নড়াইলে ধানের চেয়ে খড়ের কদর বেড়েছে খড় বেচেই উঠছে খরচ
নড়াইলে ধানের চেয়ে খড়ের কদর বেড়েছে খড় বেচেই উঠছে খরচl খড় বিক্রেতা মো. নুর মিয়া দাঁড়িয়ে আছেন তাঁর খড়ের দোকানে। নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলায় এ বছর খড়ের দাম ভালো। খড়ের এক আঁটি ২৫ থেকে ৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এক বিঘা জমির খড় বিক্রি করে তাঁরা আয় করছেন ৮-৯ হাজার টাকা। যা থেকেই উঠে আসছে ধান চাষের খরচ। এতে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন কৃষকেরা।
উপজেলার মরিচ পাশা গ্রামের কৃষক মহব্বত হোসেন বলেন, এক বিঘা জমি থেকে খড় পাওয়া যায় ৩০০ থেকে ৩৫০ আঁটি। যার মূল্য প্রায় ৮-৯ হাজার টাকা। এই খড় বিক্রি করেই আমাদের ধান চাষের খরচের টাকা উঠে আসছে। তাই এখন ধানের চেয়ে খড়ের কদর বেড়েছে মহব্বত হোসেন আরও বলেন, ‘অথচ কয়েক বছর আগে অনেককে খড় বিনা মূল্যে দিয়েছিলাম। এখন খড় কেউ আর বিনা মূল্যে দিতে রাজি না। খড়ের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমরা ধান চাষে লাভবান হচ্ছি।
উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, উপজেলায় চলতি মৌসুমে এবার ১১ হাজার ৪০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ হয়েছে।
উপজেলার নাওরা গ্রামের কৃষক মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এ বছর ৬ বিঘা জমি থেকে প্রায় ২ হাজার খড়ের আঁটি পেয়েছি। ২টি গরুর জন্য ১ হাজার আঁটি রেখে দিয়ে বাকি ১ হাজার আঁটি প্রতি পিচ ২৫ টাকা দরে বিক্রি করেছি। খড়ের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমরা ধান চাষে লাভবান হচ্ছি।’
উপজেলার বাবরা গ্রামের কৃষক মো. আনিচুর রহমান বলেন, ‘ধান চাষ করে তেমন লাভ না হলেও খড়ের দাম বেড়ে যাওয়ায় খুশি। খড়ের দাম বেড়ে যাওয়ায় ধান চাষে আগ্রহ বেড়েছে। এ বছর ৫ বিঘা জমির খড় বিক্রি করে পেয়েছি ৫০ হাজার টাকার মতো। আমার কাছে এখন খড়ের কদর অনেক বেশি।’
উপজেলার লক্ষ্মীপাশা মারকাজুল মসজিদের সামনে খড় বিক্রেতা মো. নুর মিয়া বলেন, ‘আমি কৃষকের নিকট থেকে প্রতি আঁটি খড় ৩২ টাকায় ক্রয় করে তা আমি গরুর খামারির কাছে প্রতি আঁটি খড় ৩৫ টাকায় বিক্রয় করে থাকি।’
উপজেলার মরিচ পাশা গ্রামের গরু পালনকারী মো. বাহার মোল্লা বলেন, ‘খড়ের দাম বেড়ে যাওয়ায় হতাশ। বাজারে গো-খাদ্যের দাম অনেক বেশি। আমার ৭টি গাভি আছে। প্রতিদিন ৫৫-৬০টি আঁটি খড় লাগে।
উপজেলার কাউড়িখোলা গ্রামের কৃষক বিপুল গাইন বলেন, ‘প্রায় এক বিঘা জমি থেকে ৪০০টি খড়ের আঁটি পেয়েছি। ৪টি গাভি আছে। বাকি খড় ক্রয় করে প্রায় ৩ হাজার খড়ের আঁটি মজুত রেখেছি। আগের চেয়ে গরু ও দুধের দামও বেড়েছে।’
লোহাগড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রইচউদ্দিন বলেন, ‘কৃষকেরা এখন ধানের খড়ের প্রতি খুবই যত্নশীল হয়েছেন। অনেকে খড় বিক্রি করেই ধান চাষের খরচ তুলছেন। এখন তারা ধান চাষে আরও বেশি আগ্রহী হচ্ছেন।’
লোহাগড়া উপজেলার প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. জিন্নু রাইন বলেন, উপজেলায় গরু রয়েছে ৬০ থেকে ৬৫ হাজার। প্রতিটি গরুকে গড়ে প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ আঁটি খড় খাবার হিসেবে দিতে হয়। বিশেষ করে দুধেল গাভির জন্য খড় খুবই উপকারী। এ জন্য কৃষকেরা বাজার থেকে কেনা গো-খাদ্যের চেয়ে ধানের খড়কে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)