যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্কের চার্চ এখন ‘পোর্ট ওয়াশিংটন মসজিদ’
যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন সময় অনেক অচলবস্থায় পড়ে থাকা চার্চ ক্রয় করে মসজিদ ও ইসলামিক সেন্টার তৈরীর কথা শোনা যায়। বাঙালী কম্যুনিটির কিছু খোদাভীরু মানুষের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় লংআইল্যান্ডের নাসাউ কাউন্টির পোর্ট ওয়াশিংটনে ১১৮ হারবার রোডে একটি চার্চ ক্রয় করে মসজিদ ও ইসলামিক সেন্টারে রূপান্তরিত হয়েছে।
জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের ইমাম ও খতিব মওলানা মির্জা আবু জাফর বেগ, ইমাম ও হাফেজ রফিকুল ইসলাম, মফিতি আব্দুল মালেক এবং বিশিষ্ট কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট ও ব্যবসায়ী আসেফ বারী টুটুল-এর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় মহতী উদ্যোগটি আল্লাহর রহমতে সফল্যের মুখ দেখেছে। এই মসজিদটির নাম করণ করা হয়েছে ‘পোর্ট ওয়াশিংটন মসজিদ ইন্ক’। উল্লেখ্য, মসজিদের প্রপার্টি ক্রয় করতে গিয়ে কর্যে হাসানা হিসেবে নগদ অর্থ লগ্নী হয়েছে।
নিউইয়র্ক ভিত্তিক বার্তা সংস্থা ইউএনএ জানায়, ‘পোর্ট ওয়াশিংটন মসজিদ’ ক্রয়ের পর গত ২০ জানুয়ারী শুক্রবার মসজিদটিতে প্রথম জুম্মার নামাজ আদায় করা হয়। এতে ইমামতি এবং বিশেষ দোয়া পরিচালনা করেন ইমাম মির্জা আবু জাফর বেগ। নামাজের আগে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকা’র সম্পাদক ও টাইম টেলিভিশন-এর সিইও আবু তাহের, মুফতি আব্দুল মালেক, মসজিদ কমিটির সভাপতি আসিফ বারী টুটুল, জেবিবিএ’র সভাপতি গিয়াস আহমেদ প্রমুখ। প্রথম জুম্মায় উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিবর্গের মধ্যে বিশিষ্ট রাজনীতিক আব্দুল লতিফ সম্রাট, বাংলাদেম সোসাইটির সাবেক সভাপতি হাসান ইমাম, রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী গিয়াস ভূইয়া, সাব্বির আহমেদ প্রমুখ অংশ নেন।
এদিকে মসজিদ কমিটির সভাপতি ও বারী হোম কেয়ারের সিইও আসেফ বারী টুটুল বলেন, আমেরিকান মুসলিম সেন্টর নামে একটি সংগঠনের ব্যানারে জেএমসির প্রধান ইমাম মাওলানা আবু জাফর বেগ, ইমাম ও হাফেজ রফিকুল ইসলাম ও মুফতি আব্দুল মালেক মিলে নিউইয়র্কের পোর্ট ওয়াশিংটনের ১১৮ হারবার রোডের চার্চটি কেনার উদ্যোগ নেন ও এটিকে মসজিদ ও ইসলামিক সেন্টারে রূপান্তর করার সিদ্ধান্ত নিয়ে চুক্তি করেন। সে সময় ফান্ড রেইজিং এর চেষ্টা শুরু হয়। চার্চটি ক্রমে মোট মূল্য ছিল ৭.৫০ লাখ ডলার। দেড় বছর সময়ে তারা পুরো অর্থ সংগ্রহ করতে পারছিলেন না। যার ফলে এটি হাত ছাড়া হয়ে যাবার উপক্রম হয়।
