রাতে বাঘের হানা, আতঙ্কে গ্রামবাসী
বাগেরহাটের শরণখোলার খেজুরবাড়িয়া গ্রামে বৃহস্পতিবার রাতে আবারও সুন্দরবনের একটি রয়েল বেঙ্গল টাইগার (বাঘ) হানা দিয়েছে। লোকজনকে বাঘের হাত থেকে রক্ষা করতে বনরক্ষীদের একটি দল গ্রামবাসীকে সঙ্গে নিয়ে টহল দিচ্ছে।
ভোলা নদী ভরাট হওয়ার কারণে গত এক মাস ধরে বাঘ লোকালয়ে ডুকে পড়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। এ ঘটনায় গ্রামবাসীর মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।
উপজেলার ধানসাগর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মো. আবুল হোসেন খান জানান, সুন্দরবন থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরত্বে তাদের বাড়িরসংলগ্ন মাছের ঘের। তার ছেলে মো. শাহিন খান রাত সাড়ে ৯টার দিকে মাছের ঘের পাহারা দিতে যান। এ সময় টর্চলাইটের আলোতে একটি বাঘ ঘেরের মধ্যে বসে থাকতে দেখেন। সঙ্গে সঙ্গে ছেলের আর্তচিৎকারে তিনি এগিয়ে এলে বাঘটি দৌড়ে বনের দিকে পালিয়ে যায়।
তবে বাঘটি বনে ফিরে গেছে কিনা তা তিনি নিশ্চিত করে বলতে পারেননি। এর পর থেকে রাতভর গ্রামবাসী মিলে পাহারা দিয়েছেন।
বন বিভাগের ধানসাগর স্টেশন কর্মকর্তা মো. আব্দুস সবুর জানান, তারা খবর পেয়ে কমিউনিটি পেট্রোলিং গ্রুপ (সিপিজি), ভিলেজ টাইগার
রেসপন্স টিম (ভিটিআরটি) ও এলাকাবাসীকে নিয়ে ওই গ্রামসহ আশপাশের এলাকায় পাহারা দিচ্ছেন। বাঘটি লোকালয়ে পাওয়া গেলে নিরাপদে ফিরিয়ে দেওয়া হবে।
ভোলা নদী ভরাট হয়ে গ্রামের সঙ্গে মিশে যাওয়ার কারণে প্রায়ই বন্যপ্রাণী লোকালয়ে ডুকে পড়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে বলে তিনি জানান।
তবে বন্যপ্রাণী যাতে মারা না পড়ে সে ব্যাপারে তারা সবসময় সতর্ক রয়েছেন।
ধানসাগর ইউপির গ্রামপুলিশ মো. তোফাজ্জেল হাওলাদার ও গ্রামবাসী জানান, গত এক মাস ধরে সুন্দরবনসংলগ্ন রাজাপুর, দাসেরভারানি, খেজুরবাড়িয়া, টগড়াবাড়ি এলাকার লোকালয়ে বাঘ এসে প্রায়ই হানা দিচ্ছে। এ ঘটনায় গ্রামবাসীর মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।
দক্ষিণ রাজাপুর গ্রামের সোবাহান হাওলাদার জানান, গত ৩১ মার্চ বাঘ তার বাড়িতে এসে একটি মহিষের ওপর আক্রমণ করেছে। পরে আহত মহিষটি গ্রামবাসী জবাই করে খেয়ে ফেলেছে।
এ ব্যাপারে সুন্দরবন খুলনা সার্কেলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো বলেন, গত ২৮ মার্চ বন বিভাগের এক সভায় লোকালয়ে যাতে বণ্যপ্রাণী প্রবেশ করতে না পারে সে জন্য ৬০ কিলোমিটার বনের জায়গাজুড়ে নাইলনের দড়ি দিয়ে ঘেরা (বেড়া) দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এখন অর্থ ছাড় পাওয়া গেলে আগামী এক বছরের মধ্যে এ কাজ শুরু হবে।
এ ছাড়া সুন্দরবন সুরক্ষ প্রকল্পের মাধ্যমে ভোলা নদী পুনঃখনন করা হবে বলে তিনি জানান।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)