্দ, আমন্ত্রিত শিল্পীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং কনসার্ট অনুষ্ঠিত হতো। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে সকল বিভাগের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হতো পিঠা মেলা।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]