বৃহস্পতিবার, ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২৫

কলারোয়া নিউজ

প্রধান ম্যেনু

সাতক্ষীরা, দেশ ও বিশ্বের সকল সংবাদ, সবার আগে

‘বাচ্চু মাঝি’ রহস্য: সাহেদকে ভারতে পালাতে সহায়তাকারী বাচ্চু মাঝি কে?

করোনা ভাইরাসের ভুয়া টেস্ট ও জাল সনদ প্রদানের ঘটনায় দেশব্যাপী বহুল আলোচিত সমালোচিত মহাপ্রতারক ৬০ মামলার আসামী রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক মো. সাহেদ ওরফে সাহেদ করিমকে দেবহাটার শাঁখরা কোমরপুর সীমান্ত থেকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তারের পর তাকে ভারতে পালাতে সহযোগীতাকারী হিসেবে যে নামটি ব্যাপকভাবে আলোচনায় এবং র‌্যাবের মামলার পলাতক আসামীর তালিকায় উঠে এসেছে সেটি হলো কথিত ‘বাচ্চু মাঝি’।

মূলত র‌্যাবের অভিযানে যে নৌকাটিতে করে পালানোর প্রাক্কালে মহাপ্রতারক সাহেদ করিম ভারতে পালানোর চেষ্টা করছিলেন বলে র‌্যাব সদস্যরা জানিয়েছে, সেই নৌকারও মালিক সনৎ কুমার মন্ডল ওরফে বাচ্চু খোঁড়া ওরফে বাচ্চু মাঝি। তিনি দেবহাটা উপজেলার পারুলিয়া ইউনিয়নের শাঁখরা কোমরপুর গ্রামের দূর্গা মন্দিরের পাশ্ববর্তী এলাকার মৃত অশ্বিনী মন্ডল ও শতবালা পাড়ুই দম্পতির ছেলে।

স্বাধীনতা যুদ্ধেরপর বাল্যকালে পাক বাহিনীর পুতে রাখা মাইন কুড়িয়ে পেয়ে খেলা করার সময় তা বিষ্ফোরণে সনৎ কুমার মন্ডল ওরফে বাচ্চুর বাম পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। সেই থেকে এলাকার মানুষ তাকে বাচ্চু খোঁড়া নামেই ডাকতেন। একটি পা না থাকায় বিয়ের পর স্ত্রী সাবিত্রী মন্ডলকে সাথে নিয়ে সীমান্তবর্তী ইছামতি নদীর সাথে সংযুক্ত শাখা নদী শাঁখরার লাবণ্যবতীতে নৌকায় করে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতেন তিনি। এরপর থেকে ওই এলাকায় তিনি পরিচিত হয়ে ওঠেন বাচ্চু মাঝি নামেই।

২০১৯ সালের অক্টেবর মাসে হার্টস্ট্রোক হলে তার পরিবারের পক্ষ থেকে চিকিৎসার জন্য বাচ্চু মাঝি ওরফে সনৎ কুমার মন্ডলকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অতিদরিদ্র হওয়ায় বাচ্চু মাঝির পূর্ণ চিকিৎসার ভার বহন করতে পারেনি তার পরিবার। একপর্যায়ে চিকিৎসারত অবস্থায় বাড়িতে আনার পর ২৭ অক্টোবর মারা যায় বাচ্চু মাঝি। বাচ্চু মাঝির মৃত্যু সনদেও নিশ্চিত হয়েছে বিষয়টি।

বাবার মৃত্যুর পর পরিবার পরিজন নিয়ে সংসার চালাতে বাচ্চু মাঝির রেখে যাওয়া একমাত্র সম্বল সেই নৌকাটির মালিক হন ছেলে সুব্রত মন্ডল। বাবার নৌকাতেই এ যাবৎ লাবণ্যবতীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করছে সে। বাকি সময়ে এলাকার বিভিন্ন মানুষের ঘেরে জাল টেনে মাছ ধরার কাজও করে সুব্রত।

