নারীদের ক্ষমতায়নে দক্ষিণ এশিয়ায় শীর্ষে বাংলাদেশ : প্রধানমন্ত্রী
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে বিশ্বনেতাদের পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার (২৮ নভেম্বর) ঢাকা সেনানিবাসে আন্তর্জাতিক নারী-শান্তি-নিরাপত্তা বিষয়ক সেমিনারে বক্তব্য রাখেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বাংলায় বলতে চাই, আমাদের দেশের মানুষজন যেন জানতে পারেন, এ দেশের নারীরা শান্তিরক্ষী মিশনে যারা আছেন তারা বিশাল ভূমিকা রেখে যাচ্ছেন। জাতিসংঘ দ্বারা পরিচালিত বিশ্বব্যাপী শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের সেনা, নৌ, বিমান এবং পুলিশ বাহিনীর নারী সদস্যরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে যাচ্ছেন।’
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের দেশের বিভিন্ন বাহিনীর নারী সদস্যরা শান্তিরক্ষা মিশনে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করছে; এজন্য তাদেরকে আমি শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। বাংলাদেশের মানুষ আমাদের শান্তিরক্ষী বাহিনীর জন্য গর্বিত।’
এ সময় তিনি ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট তার পরিবার-পরিজন হারানোর কথা তুলে ধরে দীর্ঘদিন পরবাসে থেকে দেশে ফিরে আসার কথা জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসার পর থেকে নারীদের উন্নয়নে তার সরকার কাজ করে যাচ্ছে। নারীদের ক্ষমতায়নে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সমতার শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ।
এসময় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে বিশ্ব নেতাদের পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যেকোনো সংঘাত সংলাপ, রাজনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হতে পারে। আমরা কোনো যুদ্ধ চাই না। আমরা চাই না কোনো মানুষ উদ্বাস্তু হোক। কারণ আমার সব অভিজ্ঞতা আছে। এসময় ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতির অভিজ্ঞতার কথা স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, এটা প্রশ্নাতীত, নারীরা সমাজের সবচেয়ে দুর্বল অংশ, বিশেষ করে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে। তারা বিভিন্ন ধরনের সহিংসতা, অপুষ্টি, অশিক্ষা এবং অন্যান্য মৌলিক চাহিদার শিকার। যেকোনো সংঘাত ও দুর্যোগে তাদের দুর্দশা বহু গুণ বেড়ে যায়। জাতিসংঘ নারী শান্তি ও নিরাপত্তা এজেন্ডা প্রতিষ্ঠা করেছে। সেই রেজুলেশন প্রণয়নে অংশ নিতে পেরে বাংলাদেশ গর্বিত।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ক্ষমতায়ন না হলে সমাজে নারীর অবস্থার উন্নতি হতো না। আমার সরকার নারী নীতি ২০১১ প্রণয়ন করেছি। নীতির অধীনে, আমরা মূলধারার আর্থ-সামাজিক কর্মকাণ্ডে নারীদের সার্বিক উন্নয়ন এবং সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে ও তাদের ক্ষমতায়নের সমস্ত প্রতিবন্ধকতা দূর করার ব্যবস্থা নিয়েছি।
তিনি বলেন, রাজনীতি, প্রশাসন, শিক্ষা, ব্যবসা, খেলাধুলা, সশস্ত্র বাহিনী ইত্যাদি খাতে নারীদের অংশগ্রহণ ও অবদান বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক দৃশ্যপটকে বদলে দিয়েছে।
সরকারপ্রধান বলেন, আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে নারীদের অধিকতর অংশগ্রহণের কারণে বাংলাদেশে জেন্ডার সমতাসহ সব ক্ষেত্রেই উন্নতি হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে লিঙ্গ সমতায় শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ।
এসময় নারীর কল্যাণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের রাষ্ট্র গঠনের শুরুতেই লিঙ্গ সমতার সারমর্ম সঠিকভাবে চিহ্নিত করেছিলেন। সমান সুযোগ দেওয়ার মাধ্যমে নারীদের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা ছাড়া আমরা জাতীয় উন্নয়নের কাঙ্ক্ষিত স্তরে যেতে পারব না।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)