লোডশেডিংয়ে গরম চার্জার ফ্যানের বাজার
অসহনীয় গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে লোডশেডিং। বেশ কয়েকদিন ধরে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় এক ঘণ্টা পরপর লোডশেডিং চলছে।এমনকি মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত বারবার বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় গরমে ভোগান্তিতে পড়েছেন মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে চার্জার ফ্যান বিক্রি বেড়েছে। চাহিদার কারণে বেড়েছে দামও।
তীব্র গরমের উত্তাপ বড়রা সহ্য করতে পারলেও ছোট শিশু আর বয়স্কদের জন্য খুব কষ্টের। বাসায় তিন বছরের ছোট ছেলে। দিনের মধ্যে তিন-চারবার বিদ্যুৎ যাওয়া করে করে। বাধ্য হয়ে ফ্যান কিনতে এসেছি। ফ্যানের দাম অনেক বেশি। তবুও নিতে হচ্ছে। এভাবেই গরমের অভিজ্ঞতা জানালেন খিলক্ষেতের বাসিন্দা বেসরকারি চাকরিজীবী ইমরান হোসেন।
এসময় পাশে থাকা আরেক ক্রেতা কামরুল ইসলাম বলেন, হঠাৎ করেই লোডশেডিং বেড়ে ড়েছে, বাসায় বাচ্চাদের পাশাপাশি বৃদ্ধ মায়ের ঘুমাতে সমস্যা হচ্ছে। ঘরে বাচ্চারা অনেক রাত পর্যন্ত পড়াশোনা করে। এসি রেখেও লাভ নেই। বিদ্যুৎ না থাকলেও সব কিছুই অচল। তাই গরম থেকে কিছুটা স্বস্তি পেতে চার্জার ফ্যান কিনতে এসেছি।
গরমের পাশাপাশি লোডশেডিং বাড়ায় প্রভাব পড়েছে রিচার্জেবল ফ্যানের (চার্জিং ফ্যান)। প্রতিটি ব্র্যান্ডের ফ্যানের দাম বেড়েছে কয়েকগুণ। তবে দাম বাড়লেও বিক্রিও বেড়েছে। তবে লোডশেডিং ও গরমের পাশাপাশি এলসি স্বাভাবিক না হওয়াও দাম বাড়ায় প্রভাব পড়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
রাজধানীর নবাবগঞ্জ বাজারে ঘুরে দেখা যায়, প্রায় প্রতিটি কোম্পানির ফ্যানে মডেল অনুযায়ী দাম বেড়েছে ১০০ থেকে আড়াই হাজার টাকা পর্যন্ত। মূলত গরমে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ব্যবসায়ীরা এই সুযোগ নিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন ক্রেতারা।
রবিউল ইসলাম নামে এক ক্রেতা জানান, ১২ ইঞ্চি চার্জার ফ্যানের দাম চাচ্ছে ৩ হাজার ৯৯০ টাকা। আর ১৪ ইঞ্চি আকারে ফ্যানের দাম ৪ হাজার ৩৯০ টাকা। এটা আমার কাছে বেশি মনে হয়েছে। প্রচণ্ড গরমে লোডশেডিংয়ের সুযোগ নিয়ে বিক্রেতারা চার্জার ফ্যানের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন।
গুলিস্তানের সুন্দরবন মার্কেটের পাইকারি ইলেক্ট্রনিক্স পণ্য বিক্রেতা রাজিব খানও দাম বেড়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করেন।
আনিসুর রহমান বাংলামোটরে একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। গরমের কারণে নবাবপুরের তাজ ইলেকট্রিক মার্কেট থেকে দেশীয় ব্র্যান্ডের একটি চার্জার ফ্যান কেনেন।
তিনি বলেন, আমি যে চার্জার ফ্যানটি কিনলাম, সেটি গত মাসেও আমার এক সহকর্মী এই মার্কেট থেকে কিনেছিল। তার কাছ থেকে দাম রাখা হয়েছিল ৩ হাজার ৫০০ টাকা। আজকে আমাকে কিনতে হলো চার হাজার টাকায়। গরম ও লোডশেডিংয়ে সুযোগ বুঝে ব্যবসায়ীরা বাড়তি দাম রাখছেন বলে অভিযোগ তার।
চীন থেকে চার্জার ফ্যান আমদানি করেন নবাবপুরের এমন কয়েকজন আমদানিকারক জানান, গরম বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হঠাৎ করে ফ্যানের চাহিদাও বেড়েছে। আর লোডশেডিংয়ের কারণে এখন মফস্সলের খুচরা বিক্রেতারাও চার্জ দিয়ে ব্যবহার করা যায়, এমন ফ্যানের চাহিদা দিচ্ছেন। এ কারণে দাম কিছুটা বেড়েছে।
এদিকে, টানা বয়ে চলা তাপপ্রবাহের কারণে গরমে জনজীবন অতিষ্ঠ। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, ৮ বা ৯ জুন বিচ্ছিন্নভাবে বৃষ্টি হতে পারে। অর্থাৎ ৭ জুন পর্যন্ত দেশের তাপমাত্রা বেশি থাকার আশঙ্কা রয়েছে। এর মধ্যে ৫ জুন পুরোপুরি উৎপাদন বন্ধ করে দিতে পারে দেশের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র পটুয়াখালীর পায়রা।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)