তবে যে নৌকাটিতে করে মহাপ্রতারক সাহেদ ভারতে পালানোর চেষ্টা করছিলো বলে র‌্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হচ্ছে সেটি ওই মৃত বাচ্চু মাঝি ওরফে সনৎ কুমার মন্ডলের। যা এখন পরিচালনা করেন সুব্রত মন্ডল।

বুধবার (১৫ জুন) ভোরে শাঁখরা কোমরপুর সীমান্তের লাবণ্যবতীর তীরে অভিযান চালিয়ে দেশব্যাপী আলোচিত রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক ও রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মহাপ্রতারক সাহেদকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করে এলিট ফোর্স র‌্যাব।
মূলত যে স্থান থেকে সাহেদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিলো তার বিপরীতে নদীর অপর পাড়ের বাঁধা ছিলো সুব্রত মন্ডলের নৌকাটি। তবে র‌্যাবের অভিযানের আগেই প্রতিদিনের মতো নৌকাটি লাবণ্যবতীর পাড়ে বেঁধে রেখে অন্যের ঘেরে জাল টেনে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন বলে দাবী বাচ্চু মাঝি ওরফে সনৎ কুমার মন্ডলের ছেলে সুব্রত মন্ডলের।

এদিকে, প্রতারক সাহেদকে গ্রেপ্তারের পর বুধবার রাতেই মহাপ্রতারক সাহেদকে প্রধান আসামীসহ জনৈক বাচ্চু মাঝি নামের একজনকে পলাতক আসামী ও অজ্ঞাত অপর আরেক ব্যক্তিকে আসামী করে খুলনা র‌্যাব-৬ এর সাতক্ষীরা সিপিস-১ এর ডিএডি নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে ১৯৭৮ সালের আর্মস এ্যাক্টের ১৯ (এ) তৎসহ ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫ এর বি (এ) ধারায় দেবহাটা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার নং- ০৫।

র‌্যাবের দায়েরকৃত ওই মামলায় মহাপ্রতারক সাহেদ করিমের সাতক্ষীরা ও ঢাকার ঠিকানা সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ। বাচ্চু মাঝির পিতার নাম, থানা ও জেলা অজ্ঞাত।

শাঁখরা কোমরপুরের বাচ্চু মাঝি ওরফে সনৎ কুমার মন্ডলের ৯ মাস আগে মৃত্যুর খবরটি ছড়িয়ে পড়লে নতুন করে আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে পরিণত ‘বাচ্চু মাঝি’ নামটি।

চাঞ্চল্যকর এ মামলার তদন্ত ও অনুসন্ধানে মারা যাওয়া ওই বাচ্চু মাঝি ওরফে সনৎ কুমার মন্ডল ছাড়াও আরও দু’জন বাচ্চু’র অস্তিত্ব পেয়েছে পুলিশ। যাদের মধ্যে একজন বাচ্চু নিকারী বা বাচ্চু দালাল নামে পরিচিত। তার বাড়ি বাংলাদেশের কোমরপুর ও হাড়দ্দাহ সীমান্তের বিপরীতে ভারতের ২৪ পরগনার সোলাদানা মাঠের পাশে। তার পিতার নাম রাজ্জাক নিকারী। সেখানে জিকে ব্রিকস নামের একটি ইটভাটাও ছিল তার। আর কয়েক বছর আগেও সীমান্ত দিয়ে মানব পাচার ও চোরাচালানের অন্যতম নিয়ন্ত্রক ছিলেন তিনি। শাখরা গ্রামের ইব্রাহিম গাজী ওই বাচ্চু নিকারী ওরফে বাচ্চু দালালের জামাতা। বর্তমানে সেও থাকে শ্বশুরবাড়ি ভারতের সোলাদানাতে।
অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, দেবহাটা ও সাতক্ষীরার কতিপয়দের সাথেও বাচ্চু দালালের রয়েছে অতি ঘনিষ্ট সম্পর্ক। তার সাথে সখ্যতা থাকা এসব বড়মাপের ব্যক্তিদের অধিকাংশরই বাড়ি সাতক্ষীরা শহরে। ফলে সাহেদকে ভারতে পাঠানোর জন্য ভারতের ওই বাচ্চু নিকারী ওরফে বাচ্চু দালালের সাথে যোগাযোগ স্থাপনে সাতক্ষীরার সেসব ব্যক্তিদের যোগসূত্র থাকাটা অসম্ভব কিছু নয়।

