বেফাঁস মন্তব্যেই দিল্লি গন্তব্য আটকে গেল পররাষ্ট্রমন্ত্রীর!
চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিল্লিতে গিয়ে পৌঁছেছেন। তবে যাওয়ার আগে তার সফরসঙ্গী হতে পারেননি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। সরকারি এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা ইউএনবির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘তিনি (পররাষ্ট্রমন্ত্রী) অসুস্থ বোধ করায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সফরে যাচ্ছেন না।’
এর আগে গত ১৮ আগস্ট একটি অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন বলেছিলেন, ‘আমি ভারতে গিয়ে বলেছি, শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখতে হবে। শেখ হাসিনা আমাদের আদর্শ। তাকে টিকিয়ে রাখতে পারলে আমাদের দেশ উন্নয়নের দিকে যাবে এবং সত্যিকারের সাম্প্রদায়িকতামুক্ত, অসাম্প্রদায়িক একটা দেশ হবে।’
‘শেখ হাসিনার সরকার টিকিয়ে রাখার জন্য যা যা করা দরকার, আমি ভারতবর্ষের সরকারকে সেটা করতে অনুরোধ করেছি।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই মন্তব্য নিয়ে আলোচনার ঝড় ওঠে।
পরে এক প্রতিক্রিয়ায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেছিলেন, তার বক্তব্যকে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের দুই দিন পর আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, ‘পররাষ্ট্রমন্ত্রী আওয়ামী লীগের কেউ নন।’
এদিকে আজ তিন বছর পর চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ভারতের রাজধানী দিল্লিতে গেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
স্থানীয় সময় দুপুর ১২টায় তাকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ভিভিআইপি ফ্লাইটটি দিল্লির ইন্দির গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়।
সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর)এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় বার্তাসংস্থা এএনআই।
প্রধানমন্ত্রীর চারদিনের এই রাষ্ট্রীয় সফরে ব্যবসা-বাণিজ্য, জ্বালানি, অভিন্ন নদ-নদীর পানি বণ্টন ও রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে সহযোগিতা আলোচ্যসূচির শীর্ষে থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। এছাড়া সফরের এজেন্ডার শীর্ষে উভয় দেশের প্রতিরক্ষা সহযোগিতা আরও উন্নত করা, আঞ্চলিক সংযোগের উদ্যোগ সম্প্রসারণ এবং দক্ষিণ এশিয়ায় স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা করার বিষয়টিও রয়েছে বলে জানিয়েছে এএনআই।
বার্তাসংস্থাটি বলছে, করোনা মহামারি শুরুর পর এবারই প্রথম ভারত সফর করছেন শেখ হাসিনা। সফরকালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ভারতের প্রেসিডেন্ট দ্রৌপদী মুর্মু এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে দেখা করবেন। এছাড়া ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গেও দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন তিনি।
এর পাশাপাশি ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। সফরের সময় শেখ হাসিনার আজমীর শরীফ সফরেরও সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া আগামী ৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায় ফেরার আগে রাজস্থনের খাজা গরীব নওয়াজ দরগাহ শরীফ, আজমীর (আজমির শরীফ) এবং সোমবার ভারত সফরের প্রথম দিনে দিল্লিতে নিজামুদ্দিন আউলিয়া দরগাহ পরিদর্শন করবেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে রয়েছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী, বাণিজ্যমন্ত্রী, রেলপথমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা এবং বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রীসহ মোট ১৭১ জন।
প্রধানমন্ত্রীর এ সফর ঘিরে ঢাকার মতো বিপুল প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে দিল্লিতেও। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পরবর্তী বিশ্ব পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক, সামরিক, অর্থনৈতিক স্বার্থ ও বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেখ হাসিনার এ সফরকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)