উদ্যোক্তরা আমার কাছে আসেন এবং মাওলানা আবু জাফর বেগ আমাকে বিস্তারিত জানিয়ে সহযোগিতা চান লং আইল্যান্ডের ঐ এলাকায় যে সব বাংলাদেশী আছেন তাদের পক্ষে এত অর্থ দেয়া সম্ভব হবে না বলে আমার কাছে বাকী টাকা কর্জে হাসানা হিসেবে সহযোগিতা চান। এ সময় আমার সাথে আরো এগিয়ে আসেন ইমিগ্রান্ট এল্ডার হোমের কর্ণধার ও জেবিবিএ’র সভাপতি গিয়াস আহমেদ ও রনকনকমা প্রবাসী মো: জিয়া খান। আমরা এই তিন জন মিলেই কর্জে হাসানা হিসেবে বাকী অর্থ সংগ্রহ করে গত ১৬ জানুয়ারী ২০২৩ উক্ত চার্চটি ক্রয় করি। এ সংবাদে কমিউনিটিতে বিশেষ চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয় যে নিউইয়র্কে এই প্রথম একটি চার্চ মসজিদে রূপান্তরিত হলো।
এদিগে গক ২৯ জানুয়ারী রোববার মসজিদ প্রাঙ্গণে মসজিদ ক্রয় উপলক্ষ্যে শোকর ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। কমিউনিটির উলেখযোগ্য সংখ্যক নারী-পুরুষ এতে অংশ নেন। উদ্যোক্তারা সবাইকে সাধ্যনুযায়ী সর্বোচ্চ সহযোগিতা করে মসজিদের কর্যে হাসানা পরিশোধে শরীক হতে আহবান জানিয়েছেন।
মসজিদ পরিচালনা পরিষদের প্রেসিডেন্ট হিসেবে আসেফ বারী টুটুল ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জিয়া খান সার্বিক অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন। আসেব বারী টুটুল জানান, এই মুহূর্তে আমরা নতুন করে ফান্ড রেইজ করছি না। আগামীতে এটি করা হবে। তারপরও এই দিন আমন্ত্রিত অতিথিরা ৭ হাজার ডলারের মত ফান্ড দিয়েছেন।
পাঁচ ওয়াক্ত নাজাম আদায়, রমজানে তারাবির নামাজ, বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান ইসলামিক বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও আরবি শিক্ষাও চালু করা হবে বলে তিনি জানান।
উক্ত শোকর ও দোয়া অনুষ্ঠানে কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের মধ্যে ফার্মাসিস্ট সালেহ আহমেদ, ডা. আতুউল ওসমানী, ডা. নাহীদ সুলতানা, বারী গ্রুপের চেয়ারম্যান মুনমুন হাসিনা বারী, বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সভাপতি হাসান ইমাম, রিয়েল এস্টেট ব্রোকার মামুন মির্জা, রিয়েল এস্টেট ইনভেস্টর নাসির খান পল, বিশিষ্ট রাজনীতিক আবদুল লতিফ সম্রাট, নিউইয়র্ক বাংলাদেশ লায়ন্স ক্লাবের প্রেসিডেন্ট আহসান হাবীব, বগুড়া সমিতি ইউএসএ’র সভাপতি মহব্বত আকন্দ ও সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, সাফক ইসলামিক সেন্টরের মো: জিয়া খান ও মো: জিল্লুর রহমান, ইমিগ্রান্ট এল্ডার হোমের কর্ণধার ও জেবিবিএ’র সভাপতি গিয়াস আহমেদ, বারাকা কনসট্রাক্সনের প্রেসিডেন্ট ইফতেখার আহমেদ, রিয়েলেটর আজিজুল হক মুন্না, মেজবা উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও স্থানীয়দের মধ্যে হাসান ইমাম, মামুন মির্জা, মিঠু মুরাদ, মো: মৃধা, মিসেস নাজনিন মির্জা, আব্দুর রাজ্জাক, মৌসুমী ভূইয়া, আফরোজা বেগম, মারুফ মির্জা, সানি হোসাইন, তানভির কবির, পিনো কবির, মুরাদ হোসেন, মিজানুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন পোর্ট ওয়াশিংটন পুলিশ ডিস্ট্রিক্ট-এর সার্জেন্ট পিটার গিরিভিট ও তার টিম।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)