‘বাংলাদেশ সাসটেইনেবল রিকভারি ইমার্জেন্সি প্রিপারেডনেস অ্যান্ড রেসপন্স প্রজেক্ট (বি-স্ট্রং) নামের প্রকল্পে দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)।
দুর্নীর প্রমাণ পাওয়ার পর মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁও এলজিইডির প্রধান কার্যালয়ে অভিযান চালিয়েছে দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম।
অভিযান শেষে দুদকের সহকারী পরিচালক পাপন কুমার সাহা বলেন, বি-স্ট্রং প্রকল্পের বিভিন্ন খাতে ব্যয় বেশি দেখানো হয়েছে। অভিযানে আমরা বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করি।
ভারতের বাঁধ উপচে এবং অতিবৃষ্টির কারণে ২০২৪ সালে ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়তে হয়েছে বাংলাদেশকে। এ অবস্থায় মানুষ ও সম্পদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে নিতে নেওয়া হচ্ছে একটি নতুন প্রকল্প। এটি বাস্তবায়নে বড় অঙ্কের ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। ‘বাংলাদেশ সাসটেইনেবল রিকভারি ইমার্জেন্সি প্রিপারেডনেস অ্যান্ড রেসপন্স প্রজেক্ট (বি-স্ট্রং) নামের এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ২ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ২৬০ কোটি এবং বৈদেশিক ঋণ থেকে ১ হাজার ৭৪০ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে।
২০২৪ সালের বন্যা পরবর্তী চট্টগ্রাম বিভাগের ছয় জেলা- ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর, চট্টগ্রাম ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জন্য নেওয়া ‘বি-স্ট্রং’ প্রকল্পের আওতায় বরাদ্দ করা হয় ১৯০৯ কোটি টাকা। ১৯০৯ কোটি টাকার এই প্রকল্পে বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন করবে ১৬৪৭ কোটি টাকা, বাকি টাকা বাংলাদেশ সরকার অর্থায়ন করবে। এই প্রকল্পের কার্যক্রম শুরুর আগেই প্রকল্পের বিভিন্ন জিনিসপত্রের অস্বাভাবিক দাম নির্ধারণ করার প্রমাণ পায় দুদক।
গত ২০ এপ্রিল প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন দেয়া হয়েছে জানিয়ে দুদকের সহকারী পরিচালক পাপন কুমার সাহা বলেন, প্রকল্পের এখনো আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়নি। তবে প্রকল্পের বিভিন্ন জিনিসপত্রের অতিরিক্ত দাম নির্ধারণের অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা অনুসন্ধানে আসি। এই প্রকল্পের ডিপিটি যিনি প্রস্তুত করেছেন, তিনি আজ কার্যালয় উপস্থিত ছিলেন না।
তিনি আরও বলেন, প্রকল্পের স্ট্রিট সোলার লাইট প্রতিটির দাম ধরা হয়েছে ৭২ হাজার টাকা। অথচ পরিকল্পনা কমিশন জানায়- এই সোলার লাইটের প্রয়োজন নেই। ৬০টি মোটরসাইকেলের প্রস্তাব করা হলে পরিকল্পনা কমিশন থেকে ৩৬টি কেনার কথা বলা হয়। কম্পিউটার, ল্যাপটপ ও বিভিন্ন শিক্ষা উপকরণসহ অন্যান্য যে ব্যয় দেখানো হয়েছে, তা অস্বাভাবিক মনে হয়েছে।৪টি ল্যাপটপের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১১ লাখ টাকা।
দুর্নীতির বিষয়ে এলজিআইডি প্রধান কার্যালয়ের অ্যাসিস্ট্যান্ট চিফ আবদুল মান্নান বলেন, আমাদের চিফ ইঞ্জিনিয়ার ঢাকার বাইরে আছেন।প্রকল্পটির কাজ এখনো শুরু হয়নি, কেবল একনেকে উপস্থাপন করা হয়েছে। আমাদের কোনো প্রকল্পে কোনো অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেলে সঙ্গে সঙ্গে তার বিরুদ্ধে অ্যাকশন (ব্যবস্থা) নেওয়া হয় এবং তাকে সাসপেন্ড (বরখাস্ত) করা হয়। যেখানে অনিয়ম হয়েছে, সেখানেই সাসপেন্ড করা হচ্ছে।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]