জমে উঠেছে সাতক্ষীরার পৌর নির্বাচন: কে হবেন পৌর পিতা!
আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি সাতক্ষীরা পৌরসভা নির্বাচনে কে হতে পারে সাতক্ষীরার পৌর পিতা। সর্বস্তরে এনিয়ে চলছে নানান জল্পনা-কল্পনা। কিন্তু সাধারণ জনগণ কি চায়?
সাধারণ জনগণ শান্তি চায়, চায় উন্নয়ন। তারা চায় না জলবদ্ধতা, চায় না হাটু পানিতে চলতে ফিরতে, ড্রেনের দূষিত ময়লা- আবর্জনা রাস্তার উপর এবং বাড়ির উঠান ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকবে এটাও তারা চায় না। সুপেয় পানির জন্য রাস্তায় দাঁড়িয়ে মানববন্ধন আর করতে চায় না। তারা চায়, নাগরিক সেবা সমূহের সঠিক অধিকার। এখনই সুযোগ, সময় এসেছে যোগ্য প্রার্থীকে বেছে নেওয়ার। কিন্তু নাগরিকদের সঠিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে পারবে সেটি নির্ধারণ করবে সাতক্ষীরা পৌরবাসী।
বিগত ২০১৫ সালের সাতক্ষীরা পৌরসভা নির্বাচন মোট ৭৯ হাজার ৬ হাজার ৩৪ জন ভোটারের মধ্যে ৫১ হাজার ৬শ ২০ জন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। নির্বাচন বিএনপি’র প্রার্থী (ধানের শীষ প্রতীক) তাজকিন আহমেদ চিশতি ১৬ হাজার ৪শ ৭০ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি জাতীয় পার্টির (লাঙ্গল প্রতীক) প্রার্থী মো. আজহার হোসেন পেয়েছিলেন ১২ হাজার ৮শ ৭৩ ভোট। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী নাছিম ফারুক খান মিঠু ১২ হাজার ৫শ ৩২ ভোট পেয়ে ৩য় অবস্থানে ছিলেন এবং আওয়ামীলীগের (নৌকা প্রতীক) নিয়ে মো. সাহাদাৎ হোসেন ৯ হাজার ৭২ ভোট পেয়েছিলেন।
২০২১ সালে সাতক্ষীরা পৌরসভা নির্বাচনে মোট ভোটার ৮৯ হাজার ২২৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৪৩ হাজার ৪১৮ জন ও নারী ভোটার ৪৫ হাজার ৮০৬ জন। মেয়র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী শেখ নাসেরুল হক, বিএনপি’র মনোনীত প্রার্থী তাজকিন আহমেদ চিশতি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী ডা. এস.এম মুসতাফীজ উর রউফ এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নাছিম ফারুক খান মিঠু ও মো. নুরুল হুদা। এছাড়া সাতক্ষীরা পৌরসভার ৯ টি ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী হিসেবে মোট ৭৫ জন প্রার্থী তাদের মোনানয়ন পত্র দাখিল করেছেন।
আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি সাতক্ষীরা পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ইভিএম পদ্ধতিতে। নির্বাচনের দিনের অগ্রিম বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ৮৯ হাজার ২২৪ জন ভোটারের মধ্যে ৬৫ থেকে ৭০ হাজার ভোটার ভোট প্রদান করবে বলে ধারনা করা যাচ্ছে। ৫ জন মেয়র প্রার্থীর মধ্যে ভোট যদি সমবণ্ঠন করা হয় তাহলে প্রত্যক ১৩ থেকে ১৪ হাজার ভোট পেতে পারেন।
উল্লেখ্য, এবছর জাতীয় পার্টির পক্ষে কোন প্রার্থী না থাকায় বিপুল একটি ভোটের অংশ যে কোন একজন প্রার্থীকে সমর্থন করতে পারে। এনিয়েও চলছে ধোয়াশা।
বিগত ২০১৫ সালের সাতক্ষীরা পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপি’র মনোনীত প্রার্থী তাজকিন আহমেদ চিশতি বিজয়ী হয়েছিলেন এবং ৫ বছর সাতক্ষীরা পৌরসভার উন্নয়নে কাজ করেছেন। এবারও বিএনপি থেকে তিনিও মনোনয়ন পেয়েছেন। বিগত ৫ বছর জনসাধারণের সাথে সম্পর্কের উপর নির্ভর করছে তার এবারের সফলতা।
এদিকে আওয়ামীলীগের প্রার্থী হিসেবে গত নির্বাচন প্রার্থী ছিলেন মো. সাহাদাৎ হোসেন। এবছর কেন্দ্রীয়ভাবে আওয়ামীলীগের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন শেখ নাসেরুল হক। যিনি সাতক্ষীরা পৌরসভার সাবেক সফল চেয়ারম্যান মরহুম শেখ আশরাফুল হকের পুত্র। শেখ নাসেরুল হক সৎ এবং নিষ্ঠাবান হিসেবে সর্বস্তরের মানুষের কাছে পরিচিত।
আবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নাছিম ফারুক খান মিঠু গত নির্বাচনে বিজয়ী মেয়র প্রার্থী তাজকিন আহমেদ চিশতির থেকে ৩ হাজার ৯শ ৩৮ ভোটের ব্যবধানে ৩য় অবস্থানে ছিলেন। কিন্তু বর্তমান তার অবস্থান পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, বিগত দিনগুলোতে তিনি সাতক্ষীরার মানুষের সাথেই ছিলেন। সর্বস্তরের মানুষের সাথে নাছিম ফারুক খান মিঠুর আচরণই নির্ধারণ করবে এ নির্বাচনে তার ফলাফল।
অন্যদিক থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন মো. নুরুল হুদা। সাতক্ষীরাবাসীর জন্য এযাবত কি কাজ করেছেন তা জণগণই জানেন। সাতক্ষীরা ও পৌরবাসীর জন্য মো. নুরুল হুদার পুর্বের কর্মকান্ডের উপরই আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি নিধার্রণ হবে তার ফলাফল।
সর্বশেষ ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী ডা. এস এম মুসতাফীজ উর রউফ। দলীয় প্রতীক হাতপাখা নিয়ে তিনি লড়েছেন সাতক্ষীরা পৌরসভা নির্বাচন। সাধারণ মানুষ ও সাতক্ষীরা পৌরসভাকে তিনি কি উপহার দিবেন তার উপরই নির্ভর করছেন নির্বাচনী ফলাফল।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)