সাত মাস বন্ধ থাকার পর সবুজে সবুজে ভরে উঠেছে সুন্দরবন


করোনার কারণে সাত মাস বন্ধ থাকার পর সবুজে সবুজে ভরে উঠেছে সুন্দরবন। দেখা মিলছে পশু-পাখির। আম্পানের ক্ষতি কাটিয়ে সুন্দরী, গেওয়া, গরানের বনে এখন সবুজের সমারোহ। বিচরণ বেড়েছে হরিণ, ডলফিনসহ বন্য প্রাণির।
পশ্চিম সুন্দরবনের মুন্সীগঞ্জ, কলাগাছিয়া, কটকা, হিরোনপয়েন্ট, হাড়বাড়িয়া, আন্ধারমানিকসহ বিভিন্ন এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত গাছগুলো দীর্ঘ বিশ্রামে যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে।
সুন্দরবনে জীবিকা আহরণকারী জেলে-বাওয়ালী মৌয়ালরা বলছেন, আগের তুলনায় বনে পশুপাখি অনেক বেশি চোখে পড়ছে। খোলপেটুয়া নদীতে ঝাঁকে ঝাঁকে ডলফিনের দেখা মিলছে। যেটি কখনও কল্পনাও করা যায়নি। এমনকি নদী-খালে মিলছে চিংড়ি, দাতিনা, ভোলা, পারশেসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। সাত মাস পর্যটক শূন্য থাকায় প্রকৃতি নিজের মত গুছিয়ে নিতে পেরেছে।
সুন্দরবন সংলগ্ন শ্যামনগরের গাবুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান জানান, এ অঞ্চলের অনেক মানুষের জীবন পর্যটক নির্ভর। ব্যবসা বাণিজ্য বা ট্রলার ভাড়া দিয়ে চলে অনেকের জীবিকা। সেটি করোনাকালে স্থবির হয়ে পড়েছিল। দৃশ্যমান কোনো পরিবর্তন চোখে না পড়লেও সুন্দরবনে জলদস্যু-বনদস্যুর আনোগোনা অনেকটা কম দেখা যাচ্ছে।
গত ২০ মে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাতে পশ্চিম সুন্দরবনের প্রায় সাড়ে ১২ হাজার সুন্দরী, গেওয়া, গরানসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ক্ষতিগ্রস্ত গাছগুলো নতুনভাবে বেড়ে উঠেছে। ক্ষত কাটিয়ে অনেকটা স্বাভাবিক করে তুলেছে সুন্দরবনকে।
সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক এম এ হাসান বলেন, ২৯ মার্চ থেকে ১ নভেম্বর করোনার কারণে সুন্দরবনে পর্যটক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ছিল। দীর্ঘ সাত মাস পর্যটক বন্ধ থাকায় স্বাভাবিকভাবে মাছ, পাখি, ডলফিন, হরিণের আনাগোনা অনেক বেড়েছে। প্রাণিকুল নীরব পরিবেশ পছন্দ করে। নীরব পরিবেশ পেয়ে স্বাভাবিকভাবেই তারা নিজেদের মত করে বেড়ে উঠেছে। দীর্ঘ সময় পর্যটক না যাওয়ায় দূষণ থেকে নদীও রক্ষা পেয়েছে।
তিনি বলেন, পর্যটকরা নদীতে পানির বোতল, ওয়ান টাইম প্লেট, খাবারের উচ্ছিষ্ট ফেলে। সেগুলো থেকে পরিবেশ নষ্ট করে। দীর্ঘদিন পর্যটক নিষিদ্ধ থাকায় এসব থেকে রক্ষা পেয়েছে পরিবেশ। এখন সুন্দরবনের মধ্যে ছোট ছোট নদীতেও ঝাঁকে ঝাঁকে ডলফিনের দেখা মিলছে। সবমিলিয়ে এক মনোরম পরিবেশ তৈরি হয়েছে সুন্দরবনে।

কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
