ভারতের পশ্চিমবঙ্গে লোকসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলের দলীয় কোন্দল প্রকাশ্যে
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের আগেই তৃণমূল কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ অসন্তোষ প্রকাশ্যে এসেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের ভাই স্বপন (বাবুন) বন্দ্যোপাধ্যায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দেয়ার পরেই ভেতরের অসন্তোষ প্রকাশ্যে আসে।
আনন্দবাজার অনলাইনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হাওড়া থেকে তৃণমূলের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন বাবুন। কিন্তু এ আসনে তাকে মনোনয়ন না দিয়ে দেয়া হয়েছে ফুটবলার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
তৃণমূলের ভেতরের লোকেদের মুখে গুঞ্জন শোনা গেছে, বাবুন হাওড়ায় তৃণমূলের প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন তাই এখানকার ভোটারও হয়েছিলেন। মনোনয়ন না পাওয়ায় তিনি ‘চাপ’ তৈরি করছেন। এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে না পেরে মঙ্গলবার দিল্লি যান বাবুন।
বাবুন স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দেয়ার পরেই রাজনৈতিক মহলে ছড়িয়ে পড়ে বাবুন বিজেপিতে যোগ দিয়ে নির্বাচন করবেন।
তবে এসব কথায় পাত্তা না দিয়ে বুধবার সকালে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, বিজেপিতে যোগ দেয়ার কোনো প্রশ্নই নেই। দিদির দলেই থাকবেন। তবে লোকসভার একটি আসনে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়বেন।
বাবুনের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় মমতা বলেন, তার ও সমগ্র বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের সঙ্গে বাবুনের সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে গেল।
যা শুনে বাবুন ভোল পাল্টে বলেন, দিদি (মমতা) তার ‘অভিভাবক’। তিনি আবার দিদির কাছে ঠিক নিজের জায়গা করে নেবেন। সেটা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের ভেতরের বিষয়। কিন্তু তার চেয়েও বৃহত্তর পরিসরে ‘বার্তা’ দিয়েছেন মমতা।
আরামবাগ, কৃষ্ণনগর, বারাসত এবং শিলিগুড়ি— পশ্চিমবঙ্গে এসে সাম্প্রতিক চারটি সভাতেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে পরিবারতন্ত্রের অভিযোগ তুলেছিলেন ভারতের নরেন্দ্র মোদি। শিলিগুড়ির সভায় ‘ভাতিজা’ শব্দ ব্যবহার করে কটাক্ষ করেন তিনি।
ভাতিজা বলতে মোদি তৃণমূলের কাণ্ডারি তথা মমতার ভাতিজা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে বুঝিয়েছেন। তৃণমূলের পাশাপাশি কংগ্রেসকেও পরিবারতন্ত্রের বন্ধনে আবদ্ধ থাকা নিয়ে সমালোচনা করেন মোদি।
তিনি বলেছিলেন, ‘তৃণমূল ও কংগ্রেস পরিবারতন্ত্রের হয়ে কাজ করছে। তৃণমূল এক ভাতিজার জন্য সব কাজ করছে আর কংগ্রেস এক শাহি পরিবারের সদস্যকে ক্ষমতায় বসাতে কাজ করে চলেছে।’
শুধু মোদি নয়, বিজেপি এবং কংগ্রেসের রাজ্য নেতারাও মমতাকে প্রায়শই অভিষেকের প্রসঙ্গ টেনে ‘পরিবারতন্ত্র’ নিয়ে আক্রমণ করেন।
এদিকে আবার বারাকপুরের তৃণমূলের বর্তমান সংসদ সদস্য অর্জুন সিং দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে ‘বিদ্রোহী’ হয়েছেন। তাকে মনোনয়ন না দেয়ায় সমর্থকেরা প্রার্থী তালিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। শুধু তাই নয়, অর্জুন সিংয়ের দপ্তর থেকে মমতা ও তার ভাতিজা অভিষেকের ছবি নামিয়ে বসানো হয়েছে প্রধানমন্ত্রী মোদির ছবি।
অর্জুন সিং বলেছেন, এখন মানুষের আবেগ মোদিজির পক্ষে।
এছাড়া তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবির, অভিনেত্রী সায়ন্তিকা, বর্ধমানের সংসদ সদস্য সুনীল কুমার মন্ডল মনোনয়ন না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে দলের প্রতি কার্যত বিদ্রোহ করে বসেছেন।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)