২০ বছর পর ক্ষমতার পথে তালেবান যাদের হাত ধরে


ৎতালেবানের সদস্যদের বলা হয় মুজাহিদিন। ১৯৮০ সালে মার্কিন বাহিনীর সহায়তায় আফগানিস্তান থেকে সোভিয়েত বাহিনী হটাতে অগ্রাণী ভূমিকা রেখেছিল তালেবান। সেই মার্কিন বাহিনীর দ্বারাই ২০০১ সালে ক্ষমতাচ্যূত হয় তারা।
এর পর ২০২১ সালে এসে ফের ক্ষমতা দখলের জন্য পশ্চিমা সমর্থিত আফগান সরকারের সাথে লড়াই চলিয়ে যাচ্ছে তালেবান।
১৯৯৬ সালে তালেবান আফগানিস্তানের শাসন ক্ষমতা পুরোপুরি দখলে দেওয়ার পর দেশটিতে কঠোর শরিয়া আইন চালু করে।
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর মার্কিন সমর্থিত আফগান বাহিনী তালেবানকে ক্ষমতাচ্যূত করার পর তালেবানের প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা ওমর পালিয়ে যান।
২০১৩ সালে মোল্লা ওমরের মৃত্যুর দুই বছর পর বিষয়টি নিশ্চিত করেন তার ছেলে।
কিন্তু এরপর আফগানিস্তানে তালেবান ক্ষমতা দখলের লড়াই চালিয়ে গেলেও চলতি বছর মার্কি প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আফগানিস্তান থেকে বিদেশি সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়ার পর থেকেই খুব অল্প সময়েই দেশটির বিভিন্ন এলাকা নিজেদের দখলে নেওয়া শুরু করে সংগঠনটি। রোববার রাজধানী কাবুলও পুরোপুরি ঘিরে ফেলে তালেবান। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন।
যাদের হাত ধরে তালেবান আফগানিস্তান বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে, সেইসব নেতাদের সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে নেওয়া যাক।
হাইবাতুল্লাহ্ আখুনজাদা
‘বিশ্বস্ত নেতা’ হিসেবে পরিচিত হাইবাতুল্লাহ্ আখুনজাদা হলেন তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা। ২০১৬ সালে তালেবান নেতা মোল্লা মনসুর আখতার মার্কিন ড্রোন হামলায় নিহত হলে তার পদ পান আখুনজাদা। ইসলামী স্কলার আখুনজাদা দলটির রাজনৈতিক, ধর্মীয় আর সামরিক বিষয়গুলো দেখেন।
২০১৬ সালের মে মাসে হঠাৎ করে নিখোঁজ না হওয়ার আগ পর্যন্ত ১৫ বছর ধরে আখুনজাদা দক্ষিণ -পশ্চিম পাকিস্তানের কুচলাক শহরে একটি মসজিদে শিক্ষকতা বলে তার সহযোগী ও শিক্ষার্থীরা সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন।
তার বয়স বর্তমানে ৬০ বছর বলে ধারণা করা হয়। তবে তার অবস্থান সম্পর্কে সঠিক কোনো তথ্য পাওয়া যায় না।
মোল্লা মুহাম্মদ ইয়াকুব
তালেবানের প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা ওমরের ছেলে মোল্লা মুহাম্মদ ইয়াকুব সংগঠনটির সামরিক প্রধান। তিনি আফগানিস্তানেই রয়েছেন এবং সংগঠনটির সামরিক অভিযানগুলো তদারকি করছেন বলে স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
তালেবানের নেতৃত্ব নিয়ে মতোবিরোধের সময় সংগঠনটির সামগ্রিক নেতা হিসেবে মোল্লা ইয়াকুবের নাম প্রস্তাব করা হয়েছিল।
তবে মোল্লা ইয়াকুব নিজেই সংগঠনের প্রধান হিসেবে আখুনজাদার নাম প্রস্তাব করেন। তিনি কম বয়স আর সম্মুখ যুদ্ধের অভিজ্ঞতা না থাকায় তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
মোল্লা ইয়াকুবের বয়স বর্তমানে ৩০ বছর বলে ধারণা করা হয়।
সিরাজুদ্দিন হাক্কানি
হাক্কানি নেটওয়ার্কের নেতা জালালুদ্দিন হাক্কানির ছেলে সিরাজুদ্দিন হাক্কানি পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তে তালেবানের আর্থিক ও সামরিক সম্পদের বিষয়গুলো দেখভাল করেন।
আফগানিস্তানে চালানো আত্মঘাতী বোমা হামলা, কাবুলের হোটেলে আফগানিস্তানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইকে হত্যাচেষ্টাসহ বেশগুলো হাই-প্রোফাইল হামলার পেছনে হাক্কানি নেটওয়ার্কের হাত রয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
সিরাজুদ্দিন হাক্কানির বয়স ৪০ বছর থেকে ৫০ বছরের মধ্যে বলে ধারণা করা হয়। তবে তার অবস্থান সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া যায় না।
মোল্লা আব্দুল গনি বারাদার
তালেবানের সহ-প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা গনি বারাদার তালেবানের রাজনৈতিক কার্যালয়ের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। দোহায় অনুষ্ঠিত শান্তি আলোচনায় তালেবানের যে দলটি রয়েছে তাদের অন্যতম সদস্য বারাদার।
বারদার মোল্লা ওমরের বিশ্বস্ত সহযোগীদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন। ২০১০ সালে তিনি পাকিস্তানের করাচি শহরে ধরা পড়েন। ২০১৮ সালে তিনি মুক্তি পান।
বারাদার আফগানিস্তানের নতুন প্রেসিডেন্ট হতে বলে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে।
শের মোহাম্মদ আব্বাস স্তানিকজাই
২০০১ সালে ক্ষমতাচ্যূত হওয়ার আগে শের মোহাম্মদ আব্বাস স্তানিকজাই তালেবান সরকারের উপপ্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
প্রায় এক দশক ধরে দোহায় বসবাস করেছেন। ২০১৫ সালে সেখানকার রাজনৈতিক কার্যালয়ের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি।
তিনি তালেবানের হয়ে আফগান সরকারের সাথে আলোচনায় অংশ নিয়েছেন। বেশ কয়েকটি দেশে কূটনৈতিক সফরে তালেবানদের প্রতিনিধিত্ব করেছেন স্তানিকজাই।
আব্দুল হাকিম হাক্কানি
তিনি তালেবানের আলোচক দলের প্রধান। তাকে তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা আখুনজানার সবচেয়ে আস্থাভাজন ব্যক্তি হিসেবে মনে করা হয়।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)

একই রকম সংবাদ সমূহ

সিরিয়া ও বাংলাদেশে ‘আইএস তহবিলে অর্থ পাঠাত’ গ্রেপ্তার বাংলাদেশিরা
জঙ্গিবাদে জড়িত থাকার অভিযোগে মালয়েশিয়ায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশিদের দলটি সিরিয়া ও বাংলাদেশে ‘ইসলামিকবিস্তারিত পড়ুন

‘এক দিনের প্রধানমন্ত্রী’
থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত হয়েছেন পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা। বরখাস্তের পর তাৎক্ষণিকভাবেবিস্তারিত পড়ুন

খালেদা জিয়া হচ্ছেন রাষ্ট্রপতি? পিনাকীর পোস্টে আলোড়ন
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে ‘নতুন বাংলাদেশ’ এর রাষ্ট্রপতিবিস্তারিত পড়ুন