১১ বছরের কারাদণ্ড সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার
চার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের মামলায় পৃথক দুই ধারায় সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার (এসকে সিনহা) ১১ বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
এছাড়া, তাকে ৪৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
মামলার আট আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় দুই জনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (৯ নভেম্বর) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলমের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।
অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের মামলায় ১১ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার (এসকে সিনহা)।
এর মধ্যে ঋণ জালিয়াতি করে অর্থ আত্মসাতের দায়ে চার বছর এবং মানিলন্ডারিং ধারায় সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত ৪-এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম এ রায় ঘোষণা করেন।
এসকে সিনহাসহ এ মামলার মোট আসামি ১১ জন। এর মধ্যে আট আসামির বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হয়েছে। এ ছাড়া দুই আসামি খালাস পেয়েছেন।
সাজাপ্রাপ্ত অন্য আসামিরা হলেন— ফারমার্স ব্যাংকের সাবেক এমডি একেএম শামীমকে চার বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ফারমার্স ব্যাংকের অডিট কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চিশতী ওরফে বাবুল চিশতী, ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট স্বপন কুমার রায়, ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. লুৎফুল হক, সাবেক এসইভিপি গাজী সালাহউদ্দিন, ফারমার্স ব্যাংকের ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট সাফিউদ্দিন আসকারী, টাঙ্গাইলের বাসিন্দা রণজিৎ চন্দ্র সাহা ও তার স্ত্রী সান্ত্রী— এই ছয় আসামির প্রত্যেকের তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
মামলার অপর দুই আসামি টাঙ্গাইলের বাসিন্দা মো. শাহজাহান ও একই এলাকার বাসিন্দা নিরঞ্জন চন্দ্র সাহা খালাস পেয়েছেন।
সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা, সাফিউদ্দিন আসকারী, রণজিৎ চন্দ্র সাহা ও তার স্ত্রী সান্ত্রী রায় পলাতক রয়েছেন।
এর আগে দুই দফা রায় ঘোষণার দিন পরিবর্তন হয়। দ্বিতীয় দফায় গত ২১ অক্টোবর রায় প্রস্তুত না হওয়ায় এবং প্রথম দফায় গত ৫ অক্টোবর বিচারক অসুস্থ থাকায় রায় ঘোষণা হয়নি।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ (দুদক) ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য প্রথম দফায় ৫ অক্টোবর দিন ধার্য করা হয়।
আদালত সূত্র জানায়, ক্ষমতার অপব্যবহার, প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে ফারমার্স ব্যাংক থেকে ঋণের নামে চার কোটি টাকা পে-অর্ডারের মাধ্যমে এসকে সিনহার ব্যক্তিগত হিসাবে স্থানান্তরের অভিযোগে গত বছরের ১০ জুলাই মামলাটি করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
তদন্ত শেষে একই বছরের ৯ ডিসেম্বর দুদক পরিচালক মো. বেনজীর আহমেদ আদালতে মামলার চার্জশিট দাখিল করেন।
গত বছরের ১৩ আগস্ট মামলায় এসকে সিনহাসহ ১১ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ (অভিযোগ) গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু হয়। গত ২৪ আগস্ট এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। ২১ সাক্ষীর মধ্যে ২০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর দুদক ও আসামিপক্ষের আইনজীবীর যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত রায়ের তারিখ ৫ অক্টোবর ধার্য করেন। কিন্তু ওইদিন বিচারক অসুস্থ হয়ে ছুটিতে থাকায় তা পিছিয়ে ২১ অক্টোবর ধার্য করা হয়। এরপর ২১ অক্টোবর রায় প্রস্তুত না হওয়ায় তা পিছিয়ে ৯ নভেম্বর ধার্য করেন আদালত।
২০১৯ সালের ১০ জুলাই মামলাটি করেছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ফারমার্স ব্যাংক (বর্তমানে পদ্মা ব্যাংক) থেকে চার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে এস কে সিনহাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে এ মামলা করা হয়।
দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-১ এ মামলা করেন সংস্থাটির পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন।
এরপর চলতি বছরের ২৯ আগস্ট আত্মপক্ষ সমর্থনে সাত আসামি নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন এবং আদালতের কাছে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করেন।
তারা হলেন- ফারমার্স ব্যাংক লিমিটেডের অডিট কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুল হক চিশতী (বাবুল চিশতী), ফারমার্স ব্যাংকের সাবেক এমডি এ কে এম শামীম, ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট স্বপন কুমার রায়, ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. লুৎফুল হক, সাবেক এসইভিপি গাজী সালাহউদ্দিন, টাঙ্গাইলের মো. শাহজাহান ও একই এলাকার নিরঞ্জন চন্দ্র সাহা।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)