সীতাকুন্ডের অগ্নিকান্ড রাষ্ট্রের অবহেলার বহিঃপ্রকাশ: মোস্তফা ভুইয়া
চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণে ৯জন ফায়ার ব্রিগেড সৈনিক ও ৪৫ জনের বেশি প্রাণহানি এবং দেড় শতাধিক শ্রমিক আহত হওয়ার ঘটনায় নিন্দা ও ক্ষোভ জানিয়ে বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, খিচুড়ি রান্নার প্রশিক্ষণ নিতে সরকারী কর্মকর্তারা কোটি টাকা ব্যায় করে বিদেশে যায়। ফায়ার ফাইটারদের উন্নত প্রশিক্ষণের জন্য পাঠানো হয়না কেন ? কোটি টাকার বালিশ কেনা হয়, কিন্তু পর্যাপ্ত ফায়ার ফাইটিং ইকুইপমেন্ট কেনা হয়না কেন ?
তিনি বলেন, সীতাকুন্ডে অগ্নিকান্ডে ও হতাহতের ঘটনা রাষ্ট্রের অবহেলার বহিঃপ্রকাশ। রাষ্ট্রের অবহেলার কারণেই এই ধরনের মর্মান্তিক ঘটনা প্রায়শই প্রত্যক্ষ করতে হয়, কিন্তু এর কোনো প্রতিকার হয় না। সাধারন নাগরিকের জীবন সুরক্ষায় বিদ্যমান রাষ্ট্রব্যবস্থা পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। উন্নয়নের তকমায় নাগরিকের জীবনকেই কেবল বলি দেওয়া হচ্ছে। এটা জাতির চরম দুর্ভাগ্য।
বুধবার (৮ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ আয়োজিত “সীতাকুন্ডের বিস্ফোরনের সুষ্ঠু তদন্ত, বিচার, নিহতদের পরিবার, আহত-ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষতিপূরনের দাবীতে” শোক ও বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ দাবী জানান।
তিনি আরও বলেন, প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় থাকা সরকার জনগণের কাছে কোনো জবাবদিহিতা না থাকায় মানুষের জান-মালের নিরাপত্তার বিষয়টি সবসময় অবহেলিত ও উপেক্ষিত থাকছে। অপরদিকে স্বার্থান্বেষী মহল সম্পূর্ণ অবৈধভাবে কেমিক্যাল মজুদ রেখে শ্রমিক, কর্মচারী ও সাধারণ জনগণের জীবন-মৃত্যু নিয়ে খেলায় মেতেছে।
তিনি বলেন, অবিলম্বে এ ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত রহস্য উন্মোচন করে দোষীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। শ্রমিকের মৃত্যুর জন্য দায়ী মালিকপক্ষ এবং কর্তব্যে অবহেলায় দায়ী সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। একইসাথে এ জাতীয় দুর্ঘটনা রোধে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সকে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে আরও যুগোপযোগী করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, সীতাকুন্ডে নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে আইএলও কনভেনশন ১২১ অনুসারে আজীবন আয়ের সমান ক্ষতিপূরণ দেওয়া এবং আহত ও ক্ষতিগ্রস্থ শ্রমিক কর্মচারীদের বিনামূল্যে পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা, ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন করতে হবে সরকারকে। নিমতলী ট্রাজেডির একযুগ পেরিয়ে গেলেও ফায়ার সার্ভিস আধুনিক সরঞ্জামাদিতে এখনো স্বয়ংসম্পূর্ণ নয় তা কন্টেইনার ডিপোর অগ্নি দুর্ঘটনা আবারো চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে। দ্রুততম সময়ে অগ্নি নির্বাপণে অক্ষম জাতিকে সিঙ্গাপুরের স্বপ্ন দেখানো আর ছেঁড়া কাঁথায় শুয়ে লাখ টাকার স্বপ্ন দেখা একই কথা।
বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া’র সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ লেবার পার্টি চেয়ারম্যান হামদুল্লাহ আল মেহেদী, এনডিপি মহাসচিব মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা, এবি পার্টির সিনিয়র সহকারী সদস্য সচিব এবিএম খালিদ হোসেন, বাংলাদেশ ন্যাপ ভাইস চেয়ারম্যান স্বপন কুমার সাহা, যুগ্ম মহাসচিব মো. মহসীন ভুইয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. কামাল ভুইয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় নারী আন্দোলন সভাপতি মিতা রহমান, জাতীয় জনতা ফেরাম সভাপতি মুহম্মদ অলিদ সিদ্দিকী তালুকদার, ন্যাপ ঢাকা মহানগর সহ-সভাপতি শফিকুল আলম শাহীন, প্রচার সম্পাদক বাদল দাস, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান, জাতীয় নারী আন্দোলনের সহ-সভাপতি জীবন নাহার, যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ারা বেগম, প্রচার সম্পাদক মাহিনূর মাহি প্রমুখ।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)