বাংলাদেশে গরু পাচারকাণ্ডে বিএসএফের ৪ কর্মকর্তাকে তলব


সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে গরু পাচারকাণ্ডে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) ৪ কর্মকর্তাকে তলব করেছে দেশটির কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা (সিবিআই)।
বাহিনীটির এক ডিআইজি, দুই অ্যাসিট্যান্ট কমাড্যান্টসহ ৪ জনকে চলতি সপ্তাহের মধ্যে নিজাম প্যালেসে সিবিআই দফতরে হাজির হতে বলা হয়েছে।
গরু পাচারকাণ্ডে আরও তথ্য পেতে গোয়েন্দারা তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করবেন বলে সোমবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে কলকাতার দৈনিক আনন্দবাজার।
গত সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশে গরু পাচারকারী চক্রের সন্ধানে নেমে তাতে বিএসএফ কর্মকর্তাদের সংশ্লিষ্টতা পায় সিবিআই। পাশাপাশি এই চোরাকারবারে রাজনীতিকদেরও জড়িত থাকার বিষয়টি অনুসন্ধানে উঠে আসায় তা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে তুলকালাম শুরু হয়।
প্রাথমিক অনুসন্ধানের পর ওই সময় সিবিআই জানিয়েছিল, বিএসএফের অন্তত ৬ জন পদস্থ কর্মকর্তা এবং কয়েকজন শুল্ক কর্মকর্তা মোটা মাসোহারা পেতেন পাচারকারী চক্রের কাছ থেকে।
এরপর গত ১৭ নভেম্বর গরু পাচার মামলায় বিএসএফ কমাড্যান্ট সতীশকুমারকে গ্রেফতার করেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের সীমান্তে গরু পাচার সিন্ডিকেটে আরও কয়েকজন বিএসএফ কর্মকর্তার সরাসরি যুক্ত থাকার তথ্য পাওয়া যায়।
সম্প্রতি এ বিষয়ে বিএসএফের পক্ষে বেশ কিছু নথিপত্রও তুলে দেয়া হয় সিবিআইয়ের হাতে। এরপরই তাদেরকে তলব করা হলো।
সিবিআই সূত্রের বরাতে আনন্দবাজার পত্রিকা জানায়, ২০১৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১৭- এর এপ্রিল পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে বিএসএফের ৩৬ নম্বর ব্যাটালিয়নের কমান্ডান্ট ছিলেন সতীশ। ওই ১৬ মাসে তার বাহিনী মালদহ ও মুর্শিদাবাদ জেলায় বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে প্রায় ২০ হাজার গরু বাজেয়াপ্ত করেছিল।
কিন্তু সেই বাজেয়াপ্ত গরুকেই সরকারি খাতায় বাছুর হিসেবে দেখানো হয়েছিল। গরুর যা দাম, তার চেয়ে কম দামে সেগুলো স্থানীয় বাজারে নিলাম করা হতো। সেখান থেকে বাছুরের দামে গরু কিনে নিত পাচারকারীরা।
আর এই পাচারচক্রের হোতা ছিলেন এনামুল হক। তার তত্ত্বাবধানে নিলামে কেনা ওই গরু আবার বাংলাদেশে পাচার হয়ে যেত। গরুকে বাছুর বানিয়ে দেয়া বিএসএফ এবং কাস্টমস কর্মকর্তাদের সঙ্গে সংযোগ ছিল তার। মোটা টাকা দিয়ে তাদের পুষিয়ে দিতেন তিনি।
সিবিআই আগে এনামুলকে গ্রেফতার করলেও, তিনি জামিন ছাড়া পেয়ে যান। ফের তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে তলব করা হয়েছিল। কিন্তু করোনার কারণ দেখিয়ে এনামুল হাজিরা এড়িয়ে যান।
এরপর তাকে নিজেদের কব্জায় পেতে মরিয়া হয়ে ওঠেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে আসানসোলের সিবিআই আদালতে এনামুল আত্মসমর্পণ করেন।

কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