এছাড়া অপর বাচ্চুর বিষয়ে এখনও তথ্যানুসন্ধান করছে পুলিশ।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দেবহাটা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) উজ্জ্বল কুমার মৈত্র জানান, বাচ্চু মাঝির রহস্য উদঘাটনে এ পর্যন্ত তিনজন বাচ্চুর সন্ধান মিলেছে। যাদের একজন শাঁখরার সনৎ কুমার মন্ডল ওরফে বাচ্চু মাঝি। তিনি মারা গেছেন বলে ইতোমধ্যেই আমরা জানতে পেরেছি। অপরজন ভারতের সোলাদানার বাচ্চু নিকারী ওরফে বাচ্চু দালাল এবং অপরজনের বিষয়ে এখনো অনুসন্ধান চলছে। মূলত তিনজন বাচ্চুর বিষয়টি মাথায় রেখে তদন্ত কার্যক্রম চলছে। তবে ভারতের সোলাদানায় থাকা বাচ্চু দালালের সম্পৃক্ততার বিষয়টি অধিক গুরুত্বের সাথে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
অন্যদিকে, ডিবি পুলিশের রিমান্ড শেষে প্রতারক সাহেদকে দেবহাটা থানায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে আনা হবে। আমাদের তদন্ত এবং তাকে জিজ্ঞাসাবাদে নেয়ার পর বাচ্চু মাঝির আসল রহস্য উদঘাটিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানান মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।
সৌজন্যে: পত্রদূত।

একই রকম সংবাদ সমূহ

অবশেষে এক্সকেভেটর দিয়ে ভাঙ্গা হলো ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ি

ক্রেন দিয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি ভাঙার চেষ্টাবিস্তারিত পড়ুন

রাজধানীর ধানমন্ডির হাসিনার বাসভবন সুধা সদনেও আগুন

রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকার ৫ নম্বর সড়কে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার বাসভবনবিস্তারিত পড়ুন

৩২ নম্বরের বাড়ির দরজা-ইট খুলে নিয়ে গেলো ছাত্র-জনতা

রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘরে বিক্ষোভ করছে বিক্ষুব্ধবিস্তারিত পড়ুন

  • ‘থাকবে না ৩২, থাকবে না ৩২’
  • ঘোষণা দিয়ে ধানমন্ডি-৩২ ভাঙচুর-আগুন দিলো ছাত্র-জনতা
  • রাজধানীর ধানমন্ডি-৩২ নম্বরে ভাঙচুর ছাত্র-জনতার
  • আমরা কী করলাম সেটি ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বিচার করবে: প্রধান উপদেষ্টা
  • শেখ হাসিনা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালালে ভারতকেই দায় নিতে হবে: উপদেষ্টা নাহিদ
  • যেকোনো মূল্যে স্বৈরাচারের বিচার করতে হবে: তারেক রহমান
  • রমজানে লোডশেডিংমুক্ত রাখার টার্গেট: জ্বালানি উপদেষ্টা
  • আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের নিজস্ব প্রতিষ্ঠানের মাঠ ব্যবহারের পরামর্শ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার
  • সরকারি চাকরিজীবীদের ৫ শতাংশ হারে বেতন বৃদ্ধির সুপারিশ
  • রাষ্ট্রপতির ক্ষমা করার ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণের প্রস্তাব
  • ডিসি ও ইউএনওর নাম পরিবর্তনের সুপারিশ
  • শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলা: ফাঁসির ৯ জনসহ সব আসামি খালাস